অযাচিত তর্ক-বিতর্ক করে দেশের স্বার্থ থেকে যেন দূরে সরে না যাই : তারেক রহমান
Published: 24th, February 2025 GMT
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, গণতন্ত্রের সপক্ষের শক্তি হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সবাইকে অব্যাহতভাবে চেষ্টা করতে হবে, যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র যাতে ফিরে আসে। যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার যাতে প্রতিষ্ঠিত হয়। আমরা যদি মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ যে সর্বনাশের খাদের কিনারে চলে গেছে, সেখান থেকে উঠিয়ে আনতে সক্ষম হব।
খুলনা মহানগর বিএনপির সম্মেলনে আজ সোমবার দুপুরে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বেলা দেড়টায় তিনি বক্তব্য শুরু করেন। প্রায় ২৫ মিনিট তিনি বক্তব্য দেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘আজ আমরা দলের ভেতরে গণতান্ত্রিক চর্চা করছি। দলকে গণতান্ত্রিকভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। কিন্তু এই যে বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, কথা বলার অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের হাজারো নেতা–কর্মী খুন হয়েছে, গুম হয়েছে, আমাদের লাখ লাখ মানুষ বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছে, বিভিন্ন গায়েবি মামলা, মিথ্যা মামলায় হাজিরা দিতে হয়েছে, এখনো প্রতিনিয়ত আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। কিন্তু কেন? সেই একটি কারণ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। এখন বলতে পারেন দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করলে কী হবে? দলের ভেতরে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করলে দলে ভিত্তি যেমন শক্তিশালী হবে, তেমনি দল পরিচালনার দায়িত্ব যখন ধীরে ধীরে সঠিক ব্যক্তিদের কাছে ফিরে যাবে, যারা দলকে নেতৃত্ব দিলে দল সুন্দরভাবে এগিয়ে যেতে পারবে। ঠিক একইভাবে দেশের ভেতরে যদি আমরা গণতান্ত্রিক চর্চা করি, ভোটের চর্চা করি, ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করি সেই প্রতিনিধিদের, যারা জনগণের কথা বলবে, যারা জনগণের সমস্যার কথা বলবে। যারা দেশের সমস্যার কথা বলবে।’
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তারেক রহমান বলেন, ‘অতীতে কী হয়েছে, আমরা দেখেছি। কীভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে, কীভাবে মানুষের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন হয়েছে আমরা শুনেছি। আমরা দেখেছি কিছুদিন আগেও কীভাবে অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে। আমাদের বহু সহকর্মীকে আমরা হারিয়েছি। বিশেষ করে জুলাই-আগস্ট মাসে আমরা দেখেছি কীভাবে নিরীহ সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন হয়েছে। কীভাবে ১ হাজার ৪০০ মানুষ শহীদ হয়েছেন আজকের এই মুক্ত পরিবেশকে উপহার দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমাদেরকে থেমে থাকলে চলবে না, সামনে এগোতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘রাজনীতির একটি অংশ, বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে, তর্ক হবে, বিতর্ক হবে। তবে আমাদের খেয়াল করতে হবে তর্ক-বিতর্ক করতে গিয়ে দেশে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব যাতে না হয়, যাতে করে সেই স্বৈরাচার হোক অথবা এমন হোক যারা বাংলাদেশের ভালো চায় না, এমন কেউ সুযোগ পেয়ে যাক। এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে আরও একটি বিষয়ে আমরা অযাচিত তর্ক-বিতর্ক করে জনগণ এবং দেশের স্বার্থ রক্ষা থেকে যাতে দূরে সরে না যাই। আমাদের সামনে অনেক অনেক কাজ আছে।’
দেশের মধ্যে স্থিতিশীলতা আনতে হবে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের এই শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, কৃষিব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে। নজর দিতে হবে দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি দিকে, সাধারণ মানুষ প্রতিদিন যুদ্ধ করছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বা বাজার সিন্ডিকেট—যেটাই বলি, এটার দিকে নজর দিতে হবে। এটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এই কাজগুলো করতে হবে এবং এই কাজগুলো যদি না করি আমরা, এই দেশকে রক্ষা করা যাবে না। কাজগুলো আমাদের ঠান্ডা মাথায় বসে আলোচনার মাধ্যমে করতে হবে। সঠিক ব্যক্তিদের নির্বাচিত করতে হবে, যারা দেশের মানুষের জন্য কাজগুলো করবে।’
খুলনা মহানগর বিএনপির সম্মেলনে দলের নেতা-কর্মীরা। আজ খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস থ র জন য ন হয় ছ আম দ র র গণত
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে অবিশ্বাস দূর, সরকারের সম্মানজনক প্রস্থানের পথ সুগম হবে: সাইফুল হক
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক দেশে আগামী সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক অচলাবস্থা, সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর করবে বলে আশা করছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। আজ শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন তিনি।
লন্ডনে দুই নেতার বৈঠকের বিস্তারিত সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করারও আহ্বান জানিয়েছেন সাইফুল হক।
সরকারের এই উদ্যোগ বিলম্বিত বোধদয়ের ফল বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। সাইফুল হক বলেন, আরও আগে সরকারের এই বোধদয় হলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক ও রাজনৈতিক বিরোধ এড়িয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ মৌলিক কাজে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া যেত।
সব অংশীজনকে আস্থায় নিয়ে সরকারকে কাজ করার আহ্বান জানান সাইফুল হক। তিনি বলেন, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্মানজনক প্রস্থানের রাস্তা সুগম হলো।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাইফুল হক বলেন, দেশের মানুষের অধিকার ও মুক্তি অর্জনে তাঁর দল জনগণের ভালোবাসা নিয়ে আগামীতে আপসহীন ধারায় সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল ও মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক। সমাবেশে সংহতি জানান গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের আহবায়ক শেখ আবদুর নূর।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম মীর, রেজাউল আলম, ফিরোজ আলী, কেন্দ্রীয় সংগঠক আইয়ুব আলী, বাবর চৌধুরী, ঢাকা মহানগর কমিটির নেতা মো. সালাউদ্দীন, মিজারুল রহমান ডালিম, আরিফুল ইসলামসহ পার্টির ঢাকা মহানগরের নেতারা।