আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমি ফাইনাল এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। তবে আসর থেকে তাদের বাদ পড়াটাও অনেকটাই পুতিন-জেলেনস্কির একসাথে কফি খাওয়ার মতই অবাস্তব। তবে অজিরা শেষ চারের ম্যাচে তাদের টপ অর্ডার ব্যাটিংয়ে পরিবর্তন আনতে বাধ্য হবে। কারণ শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে মাংস পেশীতে চোট পেয়েছেন ম্যাথু শর্ট। ফলে এই ২৯ বছর বয়সী অজি ব্যাটসম্যান খেলতে পারবেন না সেমি ফাইনালে।

শর্ট ফিল্ডিংয়ের সময় চোট পাওয়া স্বত্তেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে রান তাড়া করতে ট্র্যাভিস হেডের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমে পড়েছিলেন। দৌড়ে রান নাওয়ের মত অবস্থা তার ছিল না। তবে ৩ চার এবং ১ ছক্কায় ১৫ বলে ২০ রান করতে সক্ষম হন তিনি। যা ২৭৪ রান তাড়া করতে নামা অস্ট্রেলিয়াকে একটা দুর্দান্ত সূচনা দেয়।

ম্যাচ শেষে এই ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ার কাপ্তান স্টিভেন স্মিথ বলেন, “আমার মনে হয় সে সমস্যায় পড়বে। আজকে আমরা দেখেছি যে, সে ঠিকভাবে হাটতে পারছিল না। আমার মনে হয়না সামনের কয়েক ম্যাচের মধ্যে (সেমি ফাইনালের আগে) তার ফিট হওয়া সম্ভব হবে।”

আরো পড়ুন:

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের নেতৃত্বে কে?

ব্যর্থ মিশন শেষে দেশে ফিরলেরন শান্ত-মুশফিকরা

শর্টের বিকল্প তাহলে কে? অজি জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক আছেন, যিনি মিচেল মার্শের বদলি হিসেবে স্কোয়াডে এসেছেন। তিনি বিকল্প হতে পারেন। তবে, অস্ট্রেলিয়ার কাছে অন্য বিকল্পও আছে। অলরাউন্ডার অ্যারন হাডিও বদলে হিসেবে একাদশে আসতে পারীন। সেক্ষেত্রে অন্য কাউকে ওপেন করতে হবে।

স্মিথ শর্টের বদলি খেলোয়াড়ের ব্যাপারে জানান, “আমাদের স্কোয়াডের বাকি খেলোয়াড় মধ্য থেকে সহজেই আমরা বদলি নিতে পারব।”

শর্টের অবদান কেবল ব্যাটিংয়ে সীমাবদ্ধ না। অজিরা বল হাতেও তার সার্ভিস মিস করতে যাচ্ছে। আফগানদের বিপক্ষে ৭ ওভারে মাত্র ২১ রানের অসম্ভব কার্যকরী এক স্পেল করেছিলেন তিনি।

চোটের জন্য শর্টকে যদি স্কোয়াড থেকে বাদ দিতেই হয় সেক্ষেত্রে বিকল্পও হিসেবে আছেন কুপার কনোলি। এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার ভ্রমণ রিজার্ভ হিসেবে আছেন। যদি কনোলি স্কোয়াডে না আসেন সেক্ষেত্রে শর্টের পার্ট টাইম বোলিংয়ের চাহিদা পূরণ করতে পারেন পারেন হেড এবং মার্নাস লাবুশেন। 

অনুপস্থিতি স্পিন-বোলিং বিকল্পও সরিয়ে দেবে। তিনি আফগানিস্তানের বিপক্ষে তবে, অস্ট্রেলিয়ার কাছে এমন অনেক ব্যাটার আছে যারা স্পিন বল করতে পারেন, যেমন হেড এবং মার্নাস লাবুশেন, যারা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই উইকেট নিয়েছিলেন, কিন্তু শুক্রবার তাদের ব্যবহার করা হয়নি।

দল ঘোষণার পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগে অস্ট্রেলিয়া দলে উল্লেখযোগ্য বদল আনতে হয় চোট সমস্যায়। মিচেল মার্শ, প্যাট কমিন্স,  জশ হ্যাজলউ এবং মিচেল স্টার্ক চোট সমস্যাতেই ছিটকে পড়েন। অন্যদিকে মার্কাস স্টইনিস অবসর নিয়ে ফেলেন।

গ্রুপ ‘বি’ থেকে যে দুটি দল সেমি ফাইনালে পৌঁছাবে, তাদের সামনে একটি জটিলতা আছে। তারা কেউ জানে না তারা সেমি ফাইনাল কোথায় খেলবে। দুবাইতে নাকি লাহোরে? কারণ  ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের পরই নির্ধারিত হবে গ্রুপ ‘এ’র শীর্ষ দল। আর ভারত যেই স্থানেই থাকুক না কেন তারা দুবাইয়ে সেমি ফাইনাল খেলবে!

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব কল প ফ ইন ল আফগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ