ব্যাংকিং সেবার আধুনিকায়নে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানের চুক্তি
Published: 8th, April 2025 GMT
দেশের জনগণের জন্য আধুনিক ও সহজলভ্য ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার দুটি প্রতিষ্ঠান সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্য দিয়ে অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম) ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী ও বিশ্বমানের ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করা হবে।
দেশের আইটি পণ্য পরিবেশক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ব্র্যান্ড পিএলসি এবং বৈশ্বিক ব্যাংকিং প্রযুক্তি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হায়োসাং টিএনএসের মধ্যে এই এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে।
গতকাল সোমবার ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে গ্লোবাল ব্র্যান্ড পিএলসির চেয়ারম্যান আবদুল ফাত্তাহ এবং হায়োসাং টিএনএসের দক্ষিণ এশিয়ার এটিএম ব্যবসার প্রধান পরিচালক সাং কন লিম নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এমওইউতে স্বাক্ষর করেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই সমঝোতার মূল উদ্দেশ্য সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে এটিএম ও ব্যাংকিং কিয়স্ক স্থাপন এবং সামগ্রিক ব্যবস্থার উন্নয়ন। গ্লোবাল ব্র্যান্ড পিএলসির বিস্তৃত ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক, স্থানীয় বাজার বিষয়ক অভিজ্ঞতা এবং হায়োসাং টিএনএসের অভিনব ব্যাংকিং প্রযুক্তির সমন্বয় গ্রাহকদের জন্য উন্নত ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করবে। সারাদেশে ব্যাংকিং সেবাকে আরও ত্বরান্বিত করবে।
গ্লোবাল ব্র্যান্ড পিএলসির চেয়ারম্যান আবদুল ফাত্তাহ বলেন, বাংলাদেশে সর্বাধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তি পৌঁছে দিতে আমরা হায়োসাং টিএনএসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী ও বিশ্বমানের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নিশ্চিত করা। এই অংশীদারত্ব সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
হায়োসাং টিএনএসের পরিচালক সাং কন লিম বলেন, গ্লোবাল ব্র্যান্ড পিএলসিকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশে আমাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সম্প্রসারণের সূচনা হয়েছে। যা নতুন প্রজন্মের এটিএম ও ব্যাংকিং কিয়স্ক দেশের বাজারে সরবরাহ করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এই সমঝোতা বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসতে সক্ষম হবে বলে আমরা আশাবাদী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল ব্র্যানন্ড পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আনোয়ার। গ্লোবাল ব্র্যান্ড পিএলসি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ প্রযুক্তি পণ্য পরিবেশক প্রতিষ্ঠান, যারা ৮০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রতিষ্ঠানটি তার বিস্তৃত ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক, মানসম্পন্ন আইটি পণ্য ও এন্টারপ্রাইজ সলিউশনের জন্য সুপরিচিত। অপরদিকে, ১৯৭৯ সাল থেকে হায়োসাং টিএনএস বিশ্বজুড়ে ব্যাংকিং প্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে এবং বর্তমানে বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এই কৌশলগত অংশীদারত্ব বাংলাদেশের ব্যাংকিং প্রযুক্তি খাতে এক নতুন যুগের সূচনা করবে এবং সারাদেশের মানুষের জন্য আধুনিক ও সহজলভ্য ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ ল ব ল ব র য ন ড প এলস ন ড প এলস র ন শ চ ত কর পর চ ল র জন য ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাণিজ্য-বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে: ঢাকা চেম্বার
বাংলাদেশ ব্যাংকের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা তৈরি করতে পারে বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। সংস্থাটি বলছে, কড়াকড়ি মুদ্রানীতির প্রভাবে ঋণপ্রবাহ কমে যাওয়ায় দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে ডিসিসিআই জানায়, ২০২৫ সালের জুনের শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে ৬.৪ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ ধারা অর্থনীতির জন্য উদ্বেগজনক। চেম্বার মনে করে, ব্যবসায়িক পরিবেশে অনিশ্চয়তা, আইন-শৃঙ্খলার চ্যালেঞ্জ, জ্বালানি সরবরাহে ঘাটতি এবং কঠোর মুদ্রানীতির কারণে ঋণ প্রবৃদ্ধির নিম্নমুখী ধারা আরো তীব্র হচ্ছে।
ডিসিসিআই আরো জানায়, ঋণ প্রবাহ সংকুচিত হওয়ার ফলে খেলাপি ঋণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকায়, যা ব্যাংকিং খাতে মোট বকেয়া ঋণের প্রায় ২৭.০৯ শতাংশ। এ পরিস্থিতি আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ব্যবসায়িক আস্থা হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিসূদ হার ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত রেখেছে-যা ক্ষুদ্র, কুটির, ছোট ও মাঝারি শিল্পসহ উৎপাদনমুখী খাতগুলোর জন্য বড় চাপ তৈরি করছে বলে মনে করে ডিসিসিআই। সংস্থাটির ভাষ্য, দীর্ঘমেয়াদি উচ্চ সুদের হার উৎপাদন ও বিনিয়োগ খাতে ঋণের ভার বাড়াচ্ছে, ফলে সামগ্রিক অর্থনীতির গতিশীলতা ব্যাহত হচ্ছে।
চলতি মুদ্রানীতিতে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২৫) বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আরো কমিয়ে ৭.২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে আগের ছয় মাসে তা ছিল ৯.৮ শতাংশ। বিপরীতে সরকার খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ২০.৪ শতাংশ করা হয়েছে। ঢাকা চেম্বারের মতে, এ ব্যবস্থায় সরকারি খাতের চাহিদা মেটাতে গিয়ে বেসরকারি খাতের জন্য আর্থিক খরচ ও প্রতিযোগিতা উভয়ই বেড়ে যাবে।
এ অবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে নীতিসূদ হার হ্রাস এবং ঋণ গ্রহণের শর্তাবলি সহজ করার আহ্বান জানিয়েছে ডিসিসিআই। তারা সৎ ঋণগ্রহীতাদের রক্ষায় সহায়তা এবং তাৎক্ষণিক খেলাপি শ্রেণিতে পড়া এড়াতে ঋণ শ্রেণিবিন্যাসে সময়সীমা ছয় মাস বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
সংস্থাটি মনে করে, টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে হলে আর্থিক খাতে কাঠামোগত সংস্কার, ঋণ বরাদ্দে স্বচ্ছতা এবং বাজারে তারল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কঠোর নজরদারি অব্যাহত রাখতে হবে।
চূড়ান্তভাবে ডিসিসিআই বলছে, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষা, বেসরকারি খাতে আস্থা পুনরুদ্ধার ও বিনিয়োগ বাড়াতে আরো নমনীয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও খাতভিত্তিক প্রতিক্রিয়াশীল মুদ্রানীতির বিকল্প নেই।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ