জার্মানির ২৮ লাখ নাগরিক জীবনে ইন্টারনেট ব্যবহার করেননি
Published: 12th, April 2025 GMT
প্রযুক্তির এ যুগে ঠিকানা খুঁজে পাওয়া, কারও বিষয়ে সন্ধান করা, কোনো বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া, বিমান টিকিট কেনা কিংবা দৈনন্দিন কেনাকাটা, অর্থাৎ দিনের প্রয়োজনীয় সব কিছুতেই দরকার ইন্টারনেট। কিন্তু ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে বিপুলসংখ্যক মানুষ জীবনে কখনো ইন্টারনেট ব্যবহার করেননি—এমন তথ্য সামনে এলে ভ্রু কুঁচকাতে হয় বৈকি।
জার্মানির জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের ২০২৪ সালের হিসাবে দেখা গেছে, দেশটির ২৮ লাখ মানুষ জীবনে কখনো ইন্টারনেট ব্যবহার করেননি। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, জার্মানির জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে আট কোটি। সেই হিসাবে জার্মানির প্রায় ৪ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেননি।
পুরো ইউরোপে পরিচালিত তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ব্যবহারবিষয়ক গবেষণা থেকে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
জার্মান সরকারের তথ্যমতে, ১৬ থেকে ৭৪ বছর বয়সীরা এই তালিকায় রয়েছেন। যাঁরা ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন না, তাঁদের অফলাইনার বলে অভিহিত করেছে সরকার।
পরিসংখ্যান আরও বলছে, ৬৫ থেকে ৭৪ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার না করার প্রবণতা বেশি। দেখা গেছে, বয়স যত কম, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা তত বেশি।
ইউরোপের অন্যান্য দেশের অবস্থা
পরিসংখ্যান বলছে, ইউরোপের ৫ শতাংশ মানুষ জীবনে কখনো ইন্টারনেট ব্যবহার করেননি।
নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দেশ দুটিতে অফলাইনারদের সংখ্যা ১ শতাংশেরও কম।
ইন্টারনেট ব্যবহার না করার দিক থেকে তালিকার শীর্ষে রয়েছে ক্রোয়েশিয়া। দ্বিতীয় অবস্থানে গ্রিস। ক্রোয়েশিয়ায় এই সংখ্যা ১৪ শতাংশ ও গ্রিসে ১১ শতাংশ।
জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন বলছে, ২০২৪ সালে বিশজুড়ে ৩২ শতাংশ মানুষর ইন্টারনেট ব্যবহার করেননি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ