যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপ
Published: 28th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল যথাযথ মর্যাদা ও উচ্ছ্বাসের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষে মিশনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, কূটনীতিক, বিভিন্ন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ এবং প্রবাসী বাংলাদেশীরা সমবেত হন।
অনুষ্ঠান শুরু হয় বাংলাদেশের ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীতের বাদ্যযন্ত্র পরিবেশন দিয়ে। এরপর কনস্যুল জেনারেল সেহেলী সাবরিন শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন।
কনস্যুল জেনারেল সেহেলী সাবরিন তার বক্তব্যে অতিথিদের স্বাগত জানান এবং উপস্থিত থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন এবং ২০২৪ সালের জুলাই মাসের ঐতিহাসিক যুব-নেতৃত্বাধীন শহীদদের সম্মান জানান। গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতি তুলে ধরেন।
তিনি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন।
কনস্যুল জেনারেল বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী ও গভীর অংশীদারিত্বের কথা উল্লেখ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়ন, মানবাধিকার এবং জনসম্পর্কসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের আশাবাদ প্রকাশ করেন।
তিনি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে বাংলাদেশী আমেরিকান সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানে মিয়ামি-ডেড কাউন্টির মেয়রের প্রতিনিধি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বিভাগের সহকারী পরিচালক, রেগুলেটরি অ্যান্ড ইকোনোমিক রিসোর্সেস, অফিস অব ইনোভেশন অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের মারিয়া ড্রেইফাস-আলভার্ট।
তিনি তার বক্তৃতায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বের দৃঢ় বন্ধনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
মিয়ামি-ডেড কাউন্টির পক্ষে ড্রেইফাস-আলভার্ট একটি স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র কনস্যুল জেনারেল সেহেলী সাবরিনকে প্রদান করেন, যা বাংলাদেশী আমেরিকান সম্প্রদায়ের অবদানকে স্বীকৃতি দেয়।
এছাড়া, পেমব্রোক পার্ক শহরের মেয়র, পেমব্রোক পার্কের বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত সিটি কমিশনার, এল পোর্টাল গ্রামের মেয়র, সানরাইজ সিটির ডেপুটি মেয়র এবং ব্রোয়ার্ড কাউন্টির প্রতিনিধি বাংলাদেশে ৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনের সম্মানে পৃথক পৃথক স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র প্রদান করেন।
বিশিষ্ট উপস্থিতির মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিদেশী মিশন অফিসের প্রতিনিধি, মিয়ামিতে বিভিন্ন বিদেশী কনস্যুলেটের প্রতিনিধি, মিয়ামি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রোটোকল বিভাগের কর্মকর্তারা, সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের সদস্যগণ, একাডেমিক ও মিডিয়া কর্মীরা এবং প্রবাসী বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের সদস্যরা।
উদযাপনের অংশ হিসেবে, কনস্যুলেটে একটি বাংলাদেশ কর্ণার স্থাপন করা হয়, যেখানে পরিবেশবান্ধব পাটজাত পণ্য, বস্ত্র ও হস্তশিল্প সামগ্রী, মশলা ও খাদ্যদ্রব্য, বিশ্বখ্যাত জামদানি ও মসলিন শাড়ি, রেশম, কাঁথা সেলাই, টান্ট, মিনি পুড়ি, সবজি রঙের পণ্য, ওষুধপত্র, বিখ্যাত রিকশা পেইন্ট সামগ্রী, সিরামিক্সসহ অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্পের বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শিত হয়, যা বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও কারুকার্যকে প্রতিফলিত করে।
বাংলাদেশের ইতিহাস ও অর্জন তুলে ধরতে একটি সংক্ষিপ্ত তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়, যা দেশের স্বাধীনতার অগ্রযাত্রাকে বিনম্রচিত্তে শ্রদ্ধা জানায়।
ঢাকা/হাসান/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কনস য ল জ ন র ল স ব ধ নত ন কর ন উদয প
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস