বগুড়ার দুই শিল্পপল্লিতে এক লাখ লোকের কর্মসংস্থান
Published: 28th, April 2025 GMT
দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার শাঁওইল বাজার এলাকার ১৬টি গ্রাম যেন এক শিল্পপল্লি। এই শিল্পপল্লির পুরোটাই তাঁতশিল্পনির্ভর। কম্বল, চাদর, মোজাসহ বিভিন্ন ধরনের কাপড় তৈরি হয় এখানে। আর বগুড়া সদরে গড়ে উঠেছে আরেক ধরনের শিল্প। এখানে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের হালকা প্রকৌশল (লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং) যন্ত্রপাতি।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসারে, বগুড়ার হালকা প্রকৌশল শিল্পপল্লিতে বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার এবং তাঁত শিল্পপল্লিতে বছরে ৭০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়। সব মিলিয়ে এ দুই শিল্পপল্লিতে প্রায় এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
এ দুই শিল্পপল্লিতে সম্ভাবনার সঙ্গে রয়েছে চ্যালেঞ্জও। ছোট উদ্যোক্তারা দীর্ঘদিন ধরে অর্থায়ন, বিপণন ও বাজার সংযোগসহ নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে গেছেন। তবে এখন পরিস্থিতির অনেকটাই বদলে হয়েছে। কারণ, এসএমই ফাউন্ডেশন এসব উদ্যোক্তাকে নিয়ে বিশেষ ক্লাস্টার (গুচ্ছ/পল্লি) চিহ্নিত করেছে। তাতে ঋণ পাওয়া সহজ হয়েছে; অন্যান্য সুবিধাও মিলছে।
ঝুট কাপড় থেকে তাঁতের পণ্যএকসময় আদমদীঘির তাঁতিরা সুতি, সিল্ক প্রভৃতি সুতা দিয়ে শাড়ি, গামছা ইত্যাদি পণ্য তৈরি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতেন। নব্বইয়ের দশকের শেষে তাঁতিরা উলের সুতা ও পণ্যের দিকে ঝোঁকেন। পরবর্তী সময়ে এটিকে ঘিরেই সেখানকার পুরো ব্যবসার পরিবেশ দাঁড়ায়।
আদমদীঘির তাঁতশিল্প বা হ্যান্ডলুম ক্লাস্টার মূলত স্থানীয় শাঁওইল বাজারকেন্দ্রিক। এখানে সুতা ও তাঁতের পণ্য—এ দুই ধরনের ব্যবসা রয়েছে। এই ক্লাস্টারে ছয় থেকে সাত হাজার তাঁতি এবং দেড় হাজার সুতা ব্যবসায়ী রয়েছেন। এ ছাড়া সুতা ছাড়ানো, ববিন (যার ওপর সুতা পেঁচানো থাকে) করা ও অন্যান্য সংযোগ শিল্পের সঙ্গে আরও প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক জড়িত রয়েছেন। এসএমই ফাউন্ডেশনের হিসাবে, এই ক্লাস্টারে সব মিলিয়ে প্রায় ৬০ হাজার লোকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান রয়েছে।
সুতা ব্যবসায়ীরা প্রথমে ঢাকা, গাজীপুর, সাভার ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানা থেকে ঝুট কাপড় কিনে আনেন। দিনে ১০০ থেকে ১২০ টন ঝুট কাপড় আসে এই উপজেলায়। এরপর ধরন ও রংভেদে এসব সুতা আলাদা করে সেগুলো কুনিং যন্ত্রের সাহায্যে ববিন করা হয়। এ কাজটি করেন একদল শ্রমিক। তবে ঝুট কাপড় থেকে চাহিদা অনুসারে সব রঙের সুতা পাওয়া যায় না। এ জন্য ব্যবসায়ীরা সুতা ঢাকায় পাঠিয়ে রং (ডাইং) করিয়ে আনেন। ব্যবসায়ীরা জানান, কটন, অ্যাক্রিলিক, শ্যানেল (চেনিল), মশিয়ান, তামু, উল, পিভিটিসহ ৫০ ধরনের বেশি সুতা পাওয়া যায় এই বাজারে। ধরনভেদে এসব সুতা ১৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। এতে একজন ব্যবসায়ীর কেজিপ্রতি লাভ হয় ১০ থেকে ১২ টাকা।
ঝুট থেকে তৈরি সুতা কিনে নেন স্থানীয় তাঁতিরা। এরপর এই সুতা দিয়ে বানানো হয় কম্বল, গায়ের চাদর, তোয়ালে, বিছানার চাদর, পাপোশ, মোজা, মাফলারসহ নানা পণ্য। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আদমদীঘির তাঁতশিল্প মূলত শীত মৌসুমকেন্দ্রিক। প্রতিবছর শীতকালে এখানে গড়ে ২০ লাখ কম্বল, ১ কোটি চাদর, ৫০ লাখ গামছা ও তোয়ালে তৈরি হয়।
স্থানীয় বাজার ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয় এসব পণ্য। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়, কোম্পানি, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) এবং ব্যক্তিপর্যায়ের ক্রেতারাও এখান থেকে বিভিন্ন শীতবস্ত্র কিনে থাকেন। শীতের সময় সারা দেশের নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে যে কম্বল বিতরণ করা হয়, তার একটি বড় অংশ এখানে তৈরি।
সম্ভাবনার পাশাপাশি কিছু প্রতিবন্ধকতার কথাও জানান স্থানীয় ব্যবসায়ী ও তাঁতিরা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কাঁচামাল তথা ঝুটের দাম বেড়েছে। এ কারণে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও তাঁতিদের খরচও বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা মূলত মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে কাঁচামাল কিনে থাকেন। তাঁরা জানান, ঢাকার কারখানা থেকে সরাসরি কাঁচামাল আনা গেলে খরচ আরও কমত। তাঁতে পণ্যের দামও কমানো যেত। এ ছাড়া শাঁওইল এলাকার অধিকাংশ তাঁতশিল্পী হাতে ব্যবহৃত তাঁতযন্ত্র বা হ্যান্ডলুম ব্যবহার করেন। হ্যান্ডলুমে একটি কম্বল বানাতে তিনজনের সময় লাগে ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট। এভাবে প্রতি ঘরে দিনে ১০ থেকে ১২টি কাম্বল বানানো যায়। সেখানে পাওয়ার লুমে দৈনিক ২৫ থেকে ৩০টি কম্বল তৈরি করা যায়। ফলে আয়ও দ্বিগুণ হয়। শাঁওইল বাজার হ্যান্ডলুম ক্লাস্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন বলেন, দেড়-দুই লাখ টাকা দিয়ে পাওয়ার লুম কেনার সামর্থ্য সবার নেই। তাই সহজ শর্তে অর্থায়ন বা ঋণসুবিধা পেলে অনেক তাঁতির পক্ষে এটি কেনা সম্ভব হতো।
হালকা প্রকৌশলে বড় সম্ভাবনাদেশে-বিদেশে বগুড়ার বিভিন্ন ধরনের কৃষিযন্ত্র ও হালকা প্রকৌশল শিল্পের এখন ব্যাপক সুনাম রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের কৃষি যন্ত্রপাতির বার্ষিক চাহিদার প্রায় ৮০ শতাংশ পূরণ হয় এখানে তৈরি যন্ত্রে। বগুড়ার এই হালকা প্রকৌশল শিল্পের যাত্রা শুরু হয়েছিল কামারশালায় সারাইয়ের (রিপেয়ারিং) কাজ করা কয়েকজন কারিগরের হাত ধরে। সেটি গত শতকের চল্লিশের দশকে। বগুড়া সদর এলাকায় এখন কৃষি যন্ত্রাংশ তৈরির ৫০০টি ওয়ার্কশপ, অন্যান্য হালকা প্রকৌশল পণ্যের ৫০০টি এবং ঢালাইশিল্পের (ফাউন্ড্রি) ৭৫টি কারখানা রয়েছে। এ ছাড়া কৃষি যন্ত্রপাতি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কয়েক হাজার ওয়ার্কশপ রয়েছে। বগুড়া শহর ও শহরতলির আশপাশে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে এসব কারখানা। প্রায় দুই হাজার ধরনের যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ তৈরি হয় এখানে। এর মধ্যে রয়েছে সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প, সেচপাম্প, টিউবওয়েল, পিটি চেইন কভার, ফুয়েল পাইপ, অয়েল ক্যাচার, এয়ার ক্লিনার, সাইলেন্সার, চেইন কভার প্রভৃতি।
মাত্র সাত লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ২০১৮ সালে কারখানা করেছিলেন এপি মেটাল ইন্ডাস্ট্রির স্বত্বাধিকারী আরিফুল ইসলাম। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক আয় ১২ কোটি টাকা। দেশের ৫৫টি জেলায় তাঁর প্রতিষ্ঠানের তৈরি পণ্য সরবরাহ হচ্ছে। আরিফুলের মতো আরও সফল ব্যবসায়ী রয়েছেন এখানে। বগুড়ার কৃষি যন্ত্র ও হালকা প্রকৌশল শিল্প বিদেশেও বাজার সৃষ্টি করছে। এসএমই ফাউন্ডেশন জানায়, ১৯৯৫ সালে ভারতে সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প রপ্তানির মধ্য দিয়ে বিদেশের বাজারে প্রবেশ করে বগুড়ার কৃষি যন্ত্রের শিল্প।
বগুড়া লাইটিং ইঞ্জিনিয়ারিং ফাউন্ডেশনের সভাপতি গোলাম আযম বলেন, ‘বগুড়ার হালকা প্রকৌশল শিল্পের জন্য একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হলে আমাদের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সমস্যা দূর হবে। এতে উৎপাদন ব্যয় কমবে, বিদেশে রপ্তানিও বাড়বে।’
ভারী শিল্প হওয়ায় অনেক সময়ই ব্যাংকঋণ নিতে হয়। কিন্তু চড়া সুদহার আরেকটি সমস্যা। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের দাবি, আরও আধুনিক যন্ত্র বানাতে হলে ১০ শতাংশের নিচে ও সহজ শর্তে সুদহারের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মুশফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বগুড়ার তাঁত ও হালকা প্রকৌশলশিল্পের মতো এসএমইদের ব্র্যান্ডিং ও পণ্য বৈচিত্র্যকরণ বাড়ানো প্রয়োজন। একই সঙ্গে তাদের পণ্য তৈরির পদ্ধতিকেও আধুনিকায়ন করা দরকার। এটি করা গেলে আগামী তিন–চার বছরে শিল্প দুটি দেশের অর্থনীতিতে একটি সম্ভাবনাময় খাতে পরিণত হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস য় র আদমদ ঘ ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, এসএমই কোম্পানি তালিকাভুক্তকরণ, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি, নতুন আর্থিক পণ্য উদ্ভাবন এবং স্টার্টআপ ও ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পে অর্থায়ন বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) যৌথ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) গুলশানে ডিসিসিআই কার্যালয়ে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদ এবং ডিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট তাসকিন আহমেদ ও পরিচালনা পর্ষদের উপস্থিতিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
বিআইএফএফএলের সঙ্গে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের ঋণ চুক্তি
ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম চালু করবে গোল্ডেন হার্ভেস্ট
ডিএসই থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সভায় ডিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট তাসকিন আহমেদ ডিএসই’র প্রতিনিধিবৃন্দকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ব্যবসায় লাভ ক্ষতি রয়েছে। যে সকল কোম্পানি পুঁজিবাজার থেকে মূলধন উত্তোলন করেছে তাদের সাথে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে। আমাদের মতো দেশগুলোর অথবা আমাদের থেকে কিছুটা এগিয়ে থাকা দেশগুলোর সাথে তুলনা করে আগামীর কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে। আমাদের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন টু জিডিপি রেশিও এখনও ২০% নিচে। আমাদের মতো অর্থনীতির অনেক দেশে এটি ৪০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশের অধিক। পুঁজিবাজারে এসএমই-এর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।
তিনি আরো বলেন, পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য কিছু দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো দ্বৈত কর ব্যবস্থার প্রত্যাহার ও এর প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং পণ্যের বৈচিত্রকরণ করা। আমাদের দেশের অর্থনীতিতে এসএমই কোম্পানিগুলোর ব্যাপক অবদান রয়েছে। এসএমই কোম্পানিগুলোর ফাইন্যান্সের উপর বেশি করে গুরুত্ব দিতে হবে। বর্তমানে আরজেএসসি-তে দুই লাখের উপর কোম্পানি রয়েছে এর মধ্যে মাত্র ৩৬০টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এছাড়াও সরকারি কোম্পানি ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তির উপর গুরুত্বারোপ করেন।
এসময় ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে উন্নত হতে পারেনি। কিন্তু আশার বিষয় হলো এই সরকার প্রথমবারের মতো পুঁজিবাজারের প্রতি গভীরভাবে মনোযোগ দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামানকে এই বিষয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এই বাজেটে পুঁজিবাজারবান্ধব কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো- টার্নওভারের উপর এআইটি কমানো, মার্চেন্ট ব্যাংকের ট্যাক্স কমানো ও তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর্পোরেট ট্যাক্স এর ব্যবধান বৃদ্ধি করা। বিএসইসি কিছু উদ্যোগ নিয়েছে সেগুলো হলো- সিসি একাউন্টের ইন্টারেস্ট বিষয়ে সমাধান ও বিও একাউন্টের নবায়ন ফি কমানো। বিএসইসি মার্কেটে শৃঙ্খলা আনার জন্য আগের চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয় হয়েছে। একটি দক্ষ, স্বচ্ছ এবং ন্যায় ভিওিক পুঁজিবাজারের বিকাশ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখন একটি সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং ডিএসই পুঁজিবাজারের কেন্দ্রীয় শক্তি হিসেবে, এই উন্নয়নের রূপান্তরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। বিগত দিনে মার্কেটে রেগুলেটর অনেক সময় অযৌক্তিক হস্তক্ষেপ করেছে। এখন পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। বিনিয়োগকারীগণ বাজারে ফিরে আসছে এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীগন সক্রিয় হচ্ছে। বর্তমানে ইক্যুইটি মার্কেটের সাথে বন্ড মার্কেটেকে কিভাবে উন্নয়ন করা যায় এই বিষয়ে ডিসিসিআই-এর সহযোগিতা প্রয়োজন। ডিসিসিআই ক্যাপিটাল মার্কেটের একটি বড় স্টেকহোল্ডার।
তিনি বলেন, আইপিও প্রসেস এর ডিজিটালাইজেশন এর প্রক্রিয়া চলমান। এছাড়াও ভালো কোম্পানিগুলোকে দ্রুত বাজারে নিয়ে আসার জন্য গ্রিণ চ্যানেল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিএসইসি এই বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা করছে। ডিএসই ও ডিসিসিআই উভয় প্রতিষ্ঠান ভবিষ্যতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়িয়ে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং পুঁজিবাজারকে আরো শক্তিশালী ও টেকসই করার লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চলমান রাখতে পারে। এরই লক্ষ্যে স্বল্প সময়ের মধ্যে এসএমই উদ্যোক্তাদের এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্তির প্রসেস এবং অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি)’র সুবিধা ও তালিকাভুক্তির প্রসেস নিয়ে চেম্বার সদস্যদের সাথে পৃথক দুটি অনুষ্ঠানের আয়োজনের বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
এছাড়াও আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য স্টক এক্সচেঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে ব্যাংকের সুদের হার বৃদ্ধির ফলে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে এটি সহজ করা সম্ভব। এছাড়াও এসএমই একটি বিশাল খাত। বেসরকারি খাতের প্রায় ৭৫% এসএমই। তাদের এক্সপোজার আছে, সংযোগ আছে, উন্নয়নের জায়গা আছে। তাই সরকার এ ব্যাপারে তালিকাভুক্ত এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য কী ব্যবস্থা নিতে পারে তা বিবেচনায় আনতে পারে। ২০০৯ সালে, একটি সমীক্ষায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল যে, সরকারের ৭.৫ মিলিয়ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প রয়েছে। আমরা মনে করি যে, এই অর্থনৈতিক ইউনিট থেকে অধিক পরিমানে বিনিয়োগের জন্য পুঁজিবাজারের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআইর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, রাজিব এইচ চৌধুরী, ভাই প্রেসিডেন্ট মো. সেলিম সোলাইমান, সেক্রেটারি জেনারেল (ভারপ্রাপ্ত) এ. কে. এম আসুদুজ্জামান পাটুয়ারি, ডিএসইর পরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ কামরুজ্জামান (অব.), সৈয়দ হাম্মাদুল করীম, মো. শাকিল রিজভী, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আসাদুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
ঢাকা/এনটি/ফিরোজ