রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আজ শুক্রবার পৃথক ঘটনায় দুই শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পরিবার বলেছে, তারা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

মৃত শিশুরা হলো মাদ্রাসাছাত্র ইসমাইল সোনার ওরফে হৃদয় (১৪) ও মাদ্রাসাছাত্রী মাহিনুর আক্তার (১২)।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, ইসমাইল মা–বাবার সঙ্গে খিলগাঁওয়ের মধ্য মেরাদিয়ায় থাকত। সে মেরাদিয়ায় একটি মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত।

ইসমাইলের বাবা মিল্টন পেশায় রিকশাচালক। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইসমাইলের মা গৃহকর্মীর কাজ করে। আজ সকালে ইসমাইলের মা বাসাবাড়ির কাজে যায় এবং আমিও কাজে বের হই। দুপুরে বাসায় ফিরে এসে দেখি একটি কক্ষের দরজা বন্ধ, কোনো সাড়াশব্দ নেই। পরে দরজা ভেঙে দেখি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় ইসমাইল ঝুলছে।’ পরে সেখান থেকে অচেতন অবস্থায় নামিয়ে ইসমাইলকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো.

ফারুক জানান, বেলা পৌনে দুইটার দিকে জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইসমাইলকে মৃত ঘোষণা করেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে ইসমাইল ছিল বড়।

অন্য ঘটনায় আজ বেলা তিনটার দিকে খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগের জামতলার ভাড়া বাসার বারান্দায় গ্রিলের সঙ্গে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় শিশু মাহিনুরকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনেরা। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন বলে পরিদর্শক মো. ফারুক জানান।

মাহিনুরের মা মনি বেগম বলেন, ‘মেয়ের মানসিক সমস্যা ছিল। মাসখানেক আগেও একবার সে গলায় ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।’

মাহিনুর সিপাহীবাগের একটি মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। তার বাবা রুবেল মিয়া রিকশাচালক। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সে বড়।

খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ট্রেলিয়ায় ভোট চলছে, কে বসছেন ক্ষমতার মসনদে

অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকরা কেন্দ্রীয় সরকার নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন। এ নির্বাচনের মাধ্যমে একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করতে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন এক কোটি ৮০ লাখ ভোটার।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে শনিবার (৩ মে) ভোটগ্রহণ শুরুর কথা জানানো হয়। 

নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এর বামপন্থী অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টি পুনরায় জয়ের চেষ্টা করছে। আর তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন পিটার ডাটনের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ লিবারেল-ন্যাশনাল কোয়ালিশন।

সাম্প্রতিক জরিপ বলছে, লেবার পার্টি কিছুটা এগিয়ে আছে। তবে শেষ মুহূর্তের ভোটারদের সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে, কে বসবেন ক্ষমতার মসনদে।

এবারের নির্বাচনে বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে জীবন যাত্রার ব্যয়। এছাড়া, স্বাস্থ্য সেবা ও হাউজিং ব্যয় নিয়েও ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা গেছে।

নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল আসতে কয়েক দিন, এমনকি সপ্তাহও লেগে যেতে পারে। তবে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই দেশটির ইলেকটোরাল কমিশন অনানুষ্ঠানিক প্রাথমিক ফল ঘোষণা শুরু করবে। মূলত এই প্রাথমিক ফল থেকেই ধারণা পাওয়া যাবে যে কে দেশটির পরবর্তী সরকার গঠন করবেন।

নির্বাচনে শুধু অস্ট্রেলিয়াতেই ভোটগ্রহণ হচ্ছে না, বরং বিদেশে থাকা দেশটির ভোটাররা যেন ভোট দিতে পারেন, সেজন্য ৮৩টি দেশে ১১১টি কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তার জানিয়েছে। এর মধ্যে বার্লিন, হংকং, লন্ডন ও নিউইয়র্কে বিপুল সংখ্যক অস্ট্রেলিয়ানের বসবাস রয়েছে।

দেশটির ভোটারদের জন্য ভোট দেওয়ার কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ১৮ বছর বয়সী সবার জন্য ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক। কেউ ভোট দিতে ব্যর্থ হলে তাকে ১৩ ডলার জরিমানা গুণতে হবে।

প্রতিনিধি পরিষদের ১৫০টি আসনের সবকটিতেই এবং সিনেটের ৭৬টির মধ্যে ৪০টি আসনে আজ নির্বাচন হচ্ছে। কোনো দলের সরকার গঠনের জন্য প্রতিনিধি পরিষদের অন্তত ৭৬টি আসন পেতে হবে। সেটি সম্ভব না হলে দলগুলো বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী বা ছোট দলগুলোর সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করতে পারে।

দেশটিতে কয়েক দশক ধরেই রাজ্য ও ফেডারেল সরকার নির্বাচনে ছোট দলগুলো ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোট ক্রমাগত বাড়ছে।

আলবানিজ পরিমিত কর হ্রাস, সস্তা স্বাস্থ্যসেবা এবং যারা প্রথমবারের বাড়ি কিনতে চান, তাদের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। 

ডাটন বলেছেন, তিনি জ্বালানি কর ও গ্যাসের দাম কমাবেন এবং পাঁচ লাখ বাড়ির জন্য অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করবেন।

উভয় পক্ষকেই মার্কিন রাজনীতির সঙ্গেও লড়াই করতে হয়েছে। ছয় সপ্তাহের নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হতে না হতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অস্ট্রেলিয়ার ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে তার বাণিজ্য শুল্ক ঘোষণা করেন।

কিছু জরিপে দেখা গেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তোষামোদ করার কারণে ডাটনের প্রতি ভোটারদের সমর্থন কিছুটা কমেছে।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ