রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রধান সড়কে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় শাহ আলম (৬৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে কারওয়ান বাজার স্টার বেকারির বিপরীত পাশের সড়কে শাহ আলম রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় দ্রুতগতির একটি মোটরসাইকেল ধাক্কা দিলে তিনি ছিটকে পড়েন। রক্তাক্ত অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন বলে মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো.

ফারুক জানান।

দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল উল্টে মোটরসাইকেলের চালক সাইদুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী সাবিহা বেগম আহত হন। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন সাঈদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার শ্বশুরবাড়ি সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে বিকেলে স্ত্রীকে নিয়ে রাজধানীর পান্থপথে বসুন্ধরায় কেনাকাটা করতে আসছিলাম। এ সময় রাস্তার সামনে দিয়ে ওই বৃদ্ধ লোকটি পার হচ্ছিলেন। তিনি রাস্তা পার হতে এদিক–সেদিক দৌড়াদৌড়ি করছিলেন। একপর্যায়ে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লেগে তিনি ছিটকে পড়ে যান এবং আমি ও আমার স্ত্রী মোটরসাইকেল থেকে পড়ে আহত হই।’

পথচারী নাঈম সরকার বলেন, কারওয়ান বাজার স্টার বেকারির বিপরীত পাশে সড়কে বৃদ্ধ লোকটি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত শাহ আলমের ছেলে আলাউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গত বুধবার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী থেকে তাঁর বাবা গ্রিনরোডে তাঁদের বাসায় বেড়াতে এসেছেন। হয়তো সন্ধ্যায় তিনি হাঁটতে বের হয়েছিলেন। তাঁদের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার ধনুপুরে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছর কারাদণ্ড

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। মঙ্গলবার রাতে এ অধ্যাদেশের গেজেট জারি করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা নিলে এতে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে। এর আগে গত ১৫ মে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।

অধ্যাদেশের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা যে কোনো শ্রেণির আহত জুলাইযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা জ্ঞাতসারে কোনো মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করে বা বিভ্রান্তিকর কাগজাদি দাখিল করে নিজেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত জুলাইযোদ্ধা দাবি করে কোনো চিকিৎসা সুবিধা বা আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন সুবিধা দাবি করেন বা গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া সুবিধা বা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে।’

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ, পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে এটি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে– আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে, তাই সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।’

পুনর্বাসনের বিষয়ে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে শহীদ হয়েছেন এমন ব্যক্তির পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য এবং আহত জুলাইযোদ্ধাদের অনুকূলে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক উপার্জনমুখী কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ বা এমন সুবিধাদি প্রদান এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদান।

এরই মধ্যে গঠন করা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ এ অধ্যাদেশের অধীনে আনা হয়েছে। জুলাই শহীদ ও আহতদের তালিকাও এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রকাশ করা হয়েছে বলে ধরা হবে। অধ্যাদেশে আহতদের তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের যথাক্রমে ‘জুলাই শহীদ’ এবং ‘জুলাইযোদ্ধা’র স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ