জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা চাই মুজিববাদী সংবিধান অবিলম্বে বিলোপ করে বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হয় এমন সংবিধান কার্যকর করতে। কোনো বৈদেশিক শত্রুর প্রেসক্রিপশনে আর এই দেশ পরিচালিত হবে না। নতজানু হয়ে নয়; দেশ চলবে ন্যায্যতার সঙ্গে।’
রোববার সকালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক এলাকায় দলের পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। গণমানুষের ভাবনা জানা এবং আগামীর বাংলাদেশ নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানাতে পথসভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এনসিপি। এদিন দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৯টি স্থানে পথসভা করেন দলটির নেতারা। সাংগঠনিক এই কর্মসূচিতে হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা.
কর্মসূচি শুরুর আগে চট্টগ্রাম নগরের বিপ্লব উদ্যানে সাংবদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ চায় বিএনপি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসনাত বলেন, ‘যে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের কথা বলা হচ্ছে, তারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে প্রতিনিধিত্ব করছেন। তারা কোনো রাজনৈতিক দলের বা এনসিপির প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের বিপক্ষে একটি মহল অবস্থান নিয়েছে। একটি পক্ষ দেশকে বিভাজনের ষড়যন্ত্রেও লিপ্ত হয়েছে। ভেবেছিলাম, ৫ আগস্ট আমাদের লড়াই শেষ হয়েছে। তবে এ লড়াই দীর্ঘ। জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে রাজনৈতিক ছোট ছোট মতপার্থক্য দূরে রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’ এ সময় অবিলম্বে বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান হাসনাত।
আনোয়ারা উপজেলার চাতুরী চৌমুহনী বাজারের পথসভায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আর ইউএনও-ওসি’ দিয়ে রাতের নির্বাচন হবে না। কেউ একসঙ্গে দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।’
বাঁশখালী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে হাসনাত বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। সচিবালয়ে বসে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না।’ সাতকানিয়ার কেরানীহাট চত্বরে পথসভায় তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দল, আমাদের নিজেদের বিশৃঙ্খলা, চারদিকে প্রশাসনিকভাবে অসহযোগিতার মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার অপচেষ্টা চলছে।’ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেব।’
লোহাগাড়া উপজেলায় পথসভায় হাসনাত বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের সব স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন অবৈধ ঘোষণার পর নির্বাচন দিতে হবে।’ রাতে পটিয়া থানার মোড়ে তিনি বলেন, ‘যারা চাঁদাবাজি ও লুটপাট করে না, আগামীতে তাদের নির্বাচিত করতে হবে।
(তথ্য দিয়েছেন আনোয়ারা, কর্ণফুলী, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও পটিয়া প্রতিনিধি)
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প র জন ত ক পথসভ য় সরক র উপজ ল এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদাবাজি সন্ত্রাস দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন: নাহিদ ইসলাম
চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে জনগণকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, লড়াই এখনো শেষ হয়নি। দেশের মৌলিক সংস্থার ও জুলাই সনদ নিয়ে লড়াই এখনো চলছে। একটি মহল নানা তালবাহানা করছে। আমরা আপনাদের বলতে চাই, এ ব্যাপারে সোচ্চার হোন। আপনার এলাকায় চলমান চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সরব হোন।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মাগুরায় পদযাত্রায় অংশ নিয়ে শহরের ভায়না মোড়ে আয়োজিত পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
এনসিপির প্রধান এই নেতা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মাগুরায় যারা শহীদ হয়েছেন; সেই রক্তের মর্যাদা দিতে হবে। বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তোলার জন্য বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক ও সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের লড়াই জারি রাখতে হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের দেশে যে সংকটগুলো চলমান, গণঅভ্যুত্থানের পরেও আমরা নতুন সংবিধানের অভাবে সেই সমস্যার সমাধান করতে পারছি না। ফলে আমাদের একটি নতুন সংবিধান প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ বিনির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে করতে হলে ফ্যাসিজমের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল; তাদের বিচার এবং মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন। পাশাপাশি ভিনদেশী আধিপত্য ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশপন্থী একটি রাজনীতি দাঁড় করাতে হবে।
এ সময় পথসভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দিন পাটোয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. তাসনিম জারা, নুসরাত তাবাসসুমসহ প্রমুখ।
পথসভার আগে পদযাত্রাটি শহরের ভায়না মোড় থেকে শুরু হয়ে চৌরঙ্গী মোড়, ঢাকা রোড হয়ে আবার ভায়না মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।