আইপিএল বেটিংয়ে ১৬ বছর বয়সী ছেলে খোয়াল ৫০ হাজার রুপি, বাবার প্রশ্ন, বিসিসিআই কি করে
Published: 30th, May 2025 GMT
আইপিএল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টি–টোয়েন্টি লিগ। তবে জনপ্রিয় হওয়ায় দুশ্চিন্তার জায়গাও আছে। অনলাইনে তথাকথিত ফ্যান্টাসি প্ল্যাটফর্মে আইপিএল নিয়ে দেদার বেটিং চলছে, আর এই অনলাইন বেটিংয়ের প্রচারণায় রয়েছেন তারকা ক্রিকেটাররাই।
উঠতি বয়সী ক্রিকেটপ্রেমীরা জড়িয়ে পড়ছেন অনলাইন বেটিংয়ে এবং অনেক অর্থও তাঁরা খোয়াচ্ছেন। ব্যাপারটি কারও কারও চোখে ‘নীরব মহামারি’। ফোনে বেটিংয়ের অ্যাপস চালু করে এতে মনোযোগ দিতে গিয়ে শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা ও মানসিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হচ্ছে।
ভারতের বার্তা সংস্থা আইএএনএস এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কিছু মা–বাবার সঙ্গে কথা বলেছে। দিল্লির ৫৫ বছর বয়সী মণীষ আইএএনএসকে জানান, তাঁর ১৬ বছর বয়সী ছেলে অনলাইন বেটিংয়ে ৫০ হাজার রুপি খুইয়েছে। এরপর তিনি ছেলের ফোন থেকে অনলাইনে বেটিংয়ের তিনটি অ্যাপস মুছে ফেলেন। মণীষ প্রশ্ন রেখেছেন অনলাইন বেটিংয়ের প্রচারণা চালানো তারকা ক্রিকেটারদের কাছে, ‘এটা হৃদয়বিদারক। ক্রিকেট এত দিন ছিল প্রেরণার ও খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতার। আমার নায়কেরা কেন এমন কিছুর প্রচারণা চালাচ্ছেন, যেটা খুব বিপজ্জনক।’
আরেকজন অভিভাবক হতাশা প্রকাশ করেছেন এভাবে, ‘বিসিসিআই অর্থ আয়ে ব্যস্ত, আমাদের সন্তানদের কী হচ্ছে, সেটা তারা পাত্তা দেয় বলে মনে হয় না। শীর্ষসারির ক্রিকেটাররা এসব অ্যাপসের প্রচারণা চালাচ্ছে, কিন্তু বোর্ড তাদের নিবৃত্ত করছে না। এমনকি কিছু (বেটিং) প্ল্যাটফর্ম বড় টুর্নামেন্টের স্পনসরও হচ্ছে। তারা স্মার্ট—এটাকে তারা বলে ফ্যান্টাসি খেলা, কিন্তু এটার সঙ্গে অর্থ জড়িত এবং দ্রুত আয়ের একটা পথ ভেবে অল্প বয়সীরা এতে আসক্ত হয়ে পড়ছে।’
আরও পড়ুনযে পাঁচ কারণে কোহলি স্বপ্নপূরণের খুব কাছে৫ ঘণ্টা আগেসাম্প্রতিক সময়ে একটি পরিবার আইপিএলের ম্যাচ দেখতে গিয়ে খেয়াল করে, অনেক দর্শক ফোনে সবার সামনেই বেটিং করছেন, ‘আমরা দেখেছি কিশোররা স্টেডিয়াম থেকে ফোনে কল করে লাইভ বেটিং করছে। সংখ্যায় তারা প্রচুর।’
ভারতের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাঝেমধ্যেই অবৈধ বেটিংয়ের চক্র ধরতে অভিযান চালায় এবং সফলও হয়। কিন্তু ফ্যান্টাসি গেমিংয়ের ছদ্মবেশে মুঠোফোনের বেটিং অ্যাপস নিয়মনীতি ফাঁকি দিয়ে কম বয়সী কিংবা পরিণত ব্যক্তিদেরও ঝুঁকিপূর্ণ আচরণকে উৎসাহিত করছে।
সমালোচকেরা মনে করেন, বিসিসিআইকে এ নিয়ে অবশ্যই নৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এখনো চুপ করে থাকায় ভারতের জনমনে প্রশ্ন জাগার পাশাপাশি সন্তানদের নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায়ও পড়েছে। বেটিংয়ের এসব প্ল্যাটফর্মে আইপিএলের বড় তারকাদের প্রচারণা চালাতে দেখা যায়।
আইএএনএস জানিয়েছে, ভারতে এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে। সমর্থক ও অভিভাবকদের চাওয়া, বিসিসিআই এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেবে; তথাকথিত এসব গেমিং প্রতিষ্ঠানগুলোর স্পনসর ও এনডোর্সমেন্ট বাতিল করবে। ক্রিকেটাররা আরও দায়িত্বশীল হতে এসবের প্রচারণা যেন না চালান, সেটাও তাদের প্রত্যাশা।
আরও পড়ুনআইপিএলে জরিমানাও কোটি টাকা, বড় ক্ষতি কার২৯ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব স স আই
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগ গোপনভাবে ১০টি চুক্তি করে দেশকে পরাধীন করেছিল: রেজাউল করীম
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, “ভারতের সঙ্গে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ গোপনভাবে ১০টি চুক্তি করে দেশকে পরাধীন জাতিতে পরিণত করেছিল। আওয়ামী লীগ দেশের জন্য রাজনীতি না করে ভারতের তাবেদারি করেছে।”
তিনি বলেন, “সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ তৈরি হবে না। জবাবদিহিমূলক সরকার কায়েম হবে। একটি সুন্দর দেশ গঠন হবে।”
বুধবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নড়াইল পুরাতন বাস টার্মিনাল মুক্ত মঞ্চে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রেজাউল করীম বলেন, “পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে প্রতিটি ভোটের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত হবে। সব দল-মতের প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার তৈরি হবে।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ দিনের ভোট রাতে বাক্সে ঢুকিয়ে বিগত বছরগুলোতে ক্ষমতায় আসীন ছিল। গত বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত পতিত ফ্যাসিস্টদের হাতে অনেক মায়ের কোল খালি হয়েছে। পতিত স্বৈরাচার দেশকে অস্থিতিশীল করে সুযোগ নেওয়ার পায়তারা করে যাচ্ছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ দলের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।”
রেজাউল করীম বলেন, “রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সমালোচনা করে বক্তব্য এবং মন্তব্যে শিষ্টাচারের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোর। কারণ কোনো অবস্থাতেই পতিত ফ্যাসিবাদকে এদেশে সুযোগ করে দেওয়া যাবে না।”
চরমোনাই পীর সমাবেশ শেষে নড়াইলের দুইটি আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাত পাখা প্রতীকের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। তারা হলেন- নড়াইল-১ (কালিয়া-সদর উপজেলার আংশিক) আসনে মাওলানা আব্দুল আজিজ এবং নড়াইল-২ আসনে (লোহাগড়া-নড়াইল সদরের আংশিক) অধ্যক্ষ মাওলানা তাজুল ইসলাম।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নড়াইল জেলার সভাপতি মাওলানা খায়রুজ্জামানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- দলের নায়েবে আমির অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা আব্দুল আওয়াল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নড়াইল জেলা আমির অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান বাচ্চু, সেক্রেটারি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ কায়সার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম মহানগরীর নেতা মাওলানা জান্নাতুল ইসলাম, নড়াইল জেলা সেক্রেটারি এসএম নাসির উদ্দিন।
ঢাকা/শরিফুল/মাসুদ