ভারতে ২৮ মাওবাদী নেতা-কর্মীকে হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশের ৭১ বিশিষ্ট নাগরিকের প্রতিবাদ
Published: 2nd, June 2025 GMT
ভারতে বামপন্থী সংগঠন কমিউনিস্ট পার্টি-মাওবাদীর (সিপিআই-এম) সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশভা রাও ওরফে বাসভ রাজসহ ২৮ জন মাওবাদী রাজনৈতিক নেতা–কর্মীকে হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশের ৭১ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
রোববার এক বিবৃতিতে এই নাগরিকেরা বলেন, গত ২১ মে নরেন্দ্র মোদি সরকারের সামরিক অভিযান ‘অপারেশন কাগার’–এর মাধ্যমে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মাওবাদী) সাধারণ সম্পাদক বাসভ রাজসহ ২৮ জন মাওবাদী রাজনৈতিক কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর যুদ্ধের নাটক সাজানো হয়েছে।
তথাকথিত মাওবাদী দমন অভিযানের নামে একটি পরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা বাংলাদেশের প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক কণ্ঠগুলো এই হত্যাকাণ্ডসহ অপারেশন কাগারে সংঘটিত বিচারবহির্ভূত রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
বিবৃতিতে অবিলম্বে অপারেশন কাগার বন্ধসহ কয়েকটি দাবি জানানো হয়। বিশ্বব্যাপী বিপ্লবী, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে ভারতের আদিবাসী ও নিপীড়িত জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৌভিক রেজা, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী ফরিদ, মাওলানা ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ, নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চার সভাপতি জাফর হোসেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের সভাপতি মাসুদ খান, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, আইনজীবী মনজুর আল মতিন, সাংবাদিক আরিফুজ্জামান তুহিন প্রমুখ।
আরও পড়ুনভারতে মাওবাদী সাধারণ সম্পাদকসহ ২৭ জনকে হত্যা২১ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক ব শ বব
এছাড়াও পড়ুন:
পা পিছলে ট্রেনের নিচে সবজি বিক্রেতা, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
চলন্ত ট্রেনের সামনে দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছেন এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি। পাশাপাশি দুটি ট্রেন তুলনামূলক কম গতিতে চলছিল। হঠাৎ একটি ট্রেনের সামনে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যান তিনি। ট্রেনটি চলে যায় তাঁর শরীরের ওপর দিয়ে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির নাম জালাল উদ্দিন ওরফে জালু (৪০)। তিনি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে চরআলগী ইউনিয়নের নিধনিয়া চর ব্যাপারী পাড়ার বাসিন্দা ও পেশায় সবজি বিক্রেতা ছিলেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশন এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি।
দুর্ঘটনার পর জালাল উদ্দিনকে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা বিজন মালাকার।
স্বজনেরা জানিয়েছেন, জালাল উদ্দিন এলাকায় কৃষিকাজ করেন এবং সেখান থেকে কৃষিপণ্য নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে বিক্রি করেন। তিনি প্রায়ই ট্রেনে চেপে শ্রীপুর যান এবং রাতের ট্রেনে বাড়ি ফেরেন। গতকাল দুপুরে শাকসবজি নিয়ে ট্রেনে শ্রীপুর যান। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে ধরতে রাত পৌনে ৯টার দিকে তিনি দৌড় দেন। এ সময় ট্রেনটি শ্রীপুর স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাচ্ছিল। সেটি ধরতে গিয়ে পাশের রেললাইনে থাকা ঢাকাগামী মহুয়া এক্সপ্রেসের ট্রেনের নিচে পড়ে যান জালাল উদ্দিন।
নিহত ব্যক্তির প্রতিবেশী ও গফরগাঁও কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ব্যাপারী জানান, আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে জানাজা শেষে জালাল উদ্দিনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় তাঁর পরিবার একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে হারাল।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতার হোসেন বলেন, স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রেলওয়ে পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর থানার ওসি মহম্মদ আবদুল বারিক।