রাতে চাঁদের ভরাপূর্ণিমার আলো যাদের মুগ্ধ করে আজকের দিনটা তাদের জন্যই। কারণ আজ রাতের আকাশে দেখা যাবে বিরল এক পূর্ণিমা। যার নাম ‘স্ট্রবেরি মুন’ বা ‘স্ট্রবেরি সুপারমুন’।
এবারের এই স্ট্রবেরি মুন হবে বিগত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে নিচু অবস্থানে ওঠা পূর্ণিমা চাঁদ।
এই পূর্ণিমা শুধুমাত্র জুন মাসের নয়, উত্তর গোলার্ধে বসন্তের শেষ পূর্ণিমাও বটে। এমন দৃশ্য আবার চোখে পড়বে ১৮ বছর পর-২০৪৩ সালে। তাই আজকের রাত শুধু আকাশ দেখার নয়, সময়কে স্মরণে রাখার এক দুর্লভ সুযোগও বটে।
আরো পড়ুন:
মহাকাশ ঘুরে এলেন কেটি পেরিসহ ৬ নারী
মহাকাশে ইতিহাস গড়ল ভারত
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে, এই বিরল ঘটনার কারণ ‘মেজর লুনার স্ট্যান্ডস্টিল’ নামে পরিচিত একটি জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনা। এর ফলে চাঁদ তার কক্ষপথের চরম অবস্থানে পৌঁছে পৃথিবীর দিগন্তের সবচেয়ে উত্তর ও দক্ষিণ দিক থেকে ওঠে ও অস্ত যায়। এরই ফলে পূর্ণিমার চাঁদ এত নিচু অবস্থানে দেখা যাচ্ছে এবং এর আলো হয়ে উঠবে আরও উষ্ণ ও সোনালি-যা আকাশপ্রেমীদের জন্য এক দৃষ্টিনন্দন অভিজ্ঞতা হতে চলেছে।
‘স্ট্রবেরি মুন’ নাম করণ করা হলেও সত্যিকার অর্থে এই চাঁদ স্ট্রবেরির মতো গোলাপি নয়। এর নামকরনের পেছনে অবশ্য রয়েছে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট।
‘দ্য ওল্ড ফার্মারস অ্যালম্যানাক’-এর তথ্য অনুযায়ী, এই নামটির উৎস মূলত উত্তর আমেরিকার আদিবাসী গোষ্ঠী এবং ঔপনিবেশিক আমেরিকা ও ইউরোপের লোকাচার থেকে এসেছে।
ঐতিহাসিকভাবে বিভিন্ন পূর্ণিমার নাম দিয়ে ঋতু চিহ্নিত করা হতো। জুন মাসের পূর্ণিমা, যা বসন্তের শেষ কিংবা গ্রীষ্মের শুরু বোঝায়, তখন ছিল স্ট্রবেরি বা বেরি ফলের মৌসুম। এই সময় ‘জুন-বিয়ারিং স্ট্রবেরি’ নামের একটি ফল পেকে ওঠে। সে কারণেই জুন মাসের পূর্ণিমার নাম হয়েছে ‘স্ট্রবেরি মুন’। আদিবাসীরা একে ‘বেরি পাকার পূর্ণিমা’ বলেও ডাকতেন।
প্রায় প্রতি বছর জুন মাসের পূর্ণিমা উত্তর গোলার্ধে স্বাভাবিকভাবেই সবচেয়ে নিচু অবস্থানে দেখা যায়। কিন্তু এবারের ঘটনাটি বিশেষ, কারণ ২০২৫ সালের শুরুতে ঘটে গেছে ‘মেজর লুনার স্ট্যান্ডস্টিল’ নামের একটি জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনা, যার প্রভাব এই পূর্ণিমায় প্রকটভাবে দৃশ্যমান।
এই ঘটনা প্রায় ১৮.
ঢাকা/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ট রব র অবস থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস