Samakal:
2025-06-14@07:33:08 GMT

গুজরাটে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত

Published: 13th, June 2025 GMT

গুজরাটে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত

ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী রামমোহন নায়ডু জানিয়েছেন, দেশটির বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ভেঙে পড়ার ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক প্রটোকল মেনেই এ তদন্ত হবে বলে জানানো হয়েছে।

নিজের এক্স হ্যান্ডেলে রামমোহন নায়ডু জানিয়েছেন, ‌‘এছাড়া সরকার একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটিও গঠন করেছে যেখানে বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। এই কমিটির কাজ হবে বিমান পরিবহন খাতের সুরক্ষা আরও কঠোর করা এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, তার দিকেও নজর দেওয়া।’

শুক্রবার সকালেই ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে নমুনা সংগ্রহ শুরু করেছেন। ভারতের নিজস্ব তদন্ত ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের পক্ষে ইতিমধ্যেই একটি বিশেষজ্ঞ দল ভারতে রওনা হয়েছে। তারা ভারতের তদন্তকে সহায়তা করার জন্য যাচ্ছেন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার জানিয়েছেন, তার দেশ থেকেও একটি বিশেষজ্ঞ দল গুজরাট রওনা হয়েছে তদন্তে সহায়তা করার জন্য।

 
বৃহস্পতিবার দুপুরে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী বোয়িংয়ের একটি ড্রিমলাইনার বিমান উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়। উড়োজাহাজের পাইলট-ক্রুসহ ২৪১ আরোহী নিহত হন। আর যে ভবনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয় তা স্থানীয় বিজে মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের একটি হোস্টেল। ওই সময় হোস্টেলের ক্যান্টিনে অনেকে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, এই দুর্ঘটনায় অন্তত ২৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে পরিষ্কার, হাসপাতাল এলাকায়ই মারা গেছে অর্ধশতাধিক। হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। 

গুজরাটের উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা বিধি চৌধুরী রয়টার্সকে বলেন, ‘দুর্ঘটনায় অন্তত ২৯৪ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কিছু শিক্ষার্থী রয়েছেন, যারা মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে ছিলেন।’ 

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের আহমেদাবাদ থেকে ২৪২ আরোহী নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি যাত্রা শুরু করেছিল। আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের গ্যাটউইকের উদ্দেশে উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আবাসিক এলাকায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এ সময় সৃষ্টি হয় বিশাল আগুনের গোলক। বিমানে ২৩২ যাত্রী ও ১০ ক্রু ছিলেন। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বিমানের ২৪১ আরোহী নিহত হলেও বিস্ময়করভাবে বেঁচে গেছেন একজন। জীবিত উদ্ধার হওয়া ওই যাত্রীকে উদ্ধারের পর হাঁটাচলা করতেও দেখা যায়। 

আহমেদাবাদের পুলিশ কমিশনার জি এস মালিক বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় স্থানীয় কয়েক বাসিন্দাও মারা গিয়ে থাকতে পারেন। তবে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এখনও স্পষ্ট জানা যায়নি। বিমান দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শোক জানিয়েছেন।

বিধ্বস্ত বিমানে গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি ছিলেন বলে স্থানীয় এক বিজেপি নেতা জানিয়েছেন। পুলিশ বলছে, রুপানি নিহত হয়েছেন। দ্য হিন্দু অনলাইন জানায়, এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ বিমানে ১৬৯ ভারতীয় ও ৫৩ ব্রিটিশ ছিলেন। এ ছাড়া সাত পর্তুগিজ ও এক কানাডার নাগরিক ছিলেন। আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পর বিমানটি আবাসিক এলাকা মেঘানিনগরের কাছে ধরপুরে বিধ্বস্ত হয়। তবে কী কারণে এটি বিধ্বস্ত হয়েছে, তা জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। বিমান ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার ২৪ জানায়, তারা বিমানটি থেকে সর্বশেষ সংকেত পেয়েছে ৬২৫ ফুট উঁচুতে থাকা অবস্থায়। এটা উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এ উচ্চতায় পৌঁছায়।

ফ্লাইট এআই-১৭১ বিধ্বস্ত হওয়ার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এসব ভিডিওতে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের তৈরি বিমানটি উড্ডয়নের পর ওপরের দিকে না গিয়ে ক্রমেই নিচে নামতে থাকে। দূর থেকে অনুমান করা যাচ্ছিল, চালক এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। কিছুক্ষণ পরই বিমানটি আবাসিক এলাকায় আছড়ে পড়ে।  

এনডিটিভি জানায়, বিমানটি দূরের যাত্রার উদ্দেশে রওনা করায় এতে পরিপূর্ণ জ্বালানি ছিল। বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিশাল আগুনের গোলক তৈরি হয়। বিধ্বস্তের পরপরই দুই ডজনের বেশি অ্যাম্বুলেন্স এসে ঘটনাস্থলে হাজির হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে ভবনের আশপাশে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
ভারতের ইতিহাসে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা এটি। বিমানের প্রধান পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত সাবহারওয়াল ও সহকারী পাইলট ছিলেন ক্লাইভ কুন্ডার। বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ জানতে বিমানের ‘ব্ল্যাক বক্স’-এর দিকে তাকিয়ে আছেন তদন্তকারীরা। ভারতের গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বিধ্বস্ত হওয়ার আগে বিমানের পাইলট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে (এটিসি) বিপদ বার্তা বা ‘মে ডে কল’ পাঠিয়েছিলেন। ফ্লাইটরাডার ২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, বিপদবার্তা পেয়ে এটিসি যোগাযোগেরও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যোগাযোগ করা যায়নি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র তদন ত ব ম ন দ র ঘটন দ র ঘটন য় আহম দ ব দ ব ম নট তদন ত প ইলট

এছাড়াও পড়ুন:

শোকে বিহ্বল কারিশমা ও বিক্রান্তের পরিবার

একদিকে ভারতীয় বিমান দুর্ঘটনায় ২৪২ যাত্রীর মৃত্যু, অন্যদিকে আকস্মিক ঘটনায় দুই সন্তানের পিতাকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন অভিনেত্রী কারিশমা কাপুর। একইভাবে ভাইয়ের মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ ‘টুয়েলভথ ফেল’ সিনেমার আলোচিত অভিনেতা বিক্রান্ত ম্যাসি। এ ঘটনায় উভয় বলিউড তারকার পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

আনন্দবাজার ও সংবাদ প্রতিদিনসহ ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে জানা গেছে, ব্রিটেনে পোলো  খেলার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুরবণ করেছেন কারিশমা কাপুরের সাবেক স্বামী ও তাঁর দুই সন্তানের পিতা সঞ্জয় কাপুর। বৃহস্পতিবার লন্ডনের এক ক্লাবে পোলো খেলতে গিয়েছিলেন এই ভারতীয় শিল্পপতি। সেখানেই  ঘটে বিপত্তি। হঠাৎ একটা মৌমাছি তাঁর গলায় ভেতরে ঢুকে যায়। চেষ্টা করে সেটা বের করতে না পারায় এতটাই ঘাবড়ে যান যে, ভয়ে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু ঘটে তাঁর। এই আকস্মিক ঘটনায় চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়ারও সুযোগ পাননি সঞ্জয়।

এদিকে তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই কারিশমার বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করেন ছবিশিকারিরা। এদিন কাঁদো কাঁদো মুখে গাড়ি থেকে নামতে দেখা গেছে অভিনেত্রীকে। থমথমে মুখ নিয়ে কারিশমার বাড়িতে যেতে দেখা গেছে মালাইকা আরোরা, কারিনা কাপুর, সাইফ আলি খানসহ আরও কয়েকজন বলিউড তারকা ও অভিনেত্রীর আত্মীয়-স্বজনকে।

তারকাদের ভিড় সামলাতে এ দিন রাত থেকেই কারিশমার বাড়ির সামনে রাখা হয়েছে পুলিশি প্রহরা। তবে সঞ্জয়ের মৃত্যুতে কারিশমার পক্ষ থেকে এখনও কোনো বিবৃতি আসেনি।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আচমকাই বিমান দুর্ঘটনায় স্বজন হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বলিউড অভিনেতা বিক্রান্ত ম্যাসির পরিবার। এদিন ভারতের আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ড্রিমলাইনার ৭৮৭ বোয়িং বিধ্বস্তের ঘটনায় সেই বিমানের সহকারী পাইলটের দায়িত্বে থাকা বিক্রান্তের কাকাতো ভাই ক্লাইভ কুন্দরও মৃত্যু হয়েছে।

সে কথা উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্রান্ত লিখেছেন, ‘আহমেদাবাদের মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবার এবং প্রিয়জনের কথা ভেবে আমার মন দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে। আরও বেশি কষ্ট হচ্ছে, এই শোক আমার ব্যক্তিগত। এই দুর্ঘটনায় আমার কাকা ক্লিফোর্ড কুন্দের তাঁর ছেলে ক্লাইভ কুন্দেরকে হারিয়েছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে যিনি ওই বিমানের সহকারী পাইলট ছিলেন। ঈশ্বর আমাদের সবাইকে শক্তি দিন।’

বিক্রান্তের এই শোকবার্তার পরই শোরগোল পড়ে গেছে সিনেদুনিয়ায়। একের পর এক শোকবার্তার ভিড় জমতে থাকে অভিনেতার সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে। সবাই ভেবেছিলেন, মৃত সহকারী পাইলট সম্ভবত বিক্রান্ত ম্যাসির তুতো ভাই। তবে শুক্রবার সকালেই ধোঁয়াশা পরিষ্কার করলেন ‘টুয়েলভথ ফেল’ অভিনেতা।

তিনি জানান, ওই বিমান দুর্ঘটনায় মৃত সহকারী পাইলট ক্লাইভ কুন্দেরের সঙ্গে আদতে তাঁর রক্তের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে ক্লাইভের সঙ্গে সম্পর্কটা আপন ভাইয়ের চেয়ে কোনোভাবেই কম নয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ