ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে ভাঙচুর ফিলিস্তিনপন্থীদের
Published: 20th, June 2025 GMT
ব্রিটেনের ফিলিস্তিনিপন্থী কর্মীরা মধ্য ইংল্যান্ডে বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে ভাঙচুর চালিয়েছে। সেখানে তারা জ্বালানি ও পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত দুটি সামরিক বিমানের উপর লাল রঙ ছিটিয়ে দিয়েছে। শুক্রবার এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
প্রচারণা গোষ্ঠী প্যালেস্টাইন অ্যাকশন জানিয়েছে, তাদের দুই কর্মী অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ঘাঁটিতে প্রবেশ করে ভয়েজার বিমানের ইঞ্জিনে রঙ ছিটিয়ে দেয় এবং বাঁকানো লোহাদণ্ড দিয়ে আরো ক্ষতি করেছে।
গ্রুপটি এক বিবৃতিতে বলেছে, “ইসরায়েলি সরকারের প্রকাশ্যে নিন্দা জানানো সত্ত্বেও ব্রিটেন সামরিক পণ্যসম্ভার পাঠাচ্ছে, গাজার উপর গুপ্তচর বিমান উড়িয়েছে এবং মার্কিন/ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানে জ্বালানি সরবরাহ করছে। ব্রিটেন কেবল জড়িত নয়, দেশষটি গাজা গণহত্যা এবং মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধাপরাধের সক্রিয় অংশগ্রহণকারী।”
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ‘ভাংচুরের’ নিন্দা জানিয়েছে এবং বলেছে যে তারা তদন্তের জন্য পুলিশের সাথে কাজ করছে।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমাদের সশস্ত্র বাহিনী ব্রিটেনের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিনিধিত্ব করে। তারা আমাদের জন্য তাদের জীবন বাজি রেখেছিল এবং তাদের কর্তব্য, নিষ্ঠা ও নিঃস্বার্থ ব্যক্তিগত ত্যাগের প্রদর্শন আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা। যারা আমাদের রক্ষা করে তাদের সমর্থন করা আমাদের দায়িত্ব।”
পুলিশ জানিয়েছে, তারা বিমান ঘাঁটিতে প্রবেশাধিকার এবং অপরাধমূলক ক্ষতি সাধনের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তদন্ত করছে।
প্যালেস্টাইন অ্যাকশন গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, তারা রানওয়েতে রঙ ছিটিয়েছে এবং সেখানে একটি ফিলিস্তিনি পতাকা রেখে গেছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
‘শরিয়াহ ও সরকারি নীতিবিরোধী’: নারী ও ইরানি লেখকদের ১৪০টিসহ ৬৭৯ বই নিষিদ্ধ করল তালেবান
আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যসূচি থেকে নারীদের লেখা বই নিষিদ্ধ করেছে তালেবান সরকার। মানবাধিকার ও যৌন হয়রানি–সম্পর্কিত বিষয়ে পাঠদানের ওপর একটি নতুন নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
শরিয়াহবিরোধী ও সরকারি নীতির পরিপন্থী বলে মনে হওয়ায় ৬৭৯টি বইকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে চিহ্নিত করেছে তালেবান। নিষিদ্ধ এসব বইয়ের মধ্যে ১৪০টি নারীদের লেখা ও ৩১০টি ইরানি লেখকদের লেখা বা ইরানে প্রকাশিত।
নিষিদ্ধ বইয়ের ৫০ পৃষ্ঠার একটি তালিকা আফগানিস্তানের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
আফগান সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বলা হয়েছে, তারা এখন থেকে ১৮টি বিষয়ে পাঠদান করতে পারবে না। তালেবানের এক কর্মকর্তা বলেন, এসব বিষয় মূলত ইসলামি শরিয়তের মূলনীতি ও সরকারের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
চার বছর আগে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ ধরনের নানা নিয়মকানুন জারি করেছে তালেবান সরকার। চলতি সপ্তাহেই তালেবানের সর্বোচ্চ নেতার নির্দেশে অন্তত ১০ প্রদেশে ‘ফাইবার অপটিক ইন্টারনেট’ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কর্মকর্তারা বলেছেন, অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আফগান সরকারের পক্ষ থেকে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বলা হয়েছে, তারা এখন থেকে ১৮টি বিষয়ে পাঠদান করতে পারবে না। তালেবানের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এসব বিষয় মূলত ইসলামি শরিয়তের মূলনীতি ও সরকারের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।অনেকের মতে, এসব নিয়মকানুন আফগানিস্তানের মানুষের দৈনন্দিন জীবনে নানাভাবে প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে কিশোরী ও নারীরা এসব নিয়মের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ষষ্ঠ শ্রেণির পর থেকে তাদের শিক্ষা গ্রহণ নিষিদ্ধ। ২০২৪ সালের শেষ দিকে ধাত্রীবিদ্যা বা মিডওয়াইফারি কোর্সও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ১৮ বিষয়ে পাঠদান নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তার ৬টিই নারীদের নিয়ে, যেমন ‘জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’, ‘দ্য রোল অব উইমেন ইন কমিউনিকেশন’ ও ‘উইমেনস সোসিওলজি’।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে কী কারণে স্বীকৃতি দিল রাশিয়া ১৪ জুলাই ২০২৫তালেবান সরকার বলেছে, তারা আফগান সংস্কৃতি ও ইসলামিক আইনের ভিত্তিতে নারী অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
তালেবানের এসব নিয়মকানুন দেশটির মানুষের দৈনন্দিন জীবনে নানাভাবে প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে কিশোরী ও নারীরা এসব নিয়মের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।তবে আফগানিস্তানের বই পর্যালোচনা কমিটির একজন সদস্য বিবিসিকে বলেন, নারী লেখকদের সব বই পড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
নিষিদ্ধ বইগুলোর তালিকায় আফগানিস্তানের সাবেক সরকারের বিচার মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী জাকিয়া আদেলির বইও রয়েছে। তিনি বলেন, ‘চার বছরে তালেবান যা করেছে, তাতে পাঠ্যসূচিতে এমন পরিবর্তনে অবাক হইনি। নারীরা পড়াশোনা করতে পারছেন না। তাদের মতামত ও লেখালিখির অধিকারও দমন করা হবে, এটাই স্বাভাবিক।’
আরও পড়ুনরাশিয়ার পর আর কোন কোন দেশ তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে পারে০৫ জুলাই ২০২৫গত আগস্টের শেষ দিকে বই নিষিদ্ধের অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করেন তালেবান সরকারের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক জিয়াউর রহমান আরিয়ুবি। তিনি বলেন, আলেম ও বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শুধু নারী লেখকই নয়, নিষিদ্ধ বইয়ের তালিকায় ইরানি লেখক ও প্রকাশকদের বইও রয়েছে। বই পর্যালোচনা কমিটির এক সদস্য বলেন, আফগান পাঠ্যসূচিতে ইরানি বিষয়বস্তুর প্রবেশ ঠেকাতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনতালেবান শাসনের তিন বছর, কেমন আছে আফগানিস্তান১৫ আগস্ট ২০২৪