ঈশ্বরদীতে বালুমহাল দখলে গুলি, যুবক আহত
Published: 12th, July 2025 GMT
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় বালুমহাল দখল নিতে এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে সোহান মোল্লা (২৮) নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শনিবার সকালে উপজেলার সাড়া ইউনিয়নের ইসলামপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ সোহান মোল্লা ঈশ্বরদীর মাজদিয়া চৌধুরী পাড়ার সাহাবউদ্দিন মোল্লার ছেলে। তিনি মাঠে গরুর ঘাস কাটছিলেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিকি চিকিৎসা দিয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাবনার ঈশ্বরদী ও নাটোরের লালপুরের সীমান্তবর্তী বালুমহাল নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে দুই পক্ষের বিরোধ চলছে। বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রায়ই লালপুর থেকে স্পিডবোটে লোকজন এসে ঈশ্বরদী অংশের লোকজনের ওপর গুলি চালিয়ে ভয়ভীতি দেখান। গতকাল সকাল ১০টার দিকেও কয়েকজন অস্ত্রধারী এসে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করেন। এতে হাতে গুলি লেগে সোহান মোল্লা আহত হন। পরে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সোহান মোল্লা বলেন, তিনি মাঠে গরুর ঘাস কাটছিলেন। এ সময় একটা স্পিডবোটে কয়েকজন এসে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করেন। এতে তাঁর হাতে গুলি লেগে তিনি মাটিতে শুয়ে পড়েন। পরে স্পিডবোটটি চলে গেলে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন।
সাড়া ঘাটের বালুমহালের ইজারাদার মেহেদী হাসানের অভিযোগ, লালপুরের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের বৈধ বালুমহাল অবৈধভাবে দখল করার চেষ্টা করছে। বারবার এসে গুলি ছুড়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এতে বালুমহালের শ্রমিকেরাসহ স্থানীয় লোকজন আতঙ্কের মধ্যে আছেন। কৃষকেরা মাঠে কাজ করতে পারছেন না। তাঁরা দ্রুত এই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি করছেন।
ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল কজন
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
যশোর শহরের ষষ্ঠীতলাপাড়ায় আশরাফুল ইসলাম বিপুল (২৭) নামে এক যুবক কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে তিনি মারা যান।
নিহতের পরিবারের দাবি, বন্ধুর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে বিয়ে করায় একই এলাকার বাপ্পী নামে আরেক যুবক বিপুলকে কুপিয়ে হত্যার করেছেন। কৌশলে ফোন করে ডেকে নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।
নিহত আশরাফুল ইসলাম বিপুল যশোর শহরতলীর শেখহাটি জামরুলতলা এলাকার আখতার হোসেনের ছেলে। তিনি এসিআই গ্রুপের যশোর ডিপোতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। বাপ্পী ষষ্ঠীতলাপাড়ার স্যানিটারি মিস্ত্রি আব্দুল খালেকের ছেলে। বাপ্পী ও বিপুল বন্ধু ছিলেন।
নিহতের বাবা আখতার হোসেন বলেন, ‘মাদক সেবন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকায় বাপ্পীকে বছরখানেক আগে তালাক দেন সুমাইয়া। এরপর সুমাইয়াকে বিয়ে করে বিপুল। এতে বাপ্পী ক্ষিপ্ত হন এবং বিপুল ও সুমাইয়াকে হত্যার হুমকি দেন। এরপর বিভিন্ন সময় বাড়ির সামনে বোমাবাজির ঘটনাও ঘটান তিনি। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কৌশলে ফোন করে ডেকে নিয়ে বিপুলকে কুপিয়ে জখম করেন বাপ্পী ও তার সহযোগীরা। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করার কিছু সময় পর বিপুল মারা যায়।’
হাসপাতাল চত্বরে আহাজারি করতে দেখা যায় নিহত বিপুলের স্ত্রী সুমাইয়া। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘বাপ্পী অনেক খারাপ ছেলে। তার সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় আমাদের ডিভোর্স হয়। পরে বিপুলের সঙ্গে পরিচয় হয় ও আমরা বিয়ে করি। বিয়ের পর বাপ্পী ও তার পরিবার বিভিন্ন সময়ে আমাকে উত্ত্যক্ত করত। ফোন করে আজেবাজে কথা বলত। কয়েক মাস আগে আমার স্বামীকে লক্ষ্য করে বোমাও ছোড়ে। সে সময় সে প্রাণে বেঁচে যায়। কয়েকবার থানাতে অভিযোগ দিলেও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।’
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ শাকিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিপুলের শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাকে ভর্তি করে ওয়ার্ডে পাঠানোর পর তিনি মারা যান।’ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন এ চিকিৎসক।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত জানান, খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে যায়। হামলাকারী তথ্য নিয়ে অভিযান শুরু হয়েছে পুলিশ এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন।