চোটে সিরিজ থেকেই ছিটকে পড়লেন পন্ত
Published: 24th, July 2025 GMT
ওল্ড ট্রাফোর্ডে চতুর্থ টেস্টের প্রথম দিনে ভালো শুরু করেও ঋষভ পন্তের চোটে বিপাকে ভারত। গতকাল এই উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান বলের আঘাত পেয়ে মাঠে ছাড়েন। ৬৮তম ওভারে ব্যক্তিগত ৩৭ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হওয়া পন্ত মাঠে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েও দাঁড়াতে পারছিলেন না।
বাধ্য হয়ে গাড়িতে চড়ে তাঁকে মাঠ ছেড়ে যেতে হয়। ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, অন্তত ছয় সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হবে পন্তকে। এর অর্থ হলো, এই সিরিজে আর তাঁকে মাঠে দেখা যাবে না। ইএসপিএনক্রিকইনফোও জানিয়েছে, পন্তকে চলতি সিরিজে আর না দেখার সম্ভাবনাই বেশি।
ক্রিস ওকসের (৬৮তম ওভারে) চতুর্থ বলে রিভার্স সুইপ করতে চেয়েছিলেন পন্ত। বল আঘাত হেনেছে ডান পায়ে। পা থেকে রক্ত বের হতে দেখা যায়। মাঠের বাইরে যাওয়ার পর পন্তকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ইএসপিএনক্রিকইনফো আজ জানিয়েছে, চলতি ওল্ড ট্রাফোর্ডে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে খেলার বাকি অংশ এবং ওভালে শেষ টেস্টে পন্তকে ভারতের না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
আরও পড়ুনবিসিবির আমন্ত্রণে মাহমুদউল্লাহর ‘না’৮ ঘণ্টা আগেইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আজ জানিয়েছে, আঙুলে ফাটল ধরায় পন্তকে ছয় সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিসিসিআইয়ের এক সূত্র এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, ‘স্ক্যান প্রতিবেদনে চিড় ধরা পড়েছে এবং ছয় সপ্তাহের জন্য বাইরে থাকতে হবে। ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে তিনি আবারও ব্যাটিংয়ে নামতে পারেন কি না, সেই চেষ্টা করছে মেডিকেল টিম। হাঁটতে তার এখনো সাহায্যের প্রয়োজন এবং ব্যাটিংয়ে নামার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আরও জানিয়েছে, সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টে পন্তের জায়গায় ইশান কিষানকে স্কোয়াডে সংযুক্ত করবে ভারতের টিম ম্যানেজমেন্ট। ওভালে ৩১ জুলাই থেকে শুরু হবে পঞ্চম ও শেষ টেস্ট।
গতকাল দিনের খেলা শেষে পন্তের চোট নিয়ে স্কাই স্পোর্টসে কথা বলেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যকার মাইকেল আথারটন, ‘যদি পন্ত ম্যাচ থেকে ছিটকে যান, যদি সিরিজ থেকেই বাদ পড়েন, তাহলে এটা হবে ভারতের জন্য বিশাল ধাক্কা। তাহলে দিনের খেলার চিত্রটাই পাল্টে যাবে। তখন (প্রথম দিন শেষে ভারতের স্কোর) ২৬৪/৪ হয়ে যাবে ২৬৪/৫, আর নতুন বল নিয়ে ইংল্যান্ড আগামীকাল (আজ) সকালে দ্রুত (ভারতকে) গুটিয়ে ফেলতে পারে। তবে যদি সে আবার ব্যাট করতে নামতে পারে, ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে। এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে। যদিও চোটটা দেখতে বেশ গুরুতরই লেগেছে; কারণ, চোট পেলে সাধারণ গলফ কার্টে করে কেউ মাঠ ছাড়ে না।’
পন্তের সহ্যশক্তি খুবই বেশি, আর যখন ও এভাবে ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছে, তখন বিষয়টা নিঃসন্দেহে গুরুতর। এমন চোট রাতারাতি আরও খারাপ হতে পারে।ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রীভারতের সাবেক অলরাউন্ডার, কোচ ও ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রী বলেছেন, ‘ওর মুখের অভিব্যক্তিই অনেক কিছু বলে দিচ্ছিল। ব্যথায় কুঁকড়ে যাচ্ছিল। পন্তের সহ্যশক্তি খুবই বেশি, আর যখন ও এভাবে ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছে, তখন বিষয়টা নিঃসন্দেহে গুরুতর। এমন চোট রাতারাতি আরও খারাপ হতে পারে। সকালে উঠে ব্যথা অনেক বেড়ে যেতে পারে, যতই বরফ দেওয়া হোক না কেন! রাতভর ও বরফ দেবে, কিন্তু আশা করছি যেন হাড় না ভাঙে বা চিড় না ধরে।’
আরও পড়ুনমৃত্যুবরণে সাহায্য করতে বলেছিলেন গ্রাহাম থর্প, বললেন তাঁর স্ত্রী২ ঘণ্টা আগেঅস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের কাছেও মনে হয়েছে পন্ত বড় চোটেই পড়েছেন। স্কাই স্পোর্টসকে বলেছেন, ‘ও তো পা মাটিতেই রাখতে পারছিল না। যেভাবে সঙ্গে সঙ্গে পা ফুলে উঠেছিল, সেটাই আমাকে সবচেয়ে চিন্তায় ফেলেছে। আমি নিজেও একবার ‘মেটাটারসাল’ হাড়ে চোট পেয়েছিলাম—এই হাড়গুলো খুব ছোট আর ভঙ্গুর। পন্ত যেহেতু ওটার ওপর কোনো ভরই দিতে পারছিল না, ব্যাপারটা মোটেও ভালো মনে হচ্ছে না। যদি ভেঙে যায়, তাহলে ওর সিরিজ শেষ। তবে যদি না ভাঙে, তাহলে ওকে ফিরিয়ে আনতে যা যা করা দরকার, সব করবে টিম ম্যানেজমেন্ট। আশা করি, এরপর আর রিভার্স সুইপ খেলবে না!’
যেভাবে মাঠ ছাড়েন পন্ত.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।
এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”
তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।
এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস