বার্মিংহ্যামের মাটিতে শনিবার অনুষ্ঠিত ফাইনাল যেন পরিণত হয়েছিল এবি ডি ভিলিয়ার্সের একক প্রদর্শনীতে। সাবেক এই প্রোটিয়া অধিনায়ক তার পরিচিত ‘মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি’ রূপে ফিরেই ভেঙে দিলেন পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্সের শিরোপার স্বপ্ন। দুরন্ত এক সেঞ্চুরির ইনিংসে ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন্স ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নেয় ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লিজেন্ডস (ডব্লিউসিএল) টুর্নামেন্টে।

ফাইনালে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স। শুরু থেকেই ব্যাটাররা ধরে রাখেন আক্রমণাত্মক মেজাজ। ইনিংসের মূল ভরসা হয়ে ওঠেন শারজিল খান, যিনি মাত্র ৪৪ বলে ঝড়ো ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন। মারেন ৯টি চারের সঙ্গে ৪টি বিশাল ছক্কা। এছাড়া উমর আমিন (৩৬), আসিফ আলী (২৮), শোয়েব মালিক (২০) ও মোহাম্মদ হাফিজ (১৭) ছোট ছোট অবদান রাখেন।

২০ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১৯৫। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে হারদুস ভিলজোয়েন ও ওয়েন পারনেল দুটি করে উইকেট নেন। আর একটি উইকেট নেন দুয়ান্নে অলিভার।

আরো পড়ুন:

শেষ বলে জিতে সিরিজে সমতা ফেরালো ওয়েস্ট ইন্ডিজ

১২৩ বছরের রেকর্ড ভেঙে জিততে পারবে কি ইংল্যান্ড?

১৯৬ রানের বড় লক্ষ্য সামনে রেখেও একটুও চাপে পড়েনি দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন্স। পাওয়ার প্লের মধ্যেই তারা তোলে ৭২ রান। হাশিম আমলা ১৪ বলে ১৮ রান করে ফিরলেও রানরেট ততক্ষণে নিয়ন্ত্রণে।

এরপর মাঠজুড়ে একচ্ছত্র দাপট ছিল ডি ভিলিয়ার্সের। ব্যাট হাতে যেন সময়কে পিছনে ফেলে আবারও ফিরলেন তার প্রাইম ফর্মে। ধৈর্য ও আগ্রাসনের নিখুঁত মিশ্রণে মাত্র ৬০ বলে খেলেন দৃষ্টিনন্দন ১২০ রানের অপরাজিত ইনিংস। তার ব্যাট থেকে আসে ১২টি চার ও ৭টি ছক্কা।

সঙ্গী জেপি ডুমিনি ছিলেন তার মতোই কার্যকর। ২৮ বলে ৫০ রান করে অপরাজিত থেকে দলকে লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। ১৬.

৫ ওভারেই ম্যাচ শেষ করে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা, ২৩ বল হাতে রেখেই।

এই ইনিংসের মাধ্যমে টুর্নামেন্টে এটি ছিল ডি ভিলিয়ার্সের তৃতীয় শতক। পুরো আসরে তিনি করেছেন সর্বোচ্চ ৪২৯ রান। ফলে ম্যাচ সেরার পাশাপাশি হয়েছেন টুর্নামেন্টেরও সেরা খেলোয়াড়।

যদিও এই টুর্নামেন্ট সাবেক খেলোয়াড়দের নিয়ে, তবু দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে কোনো বৈশ্বিক শিরোপা জেতার যা অপূর্ণতা ছিল ডি ভিলিয়ার্সের ক্যারিয়ারে, তা অনেকটাই মিটিয়ে দিলেন এই লিজেন্ডস লিগে। তার ব্যাটিং দেখে যেন মনে হলো— সময় থেমে গেছে। আর মাঠে আবারও ফিরেছে সেই পুরনো মহাতারকার রূপ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স: ১৯৫/৫ (শারজিল ৭৬, উমর আমিন ৩৬)
দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন্স: ১৯৬/১ (ডি ভিলিয়ার্স ১২০*, ডুমিনি ৫০*)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন্স ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা: এবি ডি ভিলিয়ার্স
টুর্নামেন্ট সেরা: এবি ডি ভিলিয়ার্স (৪২৯ রান)।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুতত সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়। যদিও এর আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথায় জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

প্রেস উইং জানায়, জাতীয় ঐক্যমত কমিশন থেকে প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য এবং বহু বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।  

এতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে লক্ষ্য করা হয় যে, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া, গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর  মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে সে জন্য সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণভোটের সময় কখন হবে, গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে, জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্নমতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে ঐক্যমত কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরী ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভা অভিমত ব্যক্ত করে।

এসব ক্ষেত্রে ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে ( সম্ভব  হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে) সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। বলেও উল্লেখ করা হয়। পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যেকোনো সুযোগ নাই সেটাও সবার বিবেচনায় রাখার জন্য বলা হয়।

সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা না পেলে কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে এই বিষয়েও আমাদের একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে—এ প্রত্যাশা করছি। ওনারা যদি আলাপ-আলোচনা করেন, আমাদের জন্য কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়। ওনারা যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।” 

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ