২৩ বছরেও মেরামত হয়নি সেতু, বাঁশের সাঁকোয় পারাপার
Published: 8th, September 2025 GMT
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার কুস্তা এলাকায় ইছামতি নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে অচল পড়ে আছে। ২০০২ সালে প্রায় ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ হয়। এরপর নদীভাঙন ও বন্যায় সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর পশ্চিম পাশের একটি বড় অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আর পূর্ব পাশের দুটি পাটাতন ধসে অচল হয়ে পড়েছে।
আরো পড়ুন:
বান্দরবানে ভাঙা সেতুতে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো
অবশেষে গ্রামবাসীর টাকা-শ্রমেই তৈরি হচ্ছে সেতু
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ দিনেও সেতুর কোনো ধরনের সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ হয়নি। ফলে গ্রামবাসী নিজেরাই ভাঙা সেতুর উপরে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে কোনোরকমে চলাচলের ব্যবস্থা করেছেন।
এই বাঁশের সাঁকোয় প্রতিদিন কুস্তা, ঠাকুরকান্দি, ভররা, বিনোদপুর, খলসী, কুমুরিয়া, বনগাঁও, নারচি ও জিয়নপুর ইউনিয়নের অন্তত ১২-১৪ গ্রামের হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। শিশু থেকে বয়স্ক, এমনকি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও বাধ্য হচ্ছেন প্রতিদিন এই বিপজ্জনক পথ ব্যবহার করতে।
কুস্তা গ্রামের বাসিন্দা প্রকাশ দাশ বলেন, “আমরা অনেকবার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু, আজ পর্যন্ত কাজটি হয়নি। কয়েক বছর আগে গ্রামের মানুষ নিজেরা টাকা তুলে বাঁশের সাঁকো বানিয়েছিল। এখন সেটিও ভেঙে নাজুক হয়ে গেছে। প্রতিদিন জানমালের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের পারাপার করতে হচ্ছে।”
একই গ্রামের নিতিশ দাশ বলেন, “বন্যার সময় দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়। তখন নদীর স্রোত এতটাই তীব্র থাকে যে সাঁকোর উপর দিয়ে হাঁটতে ভয় লাগে। অনেক সময় স্কুলের বাচ্চারা পানিতে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার উপক্রম হয়।”
ঘিওর হাটের ব্যবসায়ী শফিক দেওয়ান জানান, শুধু সাধারণ যাত্রী নয়, ব্যবসায়ীরা পড়েছেন সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে। কারণ পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য কোনো যানবাহন চলাচল করতে না পারায় খরচ বেড়ে যায়।
হিমেল সুলতান বলেন, ‘‘এই অঞ্চলের হাজারো মানুষের জীবন-জীবিকা ও শিক্ষা-চিকিৎসার সঙ্গে সেতুটি সরাসরি সম্পৃক্ত। তাই দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। এ সেতু নির্মাণে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করি।’’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘‘সেতুটি পরিদর্শন করেছি। এটি এখনই ভেঙে নতুন করে নির্মাণের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
ঢাকা/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।
আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগেএ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।
সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।
এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।
আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে