নদীর ব্যাপারে ভারত অবিশ্বস্ত বন্ধু: নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান
Published: 11th, January 2025 GMT
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, ‘নদীর ব্যাপারে ভারত অবিশ্বস্ত বন্ধু। ভারতকে নদীর ব্যাপারে বিশ্বাস করা যায় না। তাই বাংলাদেশের পানির ব্যাপারে সেল্ফ-সাফিশিয়েন (স্বয়ংসম্পূর্ণ) হতে হবে। বর্ষাকালে পানি ধরে রাখতে হবে। ভারতের ওপর ভরসা করে থাকা যাবে না।’
আজ শনিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীর পূর্বপাড় কাশিনগর এলাকায় আয়োজিত নদী সম্মিলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষাবিষয়ক সামাজিক সংগঠন ‘তরী বাংলাদেশ’ এ নদী সম্মিলনের আয়োজন করে।
মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্রের পানি ভারত তার পশ্চিমাঞ্চলে ট্রান্সফার করতে চায়, যেটি বাংলাদেশের জন্য সমূহ বিপদের। ভারত থেকে যেসব নদীর শাখা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, সেগুলোর মধ্যে ব্যাপক পরিমাণ পানি বঙ্গোপসাগরে জমে। বর্ষাকালে ১ লাখ ৪০ হাজার কিউবিক মিটার পানি এসব নদী দিয়ে বহমান হয়। তবে সেসব নদী থেকে গ্রীষ্মকালে ৫ শতাংশ পানি বাংলাদেশে আসে। এগুলোকে ভারত জিও পলিটিক্যাল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে।’
নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক এই চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘গ্রীষ্মকালে ভারত পানি তো দেয়ই না, উল্টো গঙ্গার পানি তারা ব্যাপকভাবে নিয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতে নদীতে কমপক্ষে ৫০টি ড্যাম অথবা বাঁধ রয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের পানি যখন বেশি দরকার, তখন কম দেয়। যখন কম দরকার, তখন বেশি পানি দিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করে। সিলেট ও ফেনীর বন্যা সেগুলোর প্রমাণ। নদীর ব্যাপারে ভারত অবিশ্বস্ত বন্ধু। ভারতে নদীর ব্যাপারে বিশ্বাস করা যায় না। তাই বাংলাদেশের পানির ব্যাপারে সেল্ফ-সাফিশিয়েন্ট হতে হবে। বর্ষাকালে পানি ধরে রাখতে হবে। ভারতের ওপর ভরসা করে থাকা যাবে না।’
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে সম্মিলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সাংবাদিক আমিন আল রশীদ, বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনির হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ কিউ এম সোহেল রানা।
শামীম আহমেদ বলেন, নদী সম্মিলনে নদী বাঁচাতে নানা পরামর্শ ও উদ্যোগের কথা জানান বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ব্যক্তিরা। আসলে নদী তাঁদের প্রাকৃতিক সম্পদ; কিন্তু নানাভাবে নদীদূষণ থেকে শুরু করে দখল হয়ে যাচ্ছে। নদীকে দূষণ ও দখলমুক্ত রাখার জন্য তাঁদের আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে চান। এ জন্য নদীর পাশে নদী সম্মিলনের আয়োজন করেছেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিতর্কিত তিন নির্বাচনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ
বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারগণ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (১৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে আলোচনা শেষে এ নির্দেশ দেন তিনি। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
আরো পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল
ইউনূস-তারেক বৈঠক
রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন হতে পারে: যৌথ বিবৃতি
বৈঠকে কমিশন সদস্যগণ জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।
কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, “বেশকিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। খুব শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করে ফেলা সম্ভব হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমি আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।”
বৈঠকে লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তারা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তারা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে, মতামত দিয়েছে। যেখানেই গেছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?’ আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।”
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “সব রাজনৈতিক একমত হয়েছে যে, অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।”
ঢাকা/হাসান/মাসুদ