তিন দশক আগে জিমি কার্টার উত্তর কোরিয়া সফর করেছিলেন। তিনি সে দেশ সফরে যাওয়ার আগপর্যন্ত বিশ্ব একটি পারমাণবিক সংঘাতের কিনারে চলে গিয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট ১৯৯৪ সালে উত্তর কোরিয়ার তৎকালীন নেতা কিম ইল-সুংয়ের সঙ্গে আলোচনা করতে দেশটির রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে যান। তাঁর এই সফর ছিল নজিরবিহীন। কারণ, এর আগে কোনো সাবেক বা ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট উত্তর কোরিয়া সফরে যাননি।

তবে ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রেও এটি ছিল একটি অসাধারণ পদক্ষেপ। অনেকে বিশ্বাস করেন, এই পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে একটি সম্ভাব্য যুদ্ধ অল্পের জন্য এড়ানো সম্ভব হয়েছিল। এই যুদ্ধ বেধে গেলে লাখো মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল। জিমি কার্টারের এই পদক্ষেপ উত্তর কোরিয়া ও পশ্চিমাদের মধ্যে আরও শক্তিশালী সম্পর্কের সূচনা করেছিল।  

জিমি কার্টার কূটনৈতিক দাবার চাল না চাললে এসবের কিছুই ঘটত না। গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর এই রাজনীতিক ১০০ বছর বয়সে মারা যান।

উত্তর কোরিয়ার ইয়োনসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ জন ডেলুরি বিবিসিকে বলেন, ‘কিম ইল-সুং ও বিল ক্লিনটন সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছিল। আর এই সংকট নিরসনে ঝাঁপিয়ে পড়েন জিমি কার্টার। আলোচনার মাধ্যমে অচলাবস্থা সমাধানের পথ সফলভাবে খুঁজে বের করেন।’

১৯৯৪ সালের গোড়ার দিকে যখন মার্কিন কর্মকর্তারা উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধের জন্য আলোচনার চেষ্টা করছিলেন, তখন ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছিল।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সন্দেহ ছিল, চলমান আলাপ-আলোচনা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে থাকতে পারে।

ওই সময় হঠাৎ এক ঘোষণায় উত্তর কোরিয়া জানিয়েছিল, পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের জন্য তারা ইয়ংবিয়ন পারমাণবিক চুল্লি থেকে কয়েক হাজার জ্বালানি রড সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা একটি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে দেশটি। ওই চুক্তির শর্তানুযায়ী, এই ধরনের পদক্ষেপ নিতে হলে পারমাণবিক পর্যবেক্ষক হিসেবে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পর্যবেক্ষকদের উপস্থিত থাকতে হবে।

১৯৯৪ সালের জুনে উত্তর কোরিয়া সফরে গিয়ে দেশটির তৎকালীন নেতা কিম ইল–সুনের সঙ্গে বৈঠক করেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীতে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকে আশ্রয় দেওয়ায় তাঁতী দলের নেতা বহিষ্কার

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিনকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃত মোহাম্মদ সৈকত উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি ছিলেন। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক ইকবাল করিম সোহেল ও সদস্যসচিব মোরশেদ আলমের যৌথ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি মূল্যায়নে ব্যর্থ হওয়ায় হাতিয়া উপজেলা তাঁতী দলের দক্ষিণ কমিটিকে সতর্ক করা হয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামে সৈকতের বাড়ি থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে হাতিয়া থানা–পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ১০টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ সৈকত সম্পর্কে ফুফা–ভাগনে।

এ বিষয়ে মোহাম্মদ সৈকত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে অনেকগুলো পরিবার থাকে। আমি ব্যবসার কাজে দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকি। আলাউদ্দিন কখন বাড়িতে এসেছেন, তা আমার জানা নেই। আমাদের ঘর থেকে তাঁর শ্বশুরদের ঘর অনেক দূরে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে জড়ানো হয়েছে।’

নোয়াখালী জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম বলেন, আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকে আত্মগোপনে থাকার সুযোগ করে দেওয়ায় মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের তাঁতী দল কমিটিকেও সতর্ক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনহাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার৩১ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ