টটেনহ্যামের বিপক্ষে যেভাবে ফিরে এলো আর্সেনাল তাতে বলাই যায়- নর্থ লন্ডন ডার্বিতে কেউই ফেভারিট থাকে না। কে বলবে যে, গানাররা ঘরোয় কাপগুলোতে পরপর দুটি ম্যাচ ঘরের মাঠে হেরেছে এই ম্যাচের আগে!
এফএ কাপের তৃতীয় রাউন্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে বাদ পড়েছে। তারও আগে ক্যারাবাও কাপের সেমিফাইনালে ২-০ ব্যবধানে প্রথম লেগ হেরে অনেকটা বন্ধ করে ফেলেছে ফাইনালে খেলার দুয়ার। এমন ভঙ্গুর অবস্থাতেও লিগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী স্পার্সের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়ার পর ২-১ ব্যবধানের জিতে ম্যাচ শেষ করাটা বলে দিচ্ছে ‘লন্ডন ডার্বি’ মূলত একটা মহারণ।
ডার্বি জেতার আনন্দের আতিশয্যায় গানারদের মিডফিল্ডার ডেকলান রাইস তো বলেই বসেছেন যে, তাকে পোড়াচ্ছে ১০ গোল দিতে না পারার আক্ষেপ! এই জয়ের ফলে লিগে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে মিকেল আর্তেতার দল।
আরো পড়ুন:
ড্রয়ের পর লিভারপুল ম্যানেজার জানালেন, ‘এর বেশি চাওয়া যায় না’
জয়বঞ্চিত ক্লান্ত ম্যানসিটি
ঘরের মাঠে এমিরেটস স্টেডিয়ামে ম্যাচের ২৫ মিনিটে পিছিয়ে পড়েছিল আর্সেনাল। তবে সেই গোল শোধ করে প্রথমার্ধেই তারা এগিয়ে যায় ২-১ ব্যবধানে। আক্রমণের স্রোত বইয়ে দিলেও আর কোনো গোল হয়নি ম্যাচে। গোলের ব্যবধান বাড়াতে দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কিছু পরিবর্তন আনেন কোচ আর্তেতা। তাতে সুযোগও তৈরি হয়েছে বটে, তবে সোনার হরিণ গোল আসেনি।
ম্যাচ শেষে সেই ক্ষোভই উঠে এলো রাইসের কণ্ঠে, “আমাদের দুর্ভাগ্য যে ১০টি গোল করতে পারিনি। এরকমই মনে হচ্ছে। প্রথম মিনিট থেকে প্রথম ৪৫ মিনিট ছিল পুরোপুরি দাপটের। আপনি একেই ডার্বি বলতে পারেন।”
আর্সেনাল এই জয় পাওয়ার আগে ৩ ম্যাচ ছিল জয়হীন। তবে স্পার্সের বিপক্ষে এই জয়ে তারা উঠে গেল লিগ টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে। যদিও শীর্ষে থাকা লিভারপুল এখনো অনেকটা এগিয়ে। ২০ ম্যাচে ৪৭ পয়েন্ট তাদের। অন্যদিকে এক ম্যাচ বেশি খেলে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আর্সেনাল।
লিভারপুলের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে থালেও তাদের একটা মৃদু হুমকি দিয়ে রাখলেন আর্সেনাল ম্যানেজার আর্তেতা। জানিয়ে রাখলেন আর্সেনাল এখন শিরোপার দাবিদার।
“হ্যাঁ, অবশ্যই। যদিও এখনো অনেক কিছু বাকি। আমরা তো জানিই প্রতিটি দলের জন্য কতটা কঠিন কাজ বাকি,” ম্যাচ শেষে জানান আর্তেতা।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল আর স ন ল ব যবধ ন আর ত ত প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক