মির্জা ফখরুলের দাবি আরেকটা ১/১১ এর ইঙ্গিত: নাহিদ ইসলাম
Published: 23rd, January 2025 GMT
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আরেকটা এক-এগারো সরকার গঠনের ইঙ্গিত বহন করে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে বিবিসি বাংলার এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, যদি সরকার পূর্ণ নিরপেক্ষতা পালন করে, তাহলেই তারা নির্বাচন কনডাক্ট করা পর্যন্ত থাকবেন। তা না হলে তো নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে।
বিএনপি মহাসচিবের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে পাল্টা মন্তব্য করলেন জুলাই আন্দোলনের এক দফা ঘোষণাকারী ছাত্রনেতা ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ ইসলাম লিখেন, ‘বিএনপি মহাসচিবের নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মূলত আরেকটা ১/১১ সরকার গঠনের ইঙ্গিত বহন করে। ১/১১ এর বন্দোবস্ত থেকেই আওয়ামী ফ্যাসিজমের উত্থান ঘটেছিল। বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যে সামনে আরেকটা ১/১১ সরকার, সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ধারাবাহিকতা এবং গুম-খুন ও জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ার আলামত রয়েছে।
ছাত্র এবং অভ্যুত্থানের নেতৃত্বকে মাইনাস করার পরিকল্পনা ৫ই অগাস্ট থেকেই শুরু হয়েছে। ৫ই অগাস্ট যখন ছাত্র-জনতা রাজপথে লড়াই করছে, পুলিশের গুলি অব্যাহত রয়েছে, তখন আমাদের আপোসকামী অনেক জাতীয় নেতৃবৃন্দ ক্যান্টনমেন্টে জনগণকে বাদ দিয়ে নতুন সরকার করার পরিকল্পনায় ব্যস্ত ছিলেন (অনেকে ছাত্রদের কথাও বলেছেন সেখানে)।
আমরা ৩ই অগাস্ট থেকে বলে আসছি, আমরা কোনো প্রকারের সেনাশাসন বা জরুরি অবস্থা মেনে নিবো না। আমাদেরকে বারবার ক্যান্টেন্টমেন্টে যেতে বলা হলেও আমরা যেতে অস্বীকার করি। শেষ পর্যন্ত বঙ্গভবনে আলোচনা ও বার্গেনিং এর মাধ্যমে ড.
আমরা চেয়েছিলাম ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ও নাগরিক সমাজের সমন্বয়ে একটা জাতীয় সরকার। জাতীয় সরকার হলে ছাত্রদের হয়তো সরকারে আসার প্রয়োজন হতো না। জাতীয় সরকার অনেকদিন স্থায়ী হবে এই বিবেচনায় বিএনপি জাতীয় সরকারে রাজি হয় নাই।
কিন্তু অভ্যুত্থানের পরেই দেশে জাতীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি ছিল। অথচ বিএনপি জাতীয় সরকারের কথা বলতেছে সামনের নির্বাচনের পরে।
ছাত্ররাই এই সরকারের এবং বিদ্যমান বাস্তবতার একমাত্র ফ্যাক্টর, যেটা ১/১১ এর সরকার থেকে বর্তমান সরকারকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা করে। বিএনপি কয়েকদিন আগে মাইনাস টু এর আলোচনা করলেও এখন ক্ষমতায় যাওয়ার পথ সুগম করার জন্য নিরপেক্ষ সরকারের নামে আরেকটি ১/১১ সরকারের প্রস্তাবনা করছে।
এ ধরনের পরিকল্পনা গণতন্ত্র ও জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে এবং ছাত্র-জনতা কোনোভাবেই এটা মেনে নিবে না। এবং আমি মনে করি এটা বিএনপির বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র।
আর এই সরকার জাতীয় সরকার না হলেও সরকারে আন্দোলনের সব পক্ষেরই অংশীদারিত্ব রয়েছে এবং সব পক্ষই নানান সুবিধা ভোগ করছে। সরকার গঠনের আগেই ৬ই অগাস্ট অ্যাটর্নি জেনারেল ও পুলিশের আগের আইজির নিয়োগ হয়েছিল যারা মূলত বিএনপির লোক। এরকমভাবে সরকারের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত নানান স্তরে বিএনপিপন্থী লোকজন রয়েছে। নির্বাচনের নিরপেক্ষতার কথা বললে এই বাস্তবতাও মাথায় রাখতে হবে।
রাষ্ট্রপতির পরিবর্তন, সংস্কার, নতুন সংবিধান, জুলাই ঘোষণা সব ইস্যুতেই বিএনপি বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। অথচ এগুলা কোনোটাই ছাত্রদের দলীয় কোনো দাবি ছিল না। কিন্তু দেশের স্থিতিশীলতা, বৃহত্তর স্বার্থ এবং জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার জন্য ছাত্ররা বারবার তাদের অবস্থান থেকে সরে এসেছে।
কিন্তু এর মানে এই না যে গণতন্ত্রবিরোধী ও অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাবিরোধী কোনো পরিকল্পনা হলে সেখানে আমরা বিন্দু পরিমাণ ছাড় দিবো।
আওয়ামী লীগ বিষয়ে ভারতের প্রধান দলগুলোর মধ্যে ঐক্য সম্ভব হয়েছে। অথচ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ বিষয়ে আমরা ঐক্য করতে পারি নাই এত হত্যা ও অপরাধের পরেও। হায় এই ‘জাতীয় ঐক্য’ লইয়া আমরা কি রাষ্ট্র বানাবো!
বাংলাদেশকে দুর্বল করা সহজ। কারণ, বাংলাদেশকে সহজেই বিভাজিত করা যায়। এ দেশের বড় বড় লোকেরা অল্পমূল্যে বিক্রি হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে।
আমি মনে করি না সমগ্র বিএনপি এই অবস্থান গ্রহণ করে। বরং বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের বড় অংশই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন চায়। বিএনপির দেশপ্রেমিক ও ত্যাগী নেতৃত্বকে আহ্বান করবো, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে না গিয়ে ছাত্র-জনতার সাথে বৃহত্তর ঐক্য ও সংহতির পথ বেছে নিন।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ম র জ ফখর ল ন হ দ ইসল ম সরক র গঠন র জ ত য় সরক র ন হ দ ইসল ম ছ ত র জনত ব এনপ র অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
চেন্নাইয়ের বিদায়, অবসরের ইঙ্গিত দিলেন ধোনি!
আইপিএল ২০২৫-এর প্লে-অফে জায়গা হলো না চেন্নাই সুপার কিংসের। ঘরের মাঠ এম চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে পাঞ্জাব কিংসের কাছে ৪ উইকেটে হেরে এবারের আসর থেকে ছিটকে গেছে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর শুধু চেন্নাইয়ের বিদায়ই নয়, আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন ‘ক্যাপ্টেন কুল’ ধোনি। শুরু হয়েছে জোর গুঞ্জন—এটাই কি তার শেষ আইপিএল?
ম্যাচ শুরুর আগেই টসের সময় ধোনিকে ঘিরে তৈরি হয় রহস্য। ধারাভাষ্যকার ড্যানি মরিসনের সরাসরি প্রশ্ন ছিল, ধোনি কি আগামী মৌসুমেও আইপিএলে দেখা যাবে? জবাবে হেসে ধোনি বলেন, ‘আমি তো জানি না পরের ম্যাচেই খেলব কি না।’ এই মন্তব্যেই ধোনির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। যদিও ম্যাচ শেষে নিজের ক্রিকেট ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি ধোনি। তাকেও সে ব্যাপারে আর প্রশ্ন করেননি সঞ্চালক।
ধোনির মন্তব্যে সাবেক অস্ট্রেলিয়ান উইকেটকিপার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট বলেন, ‘ধোনি একজন চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি। তার আর কিছু প্রমাণের নেই। সম্ভবত এবার সরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। যদিও ভক্তদের জন্য তা কষ্টদায়ক হবে।’
চেন্নাই প্রথমে ব্যাট করে ১৯১ রান তোলে। স্যাম কারানের ৮৮ রানের ইনিংস ছাড়া ব্যাট হাতে কেউই তেমন জ্বলে উঠতে পারেননি। শেষ দিকে যুজবেন্দ্র চাহালের হ্যাটট্রিকে মাত্র ৪ বল বাকি থাকতে গুটিয়ে যায় ইনিংস। চাহাল ৪ উইকেট নেন, জানসেন ও আর্শদীপ নেন ২টি করে।
জবাবে পাঞ্জাবের হয়ে ঝড়ো সূচনা এনে দেন প্রিয়াংশ আর্য ও প্রভসিমরান সিং। প্রভসিমরান খেলেন ৩৬ বলে ৫৪ রানের দারুণ ইনিংস। এরপর শ্রেয়াস আইয়ারের ৭২ রানের অনবদ্য ইনিংস এবং শশাঙ্ক সিংয়ের শেষের ২৩ রানের ক্যামিওতে দুই বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয় পাঞ্জাব। এই জয়ে তারা উঠে এসেছে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে।