রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুরের ঘটনায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা পুরো পরিস্থিতিকে সংকটাপন্ন করে তুলেছে বলে মনে করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট । তাদের ভাষ্য, দেশে কোনো সরকার থাকা অবস্থায় এ ধরনের ঘটনা মোটেই কাঙ্ক্ষিত নয়। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের জরুরি সভা শেষে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, পতিত স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ বিদেশে বসে এমন কিছু উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে, যা আন্দোলনকারী শক্তিসহ দেশের মানুষকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এসব ঘটনা সামনে রেখে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অংশ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িসহ নানা জায়গায় ভাঙচুর এবং এসব বিষয়ে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা পুরো পরিস্থিতিকে সংকটপূর্ণ করে তুলেছে। দেশে কোনো সরকার থাকা অবস্থায় এ ধরনের ঘটনা মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।

সারা দেশে জানমালের নিরাপত্তা বিধান, ভয়ের আবহাওয়া সৃষ্টির পুনরাবৃত্তি হতে না দিয়ে এবং সবার গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে দৃশ্যমান ভূমিকা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাম জোট। বিবৃতিতে জোটের নেতারা বলেন, সরকারের নিষ্ক্রিয়তা থাকলে পুরো ঘটনা আরও জটিল হয়ে পড়বে, যা গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকেই প্রশ্নবিদ্ধ এবং নানা শক্তিকে অপতৎপরতা চালানোর সুযোগ করে দেবে।

আরও পড়ুনভেঙে দেওয়া হচ্ছে ৩২ নম্বরের বাড়ি২১ ঘণ্টা আগে

বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দল, শক্তি এবং দেশের সচেতন মহলকে সব ধরনের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সজাগ থেকে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে। একই সঙ্গে তারা রাজনৈতিকভাবেই সব ধরনের ফ্যাসিবাদকে মোকাবিলা করারও আহ্বান জানায়।

বাম জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদের সভাপতিত্বে আজকের সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মাদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু এবং সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।

আরও পড়ুনশেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যে ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ৩২ নম্বরে ভাঙচুর৬ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র ন ষ ক র য ত গণত ন ত র ক য় সরক র র ঘটন ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ