ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ স্থবির হয়ে পড়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। বুধবার সংগঠনটির সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুহাম্মদ মাজাহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারকার্য স্থবির হয়ে পড়েছে। যে কারণে বিচারপ্রার্থী মানুষ অবর্ণনীয় হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন অত্যন্ত ধৈর্য ও সতর্কতার সঙ্গে এত দিন পুরো ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছে। পরিস্থিতি যে পর্যায়ে যাচ্ছে, তা সারা দেশের বিচারকদের মনে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ জন্ম দিয়েছে।

জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন আরও বলেছে, ঘটনার সূত্রপাত ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলার শুনানিকে কেন্দ্র করে। ঢাকা আইনজীবী সমিতির গুরুত্বপূর্ণ পদধারী কয়েকজন আইনজীবী ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষের জামিন শুনানি করেন, যা বিচারক গুণাগুণের ভিত্তিতে শুনানি নিয়ে নামঞ্জুর করেন। আদালতের আইনানুগ আদেশকে কেন্দ্র করে আইনজীবী সমিতির কতিপয় আইনজীবীর ইন্ধন ও প্রত্যক্ষ মদদে কিছু আইনজীবী বিগত কয়েক দিনে যে আচরণ প্রদর্শন করেছেন, যা স্পষ্টত অসদাচরণ, বিচারকাজে বাধা সৃষ্টি, বিচারকের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ—এগুলো বিচারকের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি আরও বলেছে, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন শুরু থেকে ঘটনার শান্তিপূর্ণ ও স্থানীয়ভাবে সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। সব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। এ নিয়ে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ, ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ঢাকা আইনজীবী সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টির সুরাহার চেষ্টা করছেন। এত সব প্রচেষ্টাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতি বিচারকের অপসারণের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল বর্জনের ডাক দিয়েছে। আদালতে বিচারক নিয়মিত বসবেন, এটা স্বাভাবিক, আইনজীবীরা আদালত বর্জন করতেই পারেন। কিন্তু বিচারককে আদালত থেকে নেমে যাওয়ার জন্য চাপ বা ভয়ভীতি দেখানোর কোনো সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো.

নূরে আলমকে প্রত্যাহারের দাবিতে এই ট্রাইব্যুনাল বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা আইনজীবী সমিতি। ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নূরে আলমের বিরুদ্ধে সাধারণ আইনজীবীদের অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ আইনজীবীদের সঙ্গে বিচারকসুলভ আচরণ করছেন না। জামিন আবেদন নাকচের বিষয় নিয়ে সাধারণ আইনজীবীরা কোনোভাবে সংক্ষুব্ধ নন। কারণ, জামিনের বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার। মূলত বিচারকসুলভ আচরণ না করার কারণে সাধারণ আইনজীবীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা আইনজীবী সমিতি সাইবার ট্রাইব্যুনাল বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মূলধারার শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা সম্পৃক্ত করা দরকার: শিক্ষা উপদেষ্টা

শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার বলেছেন, মূলধারার শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা সম্পৃক্ত করা দরকার। কারণ, কারিগরির শিক্ষাকে অবমূল্যায়ন করা হয়, এ শিক্ষা ব্যবস্থাকে বলা হচ্ছে মিস্ত্রি বানানোর কারখানা। এই ধরনের নেতিবাচক ধারণা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

সোমবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের অডিটরিয়ামে ‘কারিগরি শিক্ষার মানোন্নয়ন: বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সম্ভাবনা ও করণীয় শীর্ষক সেমিনারে’ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। 

উপদেষ্টা বলেন, কারিগরি শিক্ষা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত, এখানে কাঠামোগত সংস্কারের দরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ট্রেডভিত্তিক শিক্ষকের বড় ধরনের ঘাটতি রয়েছে। প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও নিউ টেকনোলজির অভাব রয়েছে। এসব দূর করার জন্য কারিগরি শিক্ষাকে আরো যুগোপযোগী করার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষালাভ করেও অনেকে বেকার রয়েছে, তাদের চাকরির ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না, তার বিকল্প হিসেবে কারিগরি শিক্ষায় জোর দিতে হবে। 

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা একটা ট্রমার মধ্য দিয়ে গেছে, সে কারণে আচরণে পার্থক্য থাকবে। সবার কাছ থেকে স্বাভাবিক আচরণ আশা করা যাবে না। এক্ষেত্রে তাদেরকে বুঝিয়ে আদর করে পাঠদানের কথা বলেন তিনি। 

তিনি আরো বলেন, আমরা একটা জটিল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। দাবি-দাওয়াগুলো সম্মানের সঙ্গে উপস্থাপন করতে হবে। একইসঙ্গে আলাপ-আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (সচিব) নাসরিন আফরোজ ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শোয়াইব আহমদ খান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অফিসে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করার অভিযোগ
  • মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যার বিচার দাবি ১০৪ নাগরিকের
  • ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে তিতুমীরে মানববন্ধন
  • রাজধানীতে পরপর তিন দিনে তিন জনসমাবেশ
  • সন্তানের বন্ধু হতে চাইলে
  • প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চেয়ে ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের চিঠি
  • সবুজ এলাকায় পুলিশের প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার কম হয়
  • ছাত্রদলের দেওয়া বিবৃতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি: ডুজা
  • গোবিপ্রবিতে কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলাবিষয়ক কর্মশালা শুরু
  • মূলধারার শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা সম্পৃক্ত করা দরকার: শিক্ষা উপদেষ্টা