Samakal:
2025-11-03@11:29:46 GMT

সরকারের প্রভাবমুক্ত থাকুক দুদক

Published: 22nd, February 2025 GMT

সরকারের প্রভাবমুক্ত থাকুক দুদক

সমকাল: ২০২৪ সালে চট্টগ্রামে দুদকের দায়ের করা দুর্নীতি মামলার ৭৩ শতাংশ আসামিই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। যাদের অধিকাংশই বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন।

ড. মু. সিকান্দার খান: সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির জন্য আমরা সাধারণ জনগণও অনেক ক্ষেত্রে দায়ী। কারণ, আমাদের সমাজের অনেক মানুষ আছেন যারা ঘুষ দিয়ে অন্যায়ভাবে বিশেষ সুবিধা আদায় করে নেন। এ কাজ করতে গিয়ে ডকুমেন্ট জালিয়াতি, প্রতারণা ও মিথ্যার আশ্রয় নিতে থাকেন। দিনদিন এ প্রবণতা বেড়েই চলছে। সমাজে আগে যারা দুর্নীতি করতেন না তারাও এসব দেখে এতে জড়িয়ে পড়ছেন। যেমন– ভুমি ও ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিসগুলোতে ঘুষ দিতে হবে, এটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। না হলে আপনার সব ডকুমেন্ট সঠিক হলেও বছরের পর বছর ঘুরতে হবে। এখানে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই হয় না। সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষ উভয়ের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।  

সমকাল: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকাংশ স্ত্রীই বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছেন। স্ত্রীদের সম্পদশালী হওয়া নিয়ে কিছু বলুন। 

ড.

মু. সিকান্দার খান: সমাজ যখন পচে, তখন সর্বত্র এর ক্ষত দেখা যায়। স্বামীর ঘুষ ও দুর্নীতির অর্থে যেসব স্ত্রী সম্পদশালী হয়েছেন, তারা জেনেশুনেই হয়েছেন। সম্পদ গড়ার নেশা থেকে তারা সাইকো হয়েই এসব করেছেন। স্ত্রী ভালো হলে স্বামীর দুর্নীতির অংশীদার হতেন না, উল্টো স্বামীকে দুর্নীতির পথ থেকে ফেরাতেন। স্বামী-স্ত্রী উভয়ের কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। 

সমকাল: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষ ও দুর্নীতি ঠেকাতে দুদকের কাজ সম্পর্কে আপনি কতটা আশাবাদী। 

ড. মু. সিকান্দার খান: দুদকের কর্মকর্তারা আমাদের সমাজেরই একটি অংশ। তারা স্বাধীন হলেও স্বাধীনভাবে অনেক ক্ষেত্রে কাজ করতে পারেন না। কারণ সরকারের হাত অনেক লম্বা। সরকার যদি দুদকের কাজে হস্তক্ষেপ না করে তাহলে তাদেরর ভালো কাজ করার সুযোগ রয়েছে।   

সমকাল: সরকার পরিবর্তন হলে দুদকের কাজেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে কেমন দুদক হওয়া উচিত। 

ড. মু. সিকান্দার খান: নতুন পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আমাদের একটি সুযোগ এসেছে সমাজ পরিবর্তনের। সর্বক্ষেত্রে এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। দুর্নীতি করলে কোন না কোন সময় বিপদে পড়তে হবে- রাষ্ট্র ও সমাজে যদি এ বিষয়টি প্রতিষ্ঠা করা যায়, তাহলে শুধু সরকারি কর্মকর্তা নয়, সমাজের যে কেউ দুর্নীতি করতে সাহস করবেন না। তখন সমাজ ধীরে ধীরে দুর্নীতিমুক্ত হবে বলে মনে করি। এ জন্য দীর্ঘকাল ধরে একটি ভাল সরকারের ক্ষমতায় থাকা দরকার।’ 


 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমক ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে 

বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।

বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।

ঢাকা/নাজমুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ