১১ দফা দাবিতে চা শ্রমিকের স্মারকলিপি
Published: 9th, March 2025 GMT
টানা ১১ সপ্তাহ ধরে মজুরি ও রেশন পাচ্ছেন না সিলেট বুরজান চা বাগান, বুরজান চা কারখানা, দড়াগাং চা বাগান ও কালাগুল চা বাগানের শতাধিক শ্রমিক। বেতন ভাতা না পেয়ে চা শিল্প শ্রমকল্যাণ বিভাগের উপ-পরিচালক বরাবর ১১ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
রোববার দুপুরে এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়। স্মারকলিপিতে অবিলম্বে ১১ দফা দাবি মেনে তাদেরকে দূর্ভোগ থেকে মুক্তির দাবি জানানো হয়।
উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হল, ১১ সপ্তাহ ধরে বন্ধ থাকা মজুরী দেওয়া, বাগান সরদারদের মাসিক বেতন দেওয়া, চা শ্রমিকদের সাপ্তাহিক রেশন প্রদান, বাগানের মাসিক বেতন প্রাপ্ত শ্রমিকদের বেতন প্রদান, ৮ মাস ধরে চা শ্রমিকদের কর্তনকৃত পিএফ টাকা ফান্ড অফিসে জমা, শ্রমিকদের চিকিৎসা ও ওষুধ প্রদান, শ্রমিকদের নিয়মিত বসত বাড়ি নির্মাণ, টিন, কাঠ, দরজা, জানালা প্রদান, শ্রমিকদের এরিয়া বকেয়া টাকা ও বকেয়া বোনাসের টাকা প্রদান, আইন মোতাবেক খাবার পানি ও স্যানিটেশন প্রদান এবং চা বাগানের অবসরে থাকা শ্রমিকদের ফান্ডের টাকা দেওয়া।
স্মারকলিপিতে তারা জানান, বাগান কর্তৃপক্ষ চা বাগানের গাছ কেটে বিক্রয় করছে কিন্ত শ্রমিকদের দেনা পাওনা মজুরী, রেশন প্রদান করছে না। তারা জানান, চা বাগানের শ্রমিকরা যথাযথ মজুরী না পাওয়ায় তাদের সন্তানরা স্কুল কলেজে ভর্তি হতে পারছে না।
বাগান পঞ্চায়েত কমিটির নেতারা জানান, ১১ দফা দাবিতে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় বাগান বন্ধ হলে বা শ্রমিকরা কর্ম বিরতিতে গেলে ক্ষতির দায়ভার বাগান কর্তৃপক্ষ ও বাগান মালিককে বহন করতে হবে।
সিলেট ভ্যালির সাধারণ সম্পাদক দেবু বাউরির সভাপতিত্বে ও সোহাগ ছত্রী ও আতাউর রহমানা শামীমের পরিচালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন কালাগুল চা বাগানের সভাপতি রনজিত নায়েক, দড়াগাংচা বাগানের কমল চাষা, খাদিম চা বাগানের সমুজ আলী, জাফলংয়ের সজল চাষা, লাক্কাতুরার বিরেন সিং,হিলুয়াছাড়ার শিপন পাল, বুরজান চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি রতি লাল, প্রত্যাশা সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি সাইদুল ইসলাম সুহেল প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ম রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের চুক্তি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য বিপজ্জনক নজির
যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে ২০ কোটি ডলারের চুক্তির মধ্য দিয়ে কয়েক মাসের টানাপোড়েনের অবসান ঘটেছে। তবে শিক্ষাবিদদের আশঙ্কা, এটি উচ্চশিক্ষার ওপর সরকারের ‘আক্রমণের’ প্রথম দফা মাত্র।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে হওয়া এ চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনেক বিষয়ে সমঝোতা করতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর সরকারের নজরদারিও বেড়েছে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্য অনেক উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাবিদদের আশঙ্কা, এ চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি যেভাবে অনেক ছাড় দিয়েছে ও সরকারের নজরদারি বেড়েছে, তা ভবিষ্যতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপরও একইভাবে চাপ প্রয়োগের নীলনকশা হয়ে উঠতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুরু করা ‘যুদ্ধের’ প্রথম নিশানা হয় নিউইয়র্কের এই বিশ্ববিদ্যালয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুরু করা ‘যুদ্ধের’ প্রথম নিশানা হয় নিউইয়র্কের এ বিশ্ববিদ্যালয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলা করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।
এ অভিযোগের পর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় লাখ লাখ ডলারের ফেডারেল তহবিল হারায়। নতুন গবেষণা অনুদানের জন্য আবেদন করার সুযোগও বন্ধ হয়ে যায়। গবেষণাগারের জরুরি তহবিল স্থগিত হয়ে যায় এবং অনেক গবেষক চাকরি হারান।
তবে গত সপ্তাহে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারকে ২০ কোটি ডলার দেওয়ার (জরিমানা হিসেবে) ও ইহুদিবিদ্বেষ–সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে সরকারি তদন্ত মীমাংসার জন্য অতিরিক্ত ২ কোটি ১০ লাখ ডলার পরিশোধে রাজি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর এত বড় মাত্রায় সরকারি হস্তক্ষেপ আগে হয়নি। সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি।ব্রেনডন ক্যান্টওয়েল, মিশিগান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকআমেরিকান কাউন্সিল অন এডুকেশনের সভাপতি টেড মিচেল বলেন, আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরুর আগেই তহবিল কেটে নেওয়ায় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় একপ্রকার ‘টালমাটাল অবস্থায়’ পড়ে গেছে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ডেভিড পোজেন এতে একমত পোষণ করে বলেন, শুরু থেকেই চুক্তিটি যেভাবে সাজানো হয়েছে, তা বেআইনি ও জোরজবরদস্তিমূলক। তিনি চুক্তিটিকে ‘চাঁদাবাজির বৈধ রূপ’ উল্লেখ করে এর কঠোর সমালোচনা করেন।
এ চুক্তির আওতায় শুধু ইহুদিবিদ্বেষের সমাধানই নয়, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি, ভর্তির সময় জাতি-বর্ণের বিষয়গুলো খেয়াল রাখা ও ক্যাম্পাসে ছেলে–মেয়েদের আলাদা জায়গাসহ কিছু বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সমঝোতা করতে হয়েছে।
চুক্তির আওতায় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একজন স্বাধীন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিতে রাজি হয়েছে। তাঁর কাজ হলো চুক্তি কার্যকর করা, জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের তথ্য সরকারকে দেওয়া ও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে