গাজীপুরে বেক্সিমকো শিল্পপার্কের বন্ধ ঘোষণা করা ১৪টি কারখানার আরও ১১ হাজার ২৯৩ শ্রমিককে পাওনা বাবদ ৫১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। কোম্পানির পক্ষ থেকে পাওনা পরিশোধের তৃতীয় দিনে গতকাল মঙ্গলবার এ বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা হয়। এ নিয়ে গত তিন দিনে ২৭ হাজার ৬৮০ জন শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে।

বেক্সিমকোর মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান খালিদ শাহরিয়ার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সব শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

বেক্সিমকো শিল্পপার্কে গতকাল দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, নারী-পুরুষ শ্রমিকেরা দলে দলে কারখানায় প্রবেশ করে তাঁদের পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিচ্ছেন। এরপর হিসাব শাখায় গিয়ে তাঁদের বকেয়া পাওনার হিসাব করছেন। পরে সেই হিসাব অনুযায়ী টাকা তাঁদের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হচ্ছে। বকেয়া পাওনা পেয়ে অনেক শ্রমিক খুশি। আবার অনেকে অভিযোগ করেছেন, তাঁরা যে পাওনা পাওয়ার কথা, সে অনুযায়ী পাচ্ছেন না। বেক্সিমকোর বন্ধ এক কারখানার অপারেটর হাবিবুর রহমান বলেন, তিনি সোমবার ব্যাংক হিসাবে টাকা পেয়েছেন। তাঁর পাওয়ার কথা ছিল ৮২ হাজার টাকা; কিন্তু পেয়েছেন ৬৮ হাজার ৯০০ টাকা।

বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিল্পপার্কের বন্ধ ঘোষণা করা ১৪টি প্রতিষ্ঠানের মোট শ্রমিকসংখ্যা ৩১ হাজার ৬৭৯। আর কর্মচারীর সংখ্যা ১ হাজার ৫৬৫। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এসব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ৬ মার্চ বেক্সিমকোর বন্ধ ঘোষিত এসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধে ৫২৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেছে সরকার। ঋণ হিসেবে কোম্পানিটিকে এই অর্থ দিয়েছে সরকার। ওই দিন বেক্সিমকো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওসমান কায়সার চৌধুরীর কাছে ওই চেক হস্তান্তর করেন শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। ওই সময় জানানো হয়, ৯ মার্চ থেকে শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ শুরু হবে। সেই অনুযায়ী গত রোববার পাওনা পরিশোধের প্রথম দিনে ২৪৫ জন শ্রমিককে প্রায় ৮০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়।

কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানায়, শ্রমিকদের পাওনা বাবদ দেওয়া অর্থ নগদে পরিশোধ করা হয়নি। পাওনার পুরো অর্থ মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বা এমএফএস হিসাবে বা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বেক্সিমকো তার শ্রমিকদের সব বকেয়া পরিশোধ অব্যাহত রেখেছে। গতকাল ১১ হাজার ২৯৩ জন শ্রমিকের পাওনার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করা করেছে। সব মিলিয়ে গত তিন দিনে মোট ২৭ হাজার ৬৮০ জন শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে।

বেক্সিমকো গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গ্রেপ্তার হন সালমান এফ রহমান। ১৩ আগস্ট থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। ২৯ আগস্ট সালমান এফ রহমান, তাঁর ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, পুত্রবধূ শাজরেহ রহমানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এ ছাড়া খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকগুলো প্রতিষ্ঠানটির ঋণপত্র বা এলসি-সুবিধাও বন্ধ করে দেয়। এতে বিপাকে পড়ে বেক্সিমকো শিল্পপার্কের প্রতিষ্ঠানগুলো। কাঁচামালের সংকটে কারখানাগুলোর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর এসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এমন পটভূমিতে সরকারের পক্ষ থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সিদ্ধান্তে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া অর্থে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন ধ ঘ ষ ক র বন ধ রহম ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

টাকার জন্য দেশে ছেড়েছি, এখন টাকা খরচের সময় নেই: পিয়া বিপাশা

লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।

পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’

বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’

পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়।  আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’ 

পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।

২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রযোজক তার সঙ্গে রাত কাটাতে বলেন: অঞ্জনা
  • বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
  • শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
  • মিরাজ বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ
  • সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট, মিরাজ ধন্যবাদ দিলেন ৬ জনকে
  • পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার
  • ঢাকায় চালান পৌঁছে প্রতি মাসে পান ৬ লাখ টাকা
  • ১৭ মাস পর দেশের মাটিতে টেস্ট জয় বাংলাদেশের
  • নদীতে মিলল স্কুলছাত্রের লাশ, চার সহপাঠী আটক
  • টাকার জন্য দেশে ছেড়েছি, এখন টাকা খরচের সময় নেই: পিয়া বিপাশা