মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলাতে পারে, জানালেন উপদেষ্টা ফারুকী
Published: 23rd, March 2025 GMT
বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলাতে পারে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তবে নতুন নাম কী হবে- সে বিষয়ে আগামীকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি। একইসঙ্গে সব জাতিসত্তার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এবারের নববর্ষের শোভাযাত্রায় নতুন রঙ, গন্ধ ও সুর পাওয়া যাবে বলেও জানিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা।
আজ রোববার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে জাতীয়ভাবে বাংলা নববর্ষ এবং চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ উদযাপন নিয়ে এক সভা শেষে ফারুকী সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার চারুকলা থেকে যে শোভাযাত্রা বের হবে; সেখানে আপনারা সত্যিকার অর্থেই নতুন জিনিস দেখবেন। আপনাদের চোখেই পরিবর্তন দেখতে পাবেন অনেক। সেটা এখন আমরা বিস্তারিত না বলছি। সারপ্রাইজ হিসেবেই থাকলো। ইটস এ টিজার। যারা অংশগ্রহণ করবেন; তারা নিজেরাই নিজেদের চোখে দেখতে পারবেন পরিবর্তনগুলো কীভাবে ঘটছে।’
সব জাতিসত্তার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এবারের নববর্ষের শোভাযাত্রায় নতুন রঙ, গন্ধ ও সুর পাওয়া যাবে জানিয়ে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, এবারের শোভাযাত্রাটি আর বাঙালিদের শোভাযাত্রা না। এ শোভাযাত্রা বাঙালি, চাকমা, মারমা, গারো, প্রত্যেকের। এজন্য নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলাতে পারে। নতুন নাম কি হবে সেটা সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বৈঠকে নির্ধারণ করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, শোভাযাত্রাটি প্রথমে আনন্দ শোভাযাত্রা নামে শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। যে নাম একবার পরিবর্তিত হয়েছে, সবাই যদি সর্বসম্মত হয়; তবে আবার পরিবর্তন হতে পারে। আবার যদি সবাই সর্বসম্মত হয়, তবে পরিবর্তন নাও হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয়ভাবে এটাকে (শোভাযাত্রা) কী নামে ডাকা হবে, যে নামে সবাইকে একটা ছাতার মধ্যে আনা যায়। সেটার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, আগামীকালের সভায় সেই সিদ্ধান্ত হবে।’
ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে স্বীকৃতি দিয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ইউনেস্কো এই শোভাযাত্রাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ইউনেস্কো আগামীবার জানবে এ শোভাযাত্রা আরও বড় হয়েছে, আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়েছে। ইউনেস্কোর এটাতে খুশি হওয়ার কারণ হবে, আপত্তি করার কোনো কারণ নেই। আমরা বরং এতদিন অনেকগুলো জাতি-গোষ্ঠীকে মাইনাস করে এসেছিলাম। আমরা এটাকে সংশোধন করছি।’
অনুষ্ঠানটি পুনর্বিবেচিত হয়েছে, তাই এর নামটিও পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
নববর্ষ ও চৈত্র সংক্রান্তির বিভিন্ন অনুষ্ঠানের তথ্য তুলে ধরে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমিতে একটা রক কনসার্ট হচ্ছে। যেখানে চাকমা, গারো, মারমা ও বাংলা ব্যান্ড- সবাই মিলে পারফর্ম করবে। এছাড়া চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে বাউল ও ফকিররা গান গাইবেন। ওদের একটা উৎসব হবে সেখানে।’
ফারুকী বলেন, ‘এছাড়া ১৪ এপ্রিল সংসদ ভবনের সামনে একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ড্রোন শোর আয়োজন করা হবে। চীনের দূতাবাসের সহযোগিতায় ড্রোন শো হবে। সেখানে বিকেলবেলা গান শুনবেন, সন্ধ্যার পর দেখবেন সংসদ ভবনের ওপরে বাংলার আকাশের ড্রোন দিয়ে কিছু ইমেজ তৈরি করা হচ্ছে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এবার ধানমন্ডি ৮ নম্বরের রবীন্দ্র সরোবরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় সুরের ধারার গানের অনুষ্ঠান হবে। মেলার মতো আয়োজনও সেখানে করা হবে। অর্থাৎ, ঢাকার নানা জায়গায় উৎসব ছড়িয়ে যাবে।’
এবার নববর্ষের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ করার ক্ষেত্রে কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সূর্যাস্তের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে- এবার আমাদের নির্দেশনা এটা না। তবে কোন অনুষ্ঠান কখন শেষ হবে সেটা স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা ঠিক করে নেবে।’
এই উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার প্রত্যেক জেলা ও উপজেলার জন্য বরাদ্দ দ্বিগুণ করেছি। পাশাপাশি যে জেলাগুলোতে আমাদের ভিন্ন ভাষাভাষী ভাই-বোনেরা বসবাস করেন, সেই জেলাগুলোতে আমাদের বরাদ্দের পরিমাণ আরও বেশি হবে। সেটা কত হবে, কালকের মধ্যেই মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
সবাইকে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘সরকার অবশ্যই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। আমরা আশা করি, আগে যেভাবে সামনে- পিছনে র্যাব দিয়ে মিছিল করতে হতো, এবার সেভাবে করতে হবে না। এটা বাংলাদেশের মানুষের সবার উৎসব। সব রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক দল মনে করে, এটা তাদের উৎসব। তারা প্রত্যেকই অংশ নেবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স স ক ত ব ষয়ক উপদ ষ ট র নববর ষ নববর ষ র অন ষ ঠ ন ইউন স ক উপদ ষ ট আরও ব
এছাড়াও পড়ুন:
দুদিনের সফরে কলকাতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু দুদিনের সফরে বুধবার কলকাতায় পৌঁছেছেন। বিকেলে তিনি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ও রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু পরে নদীয়া জেলার কল্যাণীতে অবস্থিত অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসের (এইমস) প্রথম সমাবর্তন উৎসবে যোগ দেন। সেখানে তাঁকে সংবর্ধনা জানান এইমসের পরিচালক রামজি সিং। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি কৃতী শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ তুলে দেন।
সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রাষ্ট্রপতি যান দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরে। সেখানে কালীমন্দিরে পূজা অর্চনা করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর কন্যা ইতিশ্রী মুর্মু।
দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও রামকৃষ্ণদেবের বংশধর কৌশিক চক্রবর্তী রাষ্ট্রপতির হাতে মন্দিরে নিবেদিত পদ্মফুল ও প্রসাদ তুলে দেন। পরে রাষ্ট্রপতি রামকৃষ্ণদেবের বসতঘর পরিদর্শন করে রাজভবনের উদ্দেশে রওনা হন।
বৃহস্পতিবার সকালে রাষ্ট্রপতি ঝাড়খন্ড রাজ্যের দেওঘরে যাবেন। সেখানে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এইমস), দেওঘরের প্রথম সমাবর্তন উৎসবে যোগ দেবেন। এ প্রতিষ্ঠানেও এই প্রথমবার সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়েছে।