সিলেটে বকেয়া মজুরি, রেশন পরিশোধসহ ১১ দফা দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন চা–শ্রমিকেরা। আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ‘চা–শ্রমিক ও চা–বাগান রক্ষা কমিটির’ ব্যানারে এ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে বেলা দেড়টার দিকে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেন শতাধিক চা–শ্রমিক।

শ্রমিকেরা জানান, টানা ১৩ সপ্তাহ ধরে মজুরি ও রেশন পাচ্ছেন না জেলার বুরজান চা–বাগান, বুরজান চা কারখানা, ছড়াগাং চা–বাগান ও কালাগুল চা–বাগানের শতাধিক শ্রমিক। বেতন–ভাতার দাবিতে তাঁরা একাধিকবার বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

চা–শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে বন্ধ থাকা মজুরি, বাগান সরদারদের মাসিক বেতন, চা–শ্রমিকদের সাপ্তাহিক রেশন, বাগানের মাসিক বেতনপ্রাপ্ত শ্রমিকদের বেতন প্রদান ও চা–শ্রমিকদের কর্তনকৃত পিএফ টাকা ফান্ড অফিসে জমা, শ্রমিকদের চিকিৎসা ও ওষুধ প্রদান, শ্রমিকদের নিয়মিত বসতবাড়ি নির্মাণ, টিন, কাঠ, দরজা, জানালা প্রদান, শ্রমিকদের এরিয়া বকেয়া টাকা ও বকেয়া বোনাসের টাকা প্রদান, আইন মোতাবেক খাবার পানি ও স্যানিটেশন প্রদান এবং চা–বাগানের অবসরে থাকা শ্রমিকদের ফান্ডের টাকা প্রদান।

সিলেটের লাক্কাতুরা চা–বাগান থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পৌঁছায়। এ সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে চা–শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য দেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাশেম।

শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ‘চা–শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির’ সভাপতি রাজু গোয়ালা, সাধারণ সম্পাদক দেবু বাউরি, মালনীছড়া চা–বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি জিতেন সমর প্রমুখ। কর্মসূচিতে সিলেটের ২২টি বাগানের চা–শ্রমিক ও নেতারা অংশ নেন।

বক্তারা জানান, চা–শ্রমিকেরা মজুরি না পেয়ে মানবেতর জীবন পার করছেন। পাশাপাশি রেশন বন্ধ থাকায় অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। শ্রমিক পরিবারের সদস্য শিশুরাও পড়াশোনা দূরের কথা, তিন বেলা খাবার নিয়ে কষ্ট করছে। এমন অবস্থায় চা–শ্রমিকেরা একযোগে কর্মবিরতিতে গেলে এর দায় বাগান কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। শ্রমিকদের মজুরি প্রদান করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি সুরাহা করার আহ্বান জানান তাঁরা।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সায়েমের অলরাউন্ড পারফরম‌্যান্সে পাকিস্তানের জয়ে শুরু

জয়ের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকায় শেষ টি-টোয়েন্টি জয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম‌্যাচ সিরিজের প্রথমটিতেও জয় পেয়েছে তারা।

অলরাউন্ড পারফরম‌্যান্সে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক সায়েম আইয়ুব। তার ৩৮ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে ভর করে পাকিস্তান লাডারহিলে ৬ উইকেটে ১৭৮ রান করে। জবাব দিতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে ১৬৪ রানের বেশি করতে পারেননি। দারুণ ব‌্যাটিংয়ের পর বোলিংয়ে সায়েম ২০ রানে ২ উইকেট নেন। ১৪ রানের জয়ে সিরিজে ১-০ ব‌্যবধানে এগিয়ে পাকিস্তান।

টস হেরে ব‌্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তান শুরুতে শাহিবজাদা ফারহানের উইকেট হারায়। ১২ বলে ১৪ রান করে আউট হন ডানহাতি ব‌্যাটসম‌্যান। তিনে নেমে ফখর সায়েমকে সঙ্গ দেন। দুজন ৮১ রানের জুটি গড়েন। এ সময়ে ফখর ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ বলে ২৮ রান করেন। বাকি রান আসে সায়েমের ব‌্যাটে।  এ সময়ে তিনি তুলে নেন ক‌্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি। হোল্ডারের বলে এলবিডব্লিউ হলে থেমে যায় তার ইনিংস।

এরপর হাসান নওয়াজের ১৮ বলে ২৪, সালমান আগার ১০ বলে ১১, ফাহিম আশরাফের ৯ বলে ১৫ রানে পাকিস্তান লড়াকু পুঁজি পায়। শেষ দিকে ১ বল খেলার সুযোগ পান হারিস। ছক্কায় উড়িয়ে পাকিস্তানের শেষটা ভালো করেন তিনি।
বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সেরা ছিলেন শামার জোসেফ। ৩০ রানে নেন ৩ উইকেট।

লক্ষ‌্য তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৭২ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর হঠ‌্যাৎ ছন্দপতন। ৫ রান পেতেই ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ওই ধাক্কার পর তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। জনসন চার্লস ও জুয়েল অ‌্যান্ড্রু ৩৫ রানের দুটি ইনিংস খেলেন। শেই হোপ (২),  গুদাকেশ মোটি (০), শেফরন রাদারফোর্ড (১১) ও রস্টন চেজ (৫) দ্রুত আউট হন। শেষ দিকে পরাজয়ের ব‌্যবধান কমান হোল্ডার ও জোসেফ। হোল্ডার ১২ বলে ৪ ছক্কায় ৩০ রান করেন। ১২ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২১ রান করেন জোসেফ ।

পাকিস্তানের বোলারদের মধ‌্যে সেরা ছিলেন হাসান নওয়াজ। ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার। সায়েমের ২ উইকেট বাদে ১টি করে উইকেট পেয়েছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি ও সুফিয়ান মুকিম।
আগামীকাল একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ