সিলেটে ১১ দফা দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় অভিমুখে চা–শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিল
Published: 24th, March 2025 GMT
সিলেটে বকেয়া মজুরি, রেশন পরিশোধসহ ১১ দফা দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন চা–শ্রমিকেরা। আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ‘চা–শ্রমিক ও চা–বাগান রক্ষা কমিটির’ ব্যানারে এ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে বেলা দেড়টার দিকে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেন শতাধিক চা–শ্রমিক।
শ্রমিকেরা জানান, টানা ১৩ সপ্তাহ ধরে মজুরি ও রেশন পাচ্ছেন না জেলার বুরজান চা–বাগান, বুরজান চা কারখানা, ছড়াগাং চা–বাগান ও কালাগুল চা–বাগানের শতাধিক শ্রমিক। বেতন–ভাতার দাবিতে তাঁরা একাধিকবার বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
চা–শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে বন্ধ থাকা মজুরি, বাগান সরদারদের মাসিক বেতন, চা–শ্রমিকদের সাপ্তাহিক রেশন, বাগানের মাসিক বেতনপ্রাপ্ত শ্রমিকদের বেতন প্রদান ও চা–শ্রমিকদের কর্তনকৃত পিএফ টাকা ফান্ড অফিসে জমা, শ্রমিকদের চিকিৎসা ও ওষুধ প্রদান, শ্রমিকদের নিয়মিত বসতবাড়ি নির্মাণ, টিন, কাঠ, দরজা, জানালা প্রদান, শ্রমিকদের এরিয়া বকেয়া টাকা ও বকেয়া বোনাসের টাকা প্রদান, আইন মোতাবেক খাবার পানি ও স্যানিটেশন প্রদান এবং চা–বাগানের অবসরে থাকা শ্রমিকদের ফান্ডের টাকা প্রদান।
সিলেটের লাক্কাতুরা চা–বাগান থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পৌঁছায়। এ সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে চা–শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য দেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাশেম।
শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ‘চা–শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির’ সভাপতি রাজু গোয়ালা, সাধারণ সম্পাদক দেবু বাউরি, মালনীছড়া চা–বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি জিতেন সমর প্রমুখ। কর্মসূচিতে সিলেটের ২২টি বাগানের চা–শ্রমিক ও নেতারা অংশ নেন।
বক্তারা জানান, চা–শ্রমিকেরা মজুরি না পেয়ে মানবেতর জীবন পার করছেন। পাশাপাশি রেশন বন্ধ থাকায় অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। শ্রমিক পরিবারের সদস্য শিশুরাও পড়াশোনা দূরের কথা, তিন বেলা খাবার নিয়ে কষ্ট করছে। এমন অবস্থায় চা–শ্রমিকেরা একযোগে কর্মবিরতিতে গেলে এর দায় বাগান কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। শ্রমিকদের মজুরি প্রদান করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি সুরাহা করার আহ্বান জানান তাঁরা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবেশ রক্ষায় ‘বীজ বোমা’
পরিবেশ রক্ষায় অভিনব এক উদ্যোগ নিয়েছেন টাঙ্গাইলের তরুণ পরিবেশকর্মী ও সংগঠক মুঈদ হাসান তড়িৎ। সামাজিক সংগঠন ‘যুবদের জন্য ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছেন তিনি। ‘বীজ বোমা’ নামের এক বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃক্ষরোপণের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন তড়িৎ।
সাধারণত মাটি দিয়ে ছোট বলের আকারে তৈরি করা হয় ‘বীজ বোমা’। এর ভেতরে থাকে বীজ, সার ও পুষ্টিকর উপাদান। এগুলো যেকোনো উন্মুক্ত স্থানে ছুড়ে দিলেই বৃষ্টির পর তা থেকে গাছ জন্ম নিতে পারে।
মুঈদ হাসান তড়িৎ বলেছেন, “আমাদের চারপাশে অনেক অনাবাদি জমি পড়ে আছে। এই জমিগুলোতে যদি আমরা সহজ পদ্ধতিতে গাছ লাগাতে পারি, তাহলে দ্রুত সবুজায়ন সম্ভব। সে ভাবনা থেকেই এই ‘বীজ বোমা’। যুবদের জন্য ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে বীজ বোমা ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।”
এ উদ্যোগের মাধ্যমে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরও পরিবেশ বিষয়ে সচেতন করার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। তারা একত্রিত হয়ে শহরের নানা স্থানে বীজ বোমা ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে যেমন গাছ বাড়ছে, তেমনই পরিবেশ সম্পর্কে তরুণদের সচেতনতাও তৈরি হচ্ছে।
পরিবেশবিদ ও সুশীলসমাজের সদস্যরা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। পরিবেশকর্মী ডা. মুজিব রহমান বলেছেন, “কম খরচে ও সহজ উপায়ে সবুজায়নের কার্যকর পদ্ধতি বীজ বোমা। যদি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এ উদ্যোগে সহায়তা করে, তাহলে পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব।”
এছাড়া, বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে মাত্র ১০ টাকায় ফলজ, বনজ ও ওষুধি গাছ বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন তড়িৎ ও তার সংগঠন। শতাধিক মানুষ পছন্দের গাছ মাত্র ১০ টাকায় ক্রয় করেছেন এ উদ্যোগ থেকে।
তড়িতের এ উদ্যোগ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অনেকে প্রশংসা করছেন এই অভিনব চিন্তার এবং একে আরো বড় পরিসরে ছড়িয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
পরিবেশ রক্ষায় এক পা সামনে এগিয়েছে তড়িতের ‘বীজ বোমা’। এখন সবার এগিয়ে আসার সময়।
ঢাকা/কাওছার/রফিক