‘সারজিস ছাত্রলীগ থেকে এনসিপি করলে আমরা কেন ছাত্রদল করতে পারব না’
Published: 25th, March 2025 GMT
পাবনা মেডিক্যাল কলেজ শাখা ছাত্রদলের কমিটির ২২ জনের ১১ জনই ছাত্রলীগের এমন বিতর্কের মুখে ওই কমিটি স্থগিত করেছে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ। এর প্রতিবাদে পাবনায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থগিত কমিটির নেতাকর্মীরা। এ সময় তাদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য দেন স্থগিত কমিটির সভাপতি সাগর মাহমুদ।
সাগর মাহমুদ বলেন, ‘‘সারজিস আলম এক সময় ছাত্রলীগ করেছেন। ছাত্র আন্দোলনে অবদান বিবেচনায় এখন তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টি করছেন। তাহলে আমরা কেন ছাত্রদল করতে পারব না? বিষয়টিকে ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করেন তারা।’’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘‘প্রথমবর্ষে থাকা অবস্থায় লিমন, নাহিদ ও শাকিলসহ ছাত্রলীগের মেডিক্যাল কলেজ শাখার তৎকালীন নেতাদের অত্যাচার ও নির্যাতনের মুখে আমাদের কয়েকজন সহযোদ্ধাকে ইচ্ছার বাইরে চাপের মুখে ছাত্রলীগের হল কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে। দলীয় বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশ না নিলে ও কার্যক্রমে না থাকতে চাইলে পরীক্ষায় ফেল করানো ও ছাত্রত্ব বাতিলের ভয় দেখানো হয়েছে। ফলে চাপের মুখে নামকাওয়াস্তে তাদের কার্যক্রমকে সম্মতি দিতে হয়েছে। তবে কোনো অন্যায় কাজে তাদের কেউ কখনো অংশ নেয়নি। উল্টো একটু একটু করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলেছে। হলে অনিয়ম ও র্যাগিংয়ের মতো নানা বিষয়ে জোরালো প্রতিবাদ করেছে। এছাড়া জুলাই আন্দোলনে এসকল নেতাকর্মীরা সম্মুখ সারিতে থেকে ভূমিকা নিয়েছে। একারণে তাদের মারধর ও অকথ্য নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। ক্রসফায়ারের ভয়ও দেখানো হয়েছে।’’
আরো পড়ুন:
ছাত্রদল নেতাকে ‘হত্যার’ হুমকি, থানায় জিডি
লক্ষ্মীপুরে থানার ভেতরে ছাত্রদল নেতার হামলায় আহত ২
স্থগিত কমিটির সভাপতি বলেন, ‘‘এগুলোর সমস্ত প্রমাণ আছে। এছাড়া আন্দোলনের আগেই ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকার বিষয়টি পরিষ্কারও করেছেন তারা। যা তাদের ফেসবুক পোস্ট যাচাই করলে বুঝা যাবে। এছাড়া এ নিয়ে সংবাদকর্মীদেরও অবহিত করা হয়েছিল।’’
স্থগিত কমিটির সভাপতি সাগর মাহমুদ বলেন, ‘‘পাবনা মেডিক্যাল কলেজ অল্প শিক্ষার্থীর প্রতিষ্ঠান। ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতারা কলেজের অধিকাংশ ছাত্রকেই তাদের কমিটিতে নাম দিয়ে রাখতো। অথচ গুটিকয়েক ছাড়া অধিকাংশই এ সংগঠনের সঙ্গ থাকায় অনীহা ছিল। কিন্তু ভয়ে কমিটিতে নাম দেয়ায় প্রতিবাদ করতে পারেনি। আমাদের যেসকল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ কর্মী বলে ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে, তারাও একই ধরণের ভুক্তভোগী। এক্ষেত্রে এখন তাদের ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে কলঙ্কিত করা ও জাতীয়তাবাদী চেতনার সুস্থ ধারার রাজনীতি থেকে সরিয়ে রাখাটি অন্যায় ও অমানবিক।’’
সাগর মাহমুদ বলেন, বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রদল ও জাতীয়তাবাদী চেতনাকে পরিকল্পিতভাবে বিতর্কিত করা হচ্ছে। এর নেপথ্যে বিভিন্ন গুপ্ত সংগঠন কাজ করছে। এ ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। এ সময় গুপ্ত সংগঠনগুলোর ষড়যন্ত্রমূলক রাজনীতিকে রুখে দিতে স্থগিত কমিটি পুনর্বহালের দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসান শুভ, সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিমুল এহসান তনিম, তানিয়া তাজনীন, মান্নান মন্ডল, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শেখ আল ফাইয়াদ, তাশরিফ আলম, স্বাধীন হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাবিল প্রমুখ।
গত ২৩ মার্চ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির পাবনা মেডিক্যাল কলেজ শাখা ছাত্রদলের ২২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন। ২২ সদস্যের এ কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ পদে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ১১ জন নেতাকে গুরুত্বপুর্ণ পদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে দলের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপর ২৪ মার্চ ওই বিতর্কিত কমিটি স্থগিত করে কেন্দ্রীয় সংসদ।
ঢাকা/শাহীন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ম ড ক য ল কল জ ছ ত রদল র
এছাড়াও পড়ুন:
জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আলম মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল আরমান, ফজলু মেম্বার, মনির মল্লিক, শাহাদাত হোসেন, ওবায়দুর রহমান, শাহ আল বেপারী, সেলিম হোসেন দিপু।
সংবাদ সম্মেলনে শাহীন মিয়া বলেন, কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর এদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র যেকোনো অঙ্গ সংগঠনের পদে থাকতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হিসেবে আমার সংগঠনে যারা চাঁদাবাজ, দখলবাজ স্বৈরাচারের দোসর আমি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি।
আওয়ামীলীগের সাথে শাহীনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনাদের ব্যাপারে পাল্টা তিনি বলেন, রূপগঞ্জ থানার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও সাংগঠনিক দূর্বলতার কারণে তাকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এছাড়াও বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে নজরুলের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিল না। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের যোগসাজসে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের একাধিক মৌজার আবাদী জমিতে বালি ভরাট করে সাধারণ কৃষকের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছিল।
এছাড়াও অসহায় ও সাধারন মানুষের বসতবাড়ি সহ জবরদখল করে নেয় তারা। নজরুল দোসরদের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নির্যাতন করেছিল। এভাবে বিগত ১৭ বছরে স্বৈরাচার সরকারের আস্থাভাজন হয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এই নজরুল। সে হলো মৌসুমী পাখি।
তিনি বলেন, ১৭ টি বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই নারায়ণগঞ্জে কৃষক দলকে হাতের মুঠোয় রেখেছি আজ সেই কৃষক দলের ভাবমূতি ক্ষুন্ন করতে এই নজরুল স্বৈরাচারের সাথে হাত মিলিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের মানহানি করেছে।
আমি এরই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তার বিরুদ্ধে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিষয়টি আমি আমার হাইকমান্ডকে অবগত করেছি।
তিনি আরও বলেন, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সার্জন মোমেনকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও দলীয় শৃংখল বঙ্গের দায়ে ১০ই এপ্রিল সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সে বিগত সতেরো বছর নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। ৫ ই আগস্টের পর ৪০ বিঘা জমির উপর মাছের প্রজেক্ট দখল করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মোমেন।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময় সে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন তার নিজের জন্য। এখনো সে এলাকায় সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে এর যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে এসেছে এবং অনেক সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। যে সমস্ত মানুষ কোন দল করে না দল বুঝেনা। এ সমস্ত অভিযোগের কারণে তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নজরুলসহ কৃষকদলের বেশ কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় শাহীনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকার বিনিময়ে পুনর্বাসনসহ বেশ কিছু অভিযোগ আনেন তারা।