বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায় চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে ছিনিয়ে নিতে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নেতৃত্বে পুলিশের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক উপপরিদর্শকসহ (এসআই) চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার গজালিয়া সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে গ্রেপ্তার আসামিসহ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে। পরে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ও হামলার জড়িত থাকার অভিযোগে রাতভর অভিযান চালিয়ে ১৬ জনকে আটক করে যৌথ বাহিনী। আটক সবাই বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগে কচুয়া থানার একটি মামলার এজাহারনামীয় আসামি একলাছ শেখকে (৩৩) গতকাল রাতে গজালিয়া সেতু এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের একটি দল। এ সময় তাঁকে ছিনিয়ে নিতে স্থানীয় গজালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শিকদার জাকির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে শতাধিক লোক পুলিশের ওপর হামলা করেন। এতে বিএনপি নেতা–কর্মীদের মারধরে কচুয়া থানার এসআই আহমেদ কবির, গজালিয়া পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই রাকিব মোল্লা, পুলিশ কনস্টেবল মো.

জাহিদুর রহমান ও রঞ্জন বিশ্বাস আহত হন। উদ্ধারের পর স্থানীয় হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।

গ্রেপ্তার একলাছ শেখ গজালিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক। এদিকে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা একলাছসহ আটক ১৬ জনের বিরুদ্ধে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ কচুয়া থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ওই মামলায় আটক ব্যক্তিরা ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও অন্তত ১৫০ জনকে আসামি করা হচ্ছে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন মো. রিয়াজ শেখ (২৫), মো. আমিনুল হক (২৮), মো. হেমায়েত মোল্ল্যা (৫২), মো. সাব্বির শেখ (১৯), মো. সোহাগ শেখ (২৩), মো. রবিউল ইসলাম (২৭), আমিরাত হোসেন (২০), মো. সাকিব শেখ (১৮), মো. ইবাদুল সিকদার (২৬), মো. আবুল খায়ের (৪১), মো. ওমর ফারুক (৩৯), মো. শাওন আকন (২১), মো. জনি শেখ (১৮), মো. রাফি সিকদার (২১), মো. ইয়ার হোসেন (৩২), মো. রিয়াজুল ইসলাম (২৯)। তাঁরা সবাই স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শামীম হোসেন বলেন, আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁরা সন্ত্রাসী প্রকৃতির এবং এলাকার বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ