বরিশালে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে গৃহবধূ ও তরুণকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন
Published: 2nd, April 2025 GMT
বরিশালের উজিরপুরে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে এক প্রবাসীর স্ত্রী ও এক তরুণকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তাঁদের ক্ষতস্থানে লবণ-মরিচ লাগিয়ে দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের একটি ভিডিও গত মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ২ মিনিট ৫৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে ভুক্তভোগী তরুণ ও নারীকে একই রশিতে বেঁধে নির্যাতন করতে দেখা যায়। তাঁদের নির্যাতনের দৃশ্য দাঁড়িয়ে দেখছিলেন নারী-শিশুসহ ২০ থেকে ২৫ জন।
স্থানীয় লোকজন জানান, গত মঙ্গলবার সকালে উজিরপুরের ওই গ্রামে সৌদিপ্রবাসীর বাড়িতে ঈদ উপলক্ষে দাওয়াত পেয়ে ঘুরতে আসেন পাশের গৌরনদী উপজেলার একটি গ্রামের এক তরুণ (২৫)। এ সময় অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে প্রবাসীর ঘর থেকে ওই নারী ও তরুণকে টেনেহিঁচড়ে বের করেন প্রতিবেশীরা। পরে বাড়ির উঠানের বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করেন। মুঠোফোনে মারধরের ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
পরে এ ঘটনায় ‘অনৈতিক কার্যকলাপের’ অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে বরিশাল জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠায় পুলিশ। বিচারক রাত ৯টার দিকে তাঁদের জামিনে মুক্তি দেন। আগামী রোববার তাঁদের আবার আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ জানান, কয়েক দিন আগে স্থানীয় এক যুবক তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন। এ নিয়ে সালিসও হয়। এর আগে দুই চোরকে হাতেনাতে তিনি ধরেছিলেন। এ ঘটনায় তিনি থানায় অভিযোগ করেছিলেন। মূলত ওই দুটি ঘটনার জেরে পরিকল্পিতভাবে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে তাঁদের অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতে জামিন পেয়ে তিনি উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। তাঁর শরীরের এমন কোনো স্থান নেই, যেখানে আঘাত করা হয়নি। বুধবার সকালে থানা-পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা তাঁর সঙ্গে হাসপাতালে এসে ঘটনার বর্ণনা শুনেছেন। তাঁরা পুরো বিষয়টি লিখে নিয়ে গেছেন। তবে এখনো মামলা করা হয়নি।
ওই গৃহবধূর অভিযোগ, এলাকার ভাসাই ফরাজী প্রথমে তাঁর হাত-পা রশি দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বাঁধেন। পরে একইভাবে তরুণকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে দুজনকে মারধর করেন। পরে এলাকার মনোয়ার হোসেন ফরাজীর ঘরে তাঁদের আটকে রেখে প্রায় তিন ঘণ্টা মারধর করা হয়। আরিফ ফরাজী, মিজানুর রহমান ফরাজী, সোহেল ফরাজী, ওমর ফরাজী, খায়রুল ফরাজী তাঁদের মারধর করেন।
ভুক্তভোগী তরুণ অভিযোগ করে বলেন, মনোয়ার হোসেন ফরাজীর ঘরে আটকে রেখে আপত্তিকর ভিডিও ধারণের হুমকি দিয়ে তাঁদের মারধর করা হয়। এ সময় মুঠোফোনে তাঁর (তরুণ) বাবাকে কল করে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তরুণের সঙ্গে থাকা মুঠোফোন ও পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের একটি মোটরসাইকেল রেখে দেন। এ সময় তাঁর (তরুণ) কাছ থেকে কিছুই নেওয়া হয়নি, এমন ভিডিও স্বীকারোক্তি নেন তাঁরা।
তবে নির্যাতন করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত খায়রুল ফরাজী ও মনোয়ার হোসেন ফরাজী। তাঁরা সাংবাদিকদের বলেন, ওই নারীর চরিত্র খারাপ। এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছিল। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে ওই নারী খায়রুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করেছিলেন। এ নিয়ে ২৯ মার্চ দুপুরে সালিস বৈঠকে বিষয়টি মীমাংসা হয়। মঙ্গলবার ওই নারী আবার তাঁর ঘরে অপরিচিত এক তরুণকে ঢুকতে দেন। তখন ওই তরুণকে চড়থাপ্পড় দিয়ে পুলিশে দেওয়া হয়। স্থানীয় লোকজন তাঁদের অসামাজিক কার্যকলাপের জন্য বেঁধে রেখেছিলেন।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম বলেন, স্থানীয় লোকজন দুজনকে একটা বাড়িতে আটকে রেখে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাঁদের থানায় নিয়ে আসে। পরে পুলিশ বাদী হয়ে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে মামলা করে দুজনকে আদালতে পাঠায়। রাতেই তাঁরা জামিন পেয়েছেন। ওই গৃহবধূর সঙ্গে পুলিশ বুধবার সকালে হাসপাতালে গিয়ে কথা বলেছে। তাঁর পরিবারকে থানায় এসে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ফর জ র কর ন ওই ন র র একট এ সময় এ ঘটন গ হবধ
এছাড়াও পড়ুন:
জায়েদ ভাই মেয়েদের ফেভারিট: নুসরাত ফারিয়া
ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া মানেই গ্ল্যামার, মেধা আর মজার মিশ্রণ। দুই বাংলায় সমানতালে কাজের পাশাপাশি গানেও বাজিমাত করেছেন। এবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ভিন্ন কারণে। চিত্রনায়ক জায়েদ খানের টক শোতে অতিথি হয়েছেন এই অভিনেত্রী।
সম্প্রতি কানাডায় অনুষ্ঠিত ৩৯তম ফোবানা সম্মেলনে অংশ নেন ফারিয়া। গালা নাইটে নিজের ঝলমলে পারফরম্যান্সে মাতিয়ে তোলেন সবাইকে। সেই সফরের মজার অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সহকর্মী জায়েদ খানের গোপন তথ্য ফাঁস করেন এই অভিনেত্রী।
আরো পড়ুন:
গ্রেপ্তারের পর প্রথম মুখ খুললেন নুসরাত ফারিয়া
বিয়ে ভাঙার পর হতাশা কাটাতে ওষুধ খেতেন নুসরাত ফারিয়া
ফারিয়া বলেন, “জায়েদ ভাই মিষ্টি মনের মানুষ। দিন দিন তো অনেক হ্যান্ডসাম হয়ে যাচ্ছেন! এত ওয়ার্কআউট করছেন যে, এখন বাংলাদেশের অর্ধেক মেয়েরই ফেভারিট উনি!”
জায়েদ খানের প্রশংসা করে ফারিয়া বলেন, “আগে তো ছিলেনই, এখন অনেক ফিট হয়ে গেছেন। ওনার সাথে কাজ করা মানে সারাক্ষণ হাসিখুশি থাকা। কারো মন খারাপ থাকলেও উনার সাথে কথা বললেই ভালো হয়ে যায়।”
কানাডা সফরের আরেক টুকরো গল্পও জানান ফারিয়া। তার ভাষায়, “একদিন উনি বললেন, ‘চলো মন্ট্রিয়ালে হাঁটতে হাঁটতে শুটটা করে ফেলি।’ আমি ভাবলাম মজা করছেন, কিন্তু উনি সত্যিই শুট শুরু করলেন। ওই ফান পার্টগুলো কিন্তু আপনাদের দেখানো হয়নি, এডিটেই কেটে দিয়েছে!”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত