গত ১৭ বছরে টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি ও লুটপাট করে আওয়ামী লীগ যে অবৈধ টাকা জমিয়েছে, সেই টাকার লোভে না পড়ার জন্য নিজ দলের নেতাদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু। শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজ নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের মেম্বার গট্টি মোড়ে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত এক উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

শামা ওবায়েদ বলেন, ‘গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগ শুধু টিআর-জিআর খাইছে। সাধারণ জনগণের কোনো উন্নয়ন তারা করেনি। আর ছাত্রলীগ-যুবলীগ টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি ও লুটপাট করেছে। সুতরাং তাদের কাছে অনেক টাকা-পয়সা আছে। আপনারা (বিএনপি নেতারা) ওই টাকার লোভে পইড়েন না। যদি জিয়াউর রহমান, তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার আদর্শ লালন করে থাকেন, তাহলে লোভে পড়া যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘শুধু আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপির যারা গত ১৫ বছর আমাদের সঙ্গে ছিল না, লোভে পড়ে সেই বেইমানদেরও দলে জায়গা দেওয়া যাবে না। যদিও তারা দলে আসতে চায়, তাহলে পেছনের চেয়ারে পরীক্ষা দিয়ে আসতে হবে।’

শামা ওবায়েদ আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালায় গেলেও তার দোসররা এখনও ষড়যন্ত্র করছে। তারা নানাভাবে আমাদের মধ্যে ঢুকে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে। অতএব সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’

উঠান বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সালথা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো.

সিদ্দিকুর রহমান তালুকদার, শিক্ষক নেতা জাহিদ হোসেন, সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আসাদ মাতুব্বর, সালথা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক খন্দকার খায়রুল বাসার আজাদ, অ্যাডভোকেট জাহিদ হোসেন লাবলু, জেলা যুবদল নেতা তৈয়াবুর রহমান মাসুদ, স্থানীয় বিএনপি নেতা এনায়েত হোসেন, রফিক মোল্যা, জাহিদ মাতুব্বর, যুবদল নেতা হাসান আশরাফ, মামুন চৌধুরী, মাহফুজ খান, ছাত্রদল নেতা সাইফুল আলম, রাজ প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ