ঈদের ছুটিতেও সেবা মিলেছে পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে, খুশি প্রসূতিরা
Published: 5th, April 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন। পরিবারের সদস্যরা সবাই ঈদ–আনন্দ উদ্যাপনে ব্যস্ত। এর মধ্যেই হঠাৎ প্রসবব্যথা ওঠে গৃহবধূ মিতু বেগমের। প্রসবের জন্য মিতুকে কোথায় ভর্তি করাবেন, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যান পরিবারের সদস্যরা। একপর্যায়ে নিয়ে যান স্থানীয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে। সেখানে স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে একটি মেয়েসন্তানের জন্ম দেন মিতু।
মিতু বেগম লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নের কেরোয়া গ্রামের মো.
কেবল মিতু বেগম নয়, গত ২৮ মার্চ থেকে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত আট দিনে ৫৫ জন প্রসূতি স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে। ঈদের ছুটিতেও প্রসব সেবা পেয়ে খুশি এসব প্রসূতি।
লক্ষ্মীপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, লক্ষ্মীপুরে ৩৫টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র চালু রয়েছে। এবারই প্রথম ঈদের ছুটিতে সব কটি কেন্দ্র চালু রাখা হয়েছে। প্রসব ছাড়াও এসব স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে ১৭৩ জন প্রসবপূর্ব সেবা, ৯০ জন প্রসব–পরবর্তী সেবা নিয়েছেন। এ ছাড়া চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন তিন শতাধিক রোগী।
লক্ষ্মীপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক নাজমুল হাসান বলেন, ‘এবারই প্রথম ঈদের ছুটিতে স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা বিভাগের অধিকাংশ চিকিৎসক, ভিজিটর, অ্যাটেনডেন্ট, নার্স ডিউটিতে সময় পার করেছেন। মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রসহ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে ছুটির ৯ দিন ২৪ ঘণ্টা সেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে। আজ শনিবার পর্যন্ত এক ঘণ্টার জন্যও সেবা ব্যাহত হয়নি।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঈদ র ছ ট ত ব র পর প রসব
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?