ছেলে সন্তানের জন্ম দিল ‘ধর্ষণের শিকার’ কিশোরী
Published: 11th, April 2025 GMT
কুষ্টিয়ায় ‘ধর্ষণের শিকার’ ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরী ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছে। গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেয় সে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর চাচাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
এর আগে, গত মঙ্গলবার শিশুটির বাবা তার আপন ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন জানান, কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয় গত মঙ্গলবার। ওইদিন বিকেলেই তাকে আদালতে সৌপর্দ করা হয়। বিচারক তাকে কারাগারে পাঠান।
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে রোগী ভর্তি শুরু
ঈদের ছুটিতে বরিশাল শের-ই-বাংলা হাসপাতালে ১৮৫ রোগীর মৃত্যু
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকালে প্রসব বেদনা নিয়ে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি হয় এক কিশোরী। ওই দিন দুপুরে স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে সে ছেলে সন্তানের জন্ম দেয়।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা.
তিনি আরো বলেন. “গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কিশোরী পরিবারের সঙ্গে কুষ্টিয়া শহরের একটি ভাড়া বাসায় থাকতো। ২০২৪ সালের ২ মে গভীর রাতে ওই কিশোরীর ঘরে প্রবেশ করে তার চাচা। পরে তিনি কিশোরীকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। ঘটনার তিন মাস পর কিশোরীর দৈহিক পরিবর্তন চোখে পড়লে পরিবার বাসাটি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে বসবাস শুরু করে। পরে কিশোরী তার বাবা-মাকে জানায়, প্রথম দিনের পর একাধিকবার ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেছে অভিযুক্ত।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নার্গিস খাতুন বলেন, “ধর্ষণের অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবার করা মামলায় একমাত্র এজাহার নামীয় আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সৌপর্দ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে পর্যায়ক্রমে আসামিকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ ও ডিএনএ টেস্ট করা হবে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?