চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষার্থীর ওপর স্থানীয়দের হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে ১১ ঘণ্টা পর মূল ফটকে লাগানো তালা খুলে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক খুলে দেওয়া হয়। 

এর আগে, সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলক্রসিং এলাকায় এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। এরপর রাত পৌনে ১টার দিকে প্রধান ফটকে তালা দেন শিক্ষার্থীরা।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো.

আব্দুর রহমান বলেন, “গতকালের নিন্দনীয় হামলার ঘটনায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেইটে তালা দিয়েছিলাম। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে কিছুক্ষণ আগে গেইট খুলে দিয়েছি।” 

তিনি বলেন, “প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি ছিল- শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ১ নম্বর গেইট থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত চক্রাকার বাস চালু করা এবং সিএনজি চালকদের দৌরাত্ম কমানো।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আমাদের এক শিক্ষার্থীর ওপর স্থানীয়দের হামলার ঘটনাটি জানতে পেরেছি। এটি খুবই ন্যাক্কারজনক। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। তারা মূল ফটকের তারা খুলে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো আমাদেরই দাবি। আমরা দাবিগুলো অবশ্যই বাস্তবায়ন করব।”

তিনি আরো বলেন, “পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীর ওপর হামলাকারীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। আগামী সমাবর্তনের আগে আপাতত অল্প পরিসরে চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু করব।”

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ