চট্টগ্রামের খাল ও নালায় ৪ বছরে ভেসে গেল ৬ প্রাণ
Published: 19th, April 2025 GMT
চট্টগ্রামে নালায় পড়ে এবার নিখোঁজ হয়েছে ছয় মাস বয়সী শিশু সেহলিজ। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে কাপাসগোলার নবাব হোটেলের পাশের নালায় এই ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রামে নালায় পড়ে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। গত বছরের জুনেও নালায় পড়ে স্রোতে তলিয়ে যায় সাত বছরের এক শিশু।
২০২১ সালের ২৫ আগস্ট মুরাদপুর মোড়ে বৃষ্টির মধ্যে খোলা নালায় পড়ে নিখোঁজ হন সবজি বিক্রেতা সালেহ আহমেদ। দীর্ঘ সময় উদ্ধার অভিযান চালিয়েও তার মরদেহ পাওয়া যায়নি। একই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর, আগ্রাবাদ এলাকায় হাঁটার সময় নালায় পড়ে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া।
ষোলশহর এলাকায় ২০২২ সালে শিশু কামাল নালায় পড়ে নিখোঁজ হয়। তিন দিন পর মুরাদপুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ২০২৩ সালের ২৮ আগস্ট আগ্রাবাদ রঙ্গীপাড়া এলাকায় দেড় বছর বয়সী শিশু ইয়াছিন আরাফাত নালায় পড়ে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ১৬ ঘণ্টা পর তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। ২০২৪ সালের জুনে গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় সাত বছরের শিশু সাইদুল ইসলাম নালায় পড়ে নিখোঁজ হয়। পরদিন নাছির খাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এবার মায়ের চোখের সামনে চট্টগ্রামের নালায় হারিয়ে গেল ছয় মাসের শিশুটি। তার বাঁচার আশা ক্ষীণ বলে মনে করছে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষ।
নিখোঁজ শিশুটি সেহলিজের মা সালমা বেগম জানান, তারা কাপাসগোলায় এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে অটোরিকশা ঘোরাতে গিয়ে সেটি খালের মধ্যে পড়ে যায়।
জলাবদ্ধতা নিরসনের চলমান প্রকল্পের কারণে নালার পাশের নিরাপত্তাবেষ্টনী খুলে রাখা হয়েছিল। এ সময় চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজারের কাপাসগোলা এলাকায় ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নালায় পড়ে যায়। অটোরিকশায় ছিল শিশুটির মা ও দাদি। স্থানীয়দের সহায়তায় তারা দুজন নালা থেকে উঠতে পারলেও ছয় মাস বয়সী শিশুটি ভেসে গেছে পানির স্রোতে। ঘটনার পরপরই অটোরিকশাচালক পালিয়ে যান।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের চন্দনপুরা ইউনিটের একটি দল ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। তাদের সঙ্গে কাজ করছে সিভিল ডিফেন্স ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও। কিন্তু রাত দুইটায় নিখোঁজের ৬ ঘণ্টা পরও শিশুটির কোনো খোঁজ পায়নি ডুবুরিরা।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় দোকানদার আবুল ফজল জানান, খালটি ‘হিজড়া খাল’ নামে পরিচিত। সেখানে আবর্জনার স্তূপ জমে থাকায় পানির স্রোত আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত র মরদ হ এল ক য় বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
পটুয়াখালীতে সালিস বৈঠকে অংশ নিলে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিএনপি
পটুয়াখালীতে স্থানীয় পর্যায়ে সালিস বৈঠকে অংশ নিলে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে ওই বিজ্ঞপ্তির কপি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
সম্প্রতি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী সালিস বৈঠকে অংশ নিয়ে আর্থিক লেনদেনে জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা এ বিষয়ে ফেসবুকে নানা মন্তব্য তুলে ধরে ক্ষোভ জানিয়েছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে জেলা বিএনপি এই বিজ্ঞপ্তি দেয়।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান টোটন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সামনে জাতীয় নির্বাচন। সংকটময় মুহূর্ত আসছে, তাই দলীয় নেতা-কর্মীরা যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনায় না জড়ান, তাই তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে।’
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিএনপি জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামী সংগঠন। এই দলের প্রত্যেক কর্মী জনগণের আস্থার প্রতীক এবং আন্দোলন-সংগ্রামের অগ্রণী সৈনিক। তাই দলের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখা ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে জেলা বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কোনো নেতা-কর্মী স্থানীয় পর্যায়ে কোনো প্রকার সালিস, দাঙ্গা-ফ্যাসাদ বা পক্ষপাতদুষ্ট এবং মধ্যস্থতাকারী কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে না।
একই সঙ্গে ওই বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কর্মসূচি এবং জনগণের পাশে থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া নেতা-কর্মীদের সদা হাস্যোজ্জ্বল, ভদ্র ও অমায়িক আচরণমুখী হতে বলা হয়েছে। এ নির্দেশনা অমান্য করলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।