ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে নেত্রকোনা শহরের একাংশ ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন
Published: 23rd, April 2025 GMT
নেত্রকোনা পৌর শহরের জয়নগর এলাকায় ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। এ ঘটনায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার সহস্রাধিক গ্রাহক। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটা থেকে আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
নেত্রকোনা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) অভিযোগকেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা পলাশ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, শহরের ৭ নম্বর ফিডারের ট্রান্সফরমার গতকাল রাত তিনটার দিকে বিকল হয়ে যায়। এ কারণে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন, নতুন ট্রান্সফরমার বসিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপনের কাজ চলছে। ফলে কিছুটা সময় লাগবে।
পিডিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনা শহরে ১০টি ফিডারের আওতায় ৫৪ হাজার ৩২৫ জন গ্রাহক রয়েছেন। গতকাল রাত তিনটার দিকে ৭ নম্বর ফিডারে হঠাৎ ভোল্টেজ কমে যায়। প্রাথমিকভাবে কিছু সময় আংশিক বিদ্যুৎ থাকলেও কিছুক্ষণ পর পুরো এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি যেমন বাতি, পাখা, রেফ্রিজারেটর বন্ধ হয়ে যায়। আজ বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। বিদ্যুৎ না থাকায় প্রচণ্ড গরমে শিশু, বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জয়নগর এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি নিয়মিত বাসায় নেবুলাইজার ব্যবহার করি। বিদ্যুৎ না থাকায় সেটা ব্যবহার করতে পারছি না, শ্বাসকষ্টে ভুগছি।’
একই এলাকার আরেক বাসিন্দা শাহনাজ পারভীন বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গোসল, রান্নাবান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে সমস্যা হচ্ছে। বাচ্চারা পড়াশোনা করতে পারছে না।’
নেত্রকোনা পিডিবি কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সালাউদ্দিন বলেন, ‘ট্রান্সফরমার বিকল হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তবে নতুন ট্রান্সফরমার বসানোর কাজ চলছে। আশা করছি, শিগগিরই বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট র ন সফরম র ব ব দ য ৎ সরবর হ
এছাড়াও পড়ুন:
ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ নেই, ৯০ কারখানায় ছুটি
সাভারের আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। কাজ বন্ধ থাকায় ডিইপিজেডের সব কারখানার শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।
ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে।
ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় ডিইপিজেডের সব প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
অন্যদিকে, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি বলছে, বিল বকেয়া থাকায় ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ নেই, কারখানাগুলোতে ছুটি
ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার দুপুর ১টা ১০ মিনিটের দিকে ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ না থাকায় সব কারখানায় কর্মীদের ছুটি দেওয়া হয়।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রায় ৯০টি কারখানার ১ লাখ শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়েছে।
এই কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হচ্ছে। মঙ্গলবারও যদি বিদ্যুৎ না থাকে, তাহলে সংকট আরো বাড়বে। শ্রমিকরা কাজ করতে না পারলে বিক্ষুব্ধ হবেন। এতে পরিস্থিতি আরো জটিল হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, কোনো নোটিশ ছাড়াই গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় কারখানাগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ার বকেয়া বিল পরিশোধ করেনি। এ বিষয়ে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে।
কেন গ্যাস নেই, জানে না ইউনাইটেড পাওয়ার
গ্যাস বিচ্ছিন্ন করার কারণ বলতে পারেনি ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, কোনো কারণ ছাড়াই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কর্তৃপক্ষ।
ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান বলেছেন, কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরাও এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমার জানা মতে, বকেয়া বিল নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই।
তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন বলেছেন, বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
এদিকে, নিরাপত্তাঝুঁকি এড়াতে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সহায়তায় ইপিজেডের ভেতরের সড়ক বাতিসহ আলো জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা ইপিজেডে ৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা আছে। পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের আশ্বাস মিলেছে বলে নিশ্চিত করেছে ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ।
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন এলাকায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের অবস্থান। এখানে পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনকারী প্রায় ৯০টি কারখানা আছে। এসব কারখানায় শ্রমিক প্রায় ১ লাখ।
ঢাকা/সাব্বির/রফিক