Samakal:
2025-06-15@10:50:12 GMT

কুয়েটের অচলাবস্থা কাটেনি

Published: 25th, April 2025 GMT

কুয়েটের অচলাবস্থা কাটেনি

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অচলাবস্থা পুরোপুরি কাটেনি। উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। এ ছাড়া শিক্ষকদের ওপর হামলাকারী শিক্ষার্থীদের শাস্তি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে শিক্ষক সমিতি। ফলে সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আশা প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী রোববারের মধ্যে তা কার্যকর হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে তারা বুধবার রাতে অনশন ভাঙেন এবং বৃহস্পতিবার বিকেলে ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল করেন। আপাতত তাদের কোনো কর্মসূচি নেই।

শিক্ষকরা জানান, ১৭ এপ্রিল শিক্ষক সমিতির সভা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, যারা গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষকদের মারধর-লাঞ্ছিত করেছে এবং পরে শিক্ষকদের সাইবার বুলিং করেছে, তাদের শাস্তি দিতে হবে। এটা না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবেন না। দায়ী শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে অধ্যাপক ড.

আব্দুল্লাহ আল ফারুককে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি কার্যক্রম চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী এবং শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারীদের শাস্তি কার্যকর করতে হবে। এটা না হওয়া পর্যন্ত কোনো শিক্ষক ক্লাসে যাবেন না। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আমরা আগামী ৩০ এপ্রিল আবার শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা করব। দায়ীদের চিহ্নিত করার পর তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

এদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করছেন। বৃহস্পতি ও শুক্রবার কিছু নতুন শিক্ষার্থী এসেছেন। তবে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এখনও আসেননি। ক্যাম্পাসের প্রধান গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. ফারুক হোসেন বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের পর কিছু শিক্ষার্থী উপাচার্যসহ ছয়-সাত শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কেউ শিক্ষকদের মারধর বা লাঞ্ছিত করেননি। শিক্ষক সমিতি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন, সাধারণ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেননি। এখনও কয়েক দিন সময় আছে, শিক্ষকরা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন বলে আমরা আশাবাদী।’
কথা বলার জন্য রেজিস্ট্রার আনিছুর রহমান ভূঁইয়াকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
কুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, ‘ক্লাস শুরুর কথা আগামী ৪ মে। এখনও সময় আছে। দেখা যাক, শিক্ষক সমিতির পরবর্তী সভায় কী সিদ্ধান্ত হয়।’
উল্লেখ্য, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও বহিরাগতদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে দেড় শতাধিক আহত হন। ওই দিন থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি আন্দোলন শুরু করেন। ১৫ এপ্রিল উপাচার্যকে অপসারণের এক দফা দাবি জানান।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র উপ চ র য ক র যকর

এছাড়াও পড়ুন:

এখনও পাহাড়ের নিচে বাস ২০ সহস্রাধিক মানুষের

২০১৭ সালের ১৩ জুনের ভয়াবহ পাহাড় ধসের দৃশ্য এখনও চোখে ভেসে উঠলে শিউরে উঠি। এখনও আমার ঘরের আশপাশে সেই পাহাড় ধসের চিহ্ন রয়ে গেছে। তাই অল্প বৃষ্টি হলেই আতঙ্কে থাকি, আশ্রয়কেন্দ্র খুঁজি। কিন্তু আমরা অসহায় ও গরিব, যেখানে পেটের ভাত জোগাতে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে নিরাপদ ভাড়া বাসায় থাকার সামর্থ্য কোথায়? তাই মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েই পাহাড়ের নিচে বসবাস করছি। 
কথাগুলো বলছিলেন রাঙামাটি শহরের ভেদভেদীর লোকনাথ মন্দিরের পাশে সিএনবির পাশে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করা পঞ্চাশোর্ধ্ব নূরজাহান। শুধু নূরজাহান নন, রূপনগর, মুসলিমপাড়া, শিমুলতলী, লোকনাথ মন্দির এলাকা, রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন নিচু এলাকা, কিনারাম পাড়াসহ শহরের অন্তত ২৯টি স্থানে ২০ হাজারের বেশি নিম্ন আয়ের মানুষ মারাত্মক ঝুঁকি জেনেও বসবাস করছে পাহাড়ের পাদদেশে। একটু ভারী বৃষ্টি এলেই সবার স্মৃতিতে ফিরে আসে, ২০১৭ সালের এ দিনে শহরে পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়ে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। কিন্তু পুনর্বাসন না হওয়ায় পাহাড়ের নিচে বসবাস বন্ধ হয় না। উল্টো দিন দিন বাড়ে। 

এমন অবস্থায় আজ শুক্রবার ২০১৭ সালেই সেই ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনার আট বছর পূর্ণ হলো। ২০১৭ সালের ১৩ জুন ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসে রাঙামাটি শহরের ভেদভেদীর যুব উন্নয়ন বোর্ড এলাকা, মুসলিমপাড়া, শিমুলতলী, রূপনগর, সাপছড়ি, মগবান, বালুখালী, জুরাছড়ি, কাপ্তাই, কাউখালী ও বিলাইছড়ি এলাকায় ৫ সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের মৃত্যু হয়। মানিকছড়িতে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের ওপর থেকে মাটি সরাতে গিয়ে ৫ সেনা সদস্য পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়েন। ওই সময় পাহাড় ধসে জেলায় ১৬০০ থেকে ১৭০০ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সারাদেশের সঙ্গে রাঙামাটির সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল এক সপ্তাহ। দীর্ঘ তিন মাসের বেশি সময় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার পর ক্ষতিগ্রস্তরা নিজেদের জায়গায় ফিরে যায়। এ ছাড়া ২০১৮ সালে নানিয়ারচর উপজেলায় পাহাড় ধসে দুই শিশুসহ ১১ জন এবং ২০১৯ সালের কাপ্তাইয়ে ৩ জনের প্রাণহানি ঘটে।
২০১৭ সালের সেই পাহাড় ধসে মৃত্যুর মিছিল ও বিপুল ক্ষয়ক্ষতির পরও ঝুঁকিতে থাকা লোকজনদের পুনর্বাসন করতে পারেনি প্রশাসন। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করেই দায় সারে তারা। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে স্থাপনা নির্মাণ না করতে মাঝেমধ্যে নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়। কিন্তু এই সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান আজও হয়নি। 
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, রাঙামাটি পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে শিমুলতলী, রূপনগর, লোকমন্দির পাড়া, পোস্ট অফিস কলোনি এলাকা, নতুনপাড়া, বিদ্যানগর, কিনারামপাড়া, সিলেটি পাড়াসহ অন্তত ২৯টি স্থানকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া নানিয়ারচর, কাউখালীসহ কয়েকটি উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় রয়েছে। এসব এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে এখনও ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ। 

গতকাল বৃহস্পতিবার রূপনগর, লোকনাথ মন্দির, মুসলিমপাড়া এলাকায় সরেজমিন দেখা গেছে, ২০১৭ সালের ওই পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নতুন বসতি গড়ে উঠেছে। কথা হয় রূপনগর এলাকার বাসিন্দা সমলা আক্তার, কমলা বেগম, আব্দুল মান্নান ও শাহানা বেগমের সঙ্গে। তারা জানান, ভারী বৃষ্টি হলেই ভয় লাগে। কিন্তু তাদের যাওয়ার কোথাও জায়গা নেই। বেশি বৃষ্টি হলে জেলা প্রশাসন থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু সম্পদ হারানোর ভয়ে অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে চায় না। 
তারা আরও জানান, সবাই চায় ভালো ও নিরাপদ স্থানে বসবাস করতে। তাই সরকার যদি তাদের পুনর্বাসন করে তাদের জন্য ভালো হয়।  
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের পুনর্বাসন চলমান প্রক্রিয়া। তবে এ ক্ষেত্রে জটিলতা হচ্ছে, যেখান থেকে মানুষজনদের সরিয়ে নেওয়া হয়, সেখানে আবারও নতুন লোকজন বসবাস শুরু করে। এসব এলাকায় লোকজন কম টাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। তা ছাড়া পাহাড়ে ভূমি জটিলতা থাকার কারণে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বা পাহাড়ের ঢালুতে মানুষ বসবাস করছে। যারা অবৈধভাবে বসবাস করছে তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নেওয়া হচ্ছে আইনি ব্যবস্থাও। তবে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস বন্ধ করতে সচেতনতা সৃষ্টি জরুরি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানের পাল্টা আঘাতে কাঁপল ইসরায়েল
  • জাফলংয়ের পাথর কোয়ারিতে এখনও রাজনৈতিক ছায়া
  • আলীকদমে ২ পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনায় ‘ট্যুর এক্সপার্টের’ বর্ষা গ্রেপ্তার
  • ইরানে এখনও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল: আইডিএফ
  • স্বপ্নে হলো দেখা
  • শতবর্ষী বিষাদ
  • এখনও পাহাড়ের নিচে বাস ২০ সহস্রাধিক মানুষের
  • অন্তর্বর্তী সরকারের সব উদ্যোগে এবি পার্টির সমর্থন রয়েছে: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
  • কৃষি ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে রয়ে গেছে আন্তঃবৈষম্য: উপদেষ্টা ফরিদা
  • এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে যা জানা গেল