খায়রুল হক ও আসাদুজ্জামান এখনও কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না, প্রশ্ন রিজভীর
Published: 25th, April 2025 GMT
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেছেন, গণতন্ত্র হত্যাকারী ফ্যাসিবাদ কায়েমের মূল দোসর বিচারপতি খায়রুল হক এবং আসাদুজ্জামান এখনও কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না?
শুক্রবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমান এর নির্দেশনায়— চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবদুল্লাহ বিন জাহিদের ছোট ভাই ক্যান্সার আক্রান্ত মাহমুদুল্লাহ বিন জিসানের চিকিৎসা ও অপারেশনের জন্য আর্থিক সহায়তার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।
রিজভী বলেন, ‘যাদের কারণে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তারা কেন আজও ধরাছোঁয়ার বাইরে? যারা বাংলাদেশের সকল প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে দিয়েছে যারা ফ্যাসিবাদকে চিরস্থায়িত্ব দান করার জন্য নিজেদের ওপর অর্পিত যে দায়িত্ব ছিল সেই দায়িত্ব শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করে গেছেন তাদেরকে এখনও কেন গ্রেপ্তার করা হয়নি? কেন জাস্টিস খায়রুল হক এখনও গ্রেপ্তার হয়নি? উনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাকে বন্ধ করে দিয়ে স্তব্ধ করে দিয়ে শেখ হাসিনাকে এক ভয়ঙ্কর রাক্ষসী ফ্যাসিবাদ তৈরি করার নাৎসিবাদ তৈরি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। সে কেন এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে?’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘একজন নিরীহ মানুষ, যার সঙ্গে কোনো কিছুর সম্পর্ক নেই, জনগণের অত্যন্ত সমাদৃত জনপ্রিয় একজন নেত্রী, দেশ-বিদেশে প্রশংসিত একজন নেত্রী, গণতন্ত্রের জন্য যিনি তার পরিবার সমস্ত সুখ শান্তিকে বিলীন করে দিয়ে দেশের মানুষ এবং মাটিকে ছেড়ে যিনি যাননি তাকে মিথ্যা মামলায় জাস্টিস আসাদুজ্জামান পাঁচ বছর সাজা দিয়ে দিলেন। তারপরে আবার হাইকোর্টে আরেকজন বিচারপতি এনায়েতুর রহিম তিনি আরও বাড়িয়ে দিলেন পাঁচ বছর। এরা কেন আজকে ধরাছোঁয়ার বাইরে?এরাই তো গণতন্ত্রের হত্যাকারী। এরাই তো ফ্যাসিবাদ কায়েমের জন্য শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করেছেন। আমরা যদি শহীদের রক্তকে ন্যূনতম মর্যাদা দিতে পারি এরা তো কেউ গ্রেপ্তারের বাইরে থাকার কথা নয়। তাহলে কেন আজকে এই সমস্ত ফ্যাসিবাদ কায়েমকারীরা, রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ধ্বংসকারীরা এখনও বহাল তবিয়তে আছে? এরা যদি দেশে নাও থাকে, পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তেই থাকুক, তাদেরকে গ্রেপ্তার করা এবং ধরার দায়িত্ব হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। সেই উদ্যোগ জনগণ দেখতে চায়।’
রিজভী বলেন, ‘খায়রুল হক যে অপরাধ করেছেন নিজের স্বার্থে, এটাতো প্রমাণিত। তিনি শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করতে পারলে পুরস্কৃত হবেন, তিনি পুরস্কৃত হয়েছেন। তিনি চিফ জাস্টিসের মতো পদ থেকে তার চেয়ে ছোট পদে থাকার জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হয়েছেন এবং তার চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনার কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ফান্ড থেকে ১০ লাখ টাকা পেয়েছেন।’
যারা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনকে ধ্বংস করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনার জন্য, সেই নুরুল হুদা এখনও গ্রেপ্তার হয় না কেন এমন প্রশ্নও রাখেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘সেই সিইসি কে এম নুরুল হুদা এখনও কেন গ্রেপ্তার হয় না? এরাই তো হচ্ছে গণতন্ত্র হত্যাকারী, নির্বাচন ধ্বংসকারী, এরাই ভোটার বাদ দিয়ে গরু ছাগলকে দিয়ে ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। এই সমস্ত গণতন্ত্র বিনাশী অমানুষ দানবরা কি আজও গ্রেপ্তারের বাইরে থাকতে পারে? যারা হচ্ছে মূল অপরাধী, যাদের কারণে গত ১৫-১৬ বছর শেখ হাসিনার মতো একজন রক্ত পিপাসু নারী, যিনি ছোট মাসুম বাচ্চাদেরকে গুলি করে হত্যা করতে দ্বিধা করেননি তাকে যারা সহযোগিতা করেছে। তারা কেন আজকে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে? এটা হতে পারে না।’
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুনের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম রনির পরিচালনায় এই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, কোষাধক্ষ্য এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলন, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই জামান সেলিম, আবুল কাশেম, আলমগীর কবির, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য নাজমুল হাসান প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ এখনও ক ন গ র প ত র গণতন ত র ব এনপ র র র জন পর ব র র জন য র ল হক
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকারের সব উদ্যোগে এবি পার্টির সমর্থন রয়েছে: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
দেশের রাজনীতির চলমান ঘটনা প্রসঙ্গে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান ড. ইউনূসের প্রতি আস্থা না রাখার কোনো ঘটনা এখনও ঘটেনি। জাতীয় ঐকমত্য গঠনে ইউনূস সরকার এ পর্যন্ত যত উদ্যোগ নিয়েছে, সবগুলোতে এবি পার্টির সমর্থন রয়েছে। শুক্রবার লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক নিয়ে ভালো কিছু হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। বৃহস্পতিবার বরিশাল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ।
দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও আমলাদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও আমলাদের দেশের সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসা নেওয়া উচিত। তাহলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের দায়িত্বশীলরা সবসময় সতর্ক অবস্থানে থাকবেন। চিকিৎসা সরঞ্জামাদিও সর্বাক্ষণিক সচল রাখবেন। এর সুবিধা ভোগ করবেন সাধারণ মানুষ, যারা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান।
তখন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ গমন ও ফেরত আসা নিয়ে সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন। এর জবাবে ফুয়াদ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ঘোর বিরোধিতা করে বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ যে কোনো ভিআইপির চিকিৎসা নিতে বিদেশ যাওয়া ঠিক নয়। কিন্তু এ দেশে ভিআইপিদের একটা ঐতিহ্য হয়ে গেছে, বিদেশের হাসপাতালে চিকিৎসা না নিলে পরপারে গিয়ে জবাব দেওয়া লাগতে পারে– কেন তুমি গরিবের হাসপাতালে গিয়ে মরলা।
আবদুল হামিদের বিদেশ যাওয়ার পর সরকারে ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাঁর (হামিদ) বিদেশে আসা-যাওয়ার বিষয়ে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তাহলে কেন তাঁকে বিদেশ যেতে বাধা দেওয়া হবে। হামিদের বিদেশ যাওয়ার পর বিমানবন্দরের কয়েকজন কর্মকর্তাকে বরখাস্তের বিরোধিতা করেন ফুয়াদ।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ ঈদের পর তাঁর নির্বাচনী এলাকা বাবুগঞ্জ-মুলাদী উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা ঘুরেছেন। এর তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, দেশে রাজনীতির নামে গুন্ডামি চলছে। সরকারি দপ্তরগুলোতে এখনও ঠিকাদারি কাজের জন্য নানাভাবে চাপ দেওয়া হয়। আগের সরকারের লোকজনদের কাজ দিয়েছেন, আমাদের কেন দেবেন না– এমন
হুমকি-ধমকি দেওয়া হয় কর্মকর্তাদের।
উন্নয়ন বরাদ্দ লুটপাট হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সড়ক নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারে ইউনিয়নে ৮৪ লাখ ও পৌর শহরে আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। অথচ ইউনিয়নে ৩০ লাখ ও পৌর শহরে ৮৪ লাখ টাকায় আন্তর্জাতিক মানের সড়ক নির্মাণ সম্ভব।