শেখ হাসিনার ভয়ে যারা গর্তে লুকিয়ে ছিল, তারা এখন তাদের সংস্কারের তালিম দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।

আমীর খসরু আরও বলেন, আমরা ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি, তার আগে ২৭ দফা দিয়েছি, এর আগে খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ দিয়েছেন। এখন যারা সংস্কারের কথা বলছেন, তাদের কারও চেহারা আমরা দেখিনি। তখন তাদের অনেকেই রাস্তায় ছিল না, এখন বড় বড় কথা বলছে। এর বেশির ভাগের চেহারা আন্দোলন-সংগ্রামে দেখিনি। 

তিনি বলেন, সরকারের আচার-আচরণে মনে হচ্ছে, দেশ বিনিয়োগের স্বর্গরাজ্য হয়ে যাচ্ছে। তবে গেল ১০ মাসে বিনিয়োগ ক্রমান্বয়ে কমছে। আর বিনিয়োগের সার্কাস দেখানো হচ্ছে। এ নিয়ে কারও নাম বলতে চাই না। কারণ, এখন আর মানুষ বোকা না।

ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আমীর খসরু বলেন, যতদিন দেশে নির্বাচিত সরকার না আসবে, ততদিন বিনিয়োগ আসবে না। সেই ঝুঁকিতে বিনিয়োগকারীরা যাবেন না। বিশ্বময় বিনিয়োগের চিত্র হচ্ছে, বিদেশিরা দেখতে চান, বাংলাদেশে একটি নির্বাচিত সরকার আছে কিনা, একটা নির্বাচিত স্থিতিশীল সরকার আছে কিনা। বিনিয়োগ কোনো স্বল্পমেয়াদি বিষয় নয়, এটা দীর্ঘমেয়াদি ব্যাপার।

বাংলাদেশে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে অতীতে কোনো দিন কোনো রাজনৈতিক দল জনগণের কাছে যায়নি বলেও দাবি করেন এই নেতা। তিনি বলেন, দিনের শেষ সংস্কার হতে হবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে কোনো সংস্কার করা যাবে না।

মানবিক করিডোর প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, এ সরকার কি নির্বাচিত সরকার, নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেবে? নির্বাচিত সরকার হলেও তাদের সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে হবে।

ভাসানী জনশক্তির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুলের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আাবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ বক্তব্য দেন। 


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র ব চ ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সফর নিয়ে ক্রিকেটারদের দুশ্চিন্তা

অস্ত্রবিরতি ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের স্বস্তি দিয়েছে। ১৭ মে ফের মাঠে গড়াচ্ছে আইপিএল ও পিএসএলের খেলা। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। বিদেশি ক্রিকেটারদের টুর্নামেন্টে ফিরতে বলা হয়েছে। তবে বিদেশিদের কেউ ফিরবেন, কেউ হয়তো ফিরবেন না। কেউ না এলেও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ দুটির উন্মাদনা কমবে না; বরং পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের কাছে মাঠে ফেরার আনন্দ হবে ঈদের খুশির মতোই। এই খুশি দ্বিগুণ হবে দেশটিতে বাংলাদেশ পাঁচ ম্যাচ টি২০ সিরিজ খেলতে গেলে, নিরাপত্তার কারণে যে সিদ্ধান্ত অনিশ্চয়তার সুতায় ঝুলছে। 

কারণ পাকিস্তানে খেলতে যাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন দেশের ক্রিকেটাররা। গতকাল টি২০ দলের অধিকাংশ ক্রিকেটার ফোনে জানান, বিসিবি থেকে পাকিস্তান সফরে যেতে বলা হলে নিজেদের আপত্তির কথা তুলে ধরবেন। আসলে ভারত-পাকিস্তানের সামরিক হামলা বন্ধ হলেও ভীতি ছড়িয়ে দিয়ে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে। যেটা খেলোয়াড়দের নিরুৎসাহী করছে পাকিস্তান খেলতে যেতে।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) নতুন সফরসূচি পাঠিয়েছে। ২৫ মে পিএসএলের ফাইনাল শেষ করে ২৭ মে থেকে ৫ জুন পাঁচ ম্যাচ টি২০ সিরিজের খসড়া সূচি বিসিবির হাতে থাকলেও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। ভারত সীমান্তের কাছের ভেন্যু ফয়সালাবাদ ও লাহোরকে বহাল রেখেছে পিসিবি। 

গতকাল লাহোরের একজন সাংবাদিক জানান, ২৭ ও ২৮ মে ফয়সালাবাদে দুটি ম্যাচ হবে। বাকি তিন ম্যাচ লাহোরে। বিসিবি রাজি থাকলে ৩০ মে থেকে ৩ জুন বাকি তিন ম্যাচ হতে পারে। মূলত ঈদ সামনে থাকায় বিকল্প পরিকল্পনা। পিসিবি সফর আয়োজনে উদ্যোগী হলেও বাংলাদেশ দলের খেলতে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত নয়। কারণ ক্রিকেটারদের উদ্বেগের বিষয়টি উপেক্ষা করার মতো নয়। 

একজন ক্রিকেটার নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, ‘বিসিবি আমাদের এখনও কিছু বলেনি। বোর্ড সফর করার সিদ্ধান্ত নিলে আমরা আপত্তি জানাব। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে আমরা পাকিস্তানে যেতে চাই না।' 

মিডলঅর্ডারের একজন ব্যাটারের মতে, “পাকিস্তান সফরের ব্যাপারে যে কোনো সিদ্ধান্ত ক্রিকেটারদের মতামত নিয়ে হলে ভালো। আমরা যেতে চাই কিনা বোর্ড নিশ্চয়ই, তা জানতে চাইবে। সত্যিটা হলো এ মুহূর্তে পাকিস্তান সফর নিরাপদ মনে করি না।'

যদিও দুই দিন আগে সংবাদ সম্মেলনে টি২০ অধিনায়ক লিটন কুমার দাস বলেছেন, বিসিবি চাইলে পাকিস্তানে খেলতে যেতে রাজি তারা। সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি বোর্ডের ওপর ছেড়ে দেওয়ায় চাপে পড়ে গেছেন কর্মকর্তারা। বিসিবি মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান বলেন, 'কাল মিটিং করে পাকিস্তান সফরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমার মত হলো, সরকারের কাছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার ছেড়ে দিলে ভালো। নিরাপত্তার বিষয়টি রাষ্ট্র ভালো বুঝবে।' 

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা ১০ মে বলেছিলেন, 'এ মুহূর্তে পাকিস্তানে খেলতে যাওয়া নিরাপদ না।' ওই দিনই সন্ধ্যায় ভারত-পাকিস্তান অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেওয়ায় বিসিবিকে পিসিবির সঙ্গে যোগাযোগ করে নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেন উপদেষ্টা। 

গতকাল ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি মাহফুজুল আলম বলেন, “পাকিস্তানে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার সাপেক্ষে বিসিবিকে সফরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া আছে। তবে তারা রাষ্ট্রের কাছে সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখবে। বিসিবি থেকে এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়নি।' 

পাকিস্তান সফরের টেনশন মাথায় নিয়ে আজ সকাল ১০টায় আরব আমিরাত রওনা হবেন টি২০ দলের ক্রিকেটাররা। আমিরাতের বিপক্ষে ১৭ ও ১৯ মে দুই ম্যাচের সিরিজ খেলবেন তারা। এই সিরিজ চলাকালেই পাকিস্তান সফরের ভবিষ্যৎ জেনে যাবেন লিটনরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ