কাপাসিয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলায় ১২ সাংবাদিক আহত
Published: 17th, May 2025 GMT
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীদের হামলায় অন্তত ১২ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
শনিবার (১৭ মে) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের চেরাগ আলী মোড় এলাকায় এক মতবিনিময় সভায় এ হামলা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির একাংশের উদ্যোগে শনিবার একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খলিলুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেন সেলিম।
দুপুর দেড়টার দিকে সভা শেষ হওয়ার পরপরই মোটরসাইকেলে করে ২০-২৫ জন ব্যক্তি শাহ রিয়াজুল হান্নানের নামে স্লোগান দিতে দিতে সমাবেশস্থলে এসে অতর্কিত হামলা চালান। তারা সভার চেয়ার, টেবিল, মাইক, সাউন্ডবক্স ও প্যান্ডেল ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে পাশের একটি কক্ষে অবস্থানরত সাংবাদিকদের ওপরও হামলা চালানো হয়।
হামলায় গুরুতর আহত হন যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান রকি হোসেন (২৬)। ভিডিও ধারণ করতে গেলে তাকে সড়কে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। হামলাকারীরা তার ক্যামেরা, আইডি কার্ড, মাইক্রোফোন ও ল্যাপটপ ছিনিয়ে নেয়।
রকি হোসেনকে গুরুতর আহত অবস্থায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেন সেলিম বলেছেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে একটি মতবিনিময় সভা করছিলাম। সভা শেষে হঠাৎ করে একটি দল এসে ভাঙচুর ও হামলা চালায়। তারা সাংবাদিকদের ওপরও হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।”
হামলার পর কাপাসিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে, এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হামলার ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
ঢাকা/রফিক সরকার/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে হাসপাতালের বারান্দায় ২ নারীর সন্তান প্রসব
সিলেট ওসমানী হাসপাতালের বারান্দায় ১০ মিনিটের ব্যবধানে দুই নারী সন্তান প্রসব করেছেন। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে।
স্বজনদের অভিযোগ, প্রসব বেদনায় ছটফট করলেও লেবার ওয়ার্ডের কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সরা জানারও পরও সেবা দিতে এগিয়ে আসেনি প্রসূতিদের। পরে হাসপাতালের বারান্দায় নিজেদের পরনের কাপড় দিয়ে আড়াল করে সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা করেন অন্যান্য রোগীর স্বজনরা।
বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। দুই প্রসূতির একজন এসেছিলেন গোলাপগঞ্জের বাউসি গ্রাম থেকে। তিনি ওই গ্রামের রতন দাসের স্ত্রী মিতালী দাস (২৫)। তিনি একটি পূত্র সন্তান প্রসব করেছেন।
অন্যজন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাটিবহর গ্রামের মো. শাহিনের স্ত্রী সুমি বেগম (১৯)। তিনিও একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দুই প্রসূতির স্বজনদের কাছ থেকে জানা যায়, এদিন বিকেল ৪টার দিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২য় তলার ১৫নং ওয়ার্ডে সামনে পৌঁছান দুই প্রসূতি ও তাদের স্বজনরা। স্বজনরা কর্তব্যরত নার্সের কাছে গেলেও তারা তাদের কথা শোনেনি বরং সিরিয়াল ধরার নির্দেশ দিয়ে দুই নার্স নিজেদের মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। রোগীর অবস্থা জরুরি বলার পরেও তারা জানিয়ে দেন তাদের করার কিছু নেই।
এ অবস্থায় বসে থাকা একজন প্রসূতির চিৎকার ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। বসা অবস্থাতেই তিনি একটি পূত্র সন্তানের জন্ম দেন। তখন উপস্থিত স্বজন ও অন্যান্যরা দ্রুত আড়াল দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
এই আড়াল দিতে গিয়েও তারা নার্সদের কাছ থেকে কোনো সহযোগীতা পাননি। পর্দা করার জন্য একটা চাদর চাইলেও তারা সাড়া দেননি। পরে সেখানে উপস্থিত নারীরা নিজেদের পরনের কাপড় দিয়ে পর্দার ব্যবস্থা করেন। প্রথমজনের ১০ মিনিট পরে অপর প্রসূতিও একইভাবে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
এ ব্যাপারে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, “যে ওয়ার্ডটিতে সন্তান প্রসব করেছেন সেটা পুরোটাই লেবার ওয়ার্ড। এখানে প্রতিদিন দেড় থেকে ২০০ নারী আসেন। যারা বিভিন্ন উপজেলা থেকে রেফার্ড হয়ে আসেন। দেখা যায় তারা অন্তিম মুহূর্তে আসেন তখন সিরিয়াল থাকে না। এছাড়া একটি বাচ্চা চার মাস আগে ডেড ছিল। সেটি মৃত অবস্থায় জন্ম নিয়েছে। অপর মায়ের ব্যাপারে আমরা খোঁজ নিচ্ছি।”
তিনি জানান, কোন এক রোগীর স্বজন লেবার ওয়ার্ডের ছবি তুলে বাইরে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এখানে ডাক্তার বা নার্সদের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি ছিল না। সবাই ওভার লোডেড হয়ে কাজ করছে। তার জন্য চাইলেও আমরা শতভাগ সার্ভিস দিতে পরি না। সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।
তিনি বলেন, “আমরা আন্তরিকভাবে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।”
ঢাকা/নূর/এস