ঘাট-চোরাই তেলের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষে সংঘর্ষ
Published: 29th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী-সংলগ্ন ঘাট ও চোরাই তেলের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা ইউনিয়নের ডাঙ্গারচর ৯ নম্বর বিওসি ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন সেনাসদস্যরা।
জানা গেছে, ঘাটের নিয়ন্ত্রণ, চোরাই তেল ওঠানোর সিরিয়াল ও ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে সম্প্রতি বিরোধ চলছিল। গত মঙ্গলবার রাতে এক পক্ষের নেতাকর্মীরা ডাঙ্গারচর ৯ নম্বর বিওসি ঘাট দখলের ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে বুধবার সকালে উভয় পক্ষ ঘাটে অবস্থান নেয়। এ সময় উত্তেজনা তৈরি হলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় ঘাট এলাকা থেকে জুলধা ইউনিয়ন ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি বাহারসহ চারজনকে আটক করে স্থানীয় সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে সন্ধ্যায় আটক ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জুলধা এলাকায় কর্ণফুলী নদীকেন্দ্রিক ‘পিলাই তেল’ (চোরাই তেল) ব্যবসায় এক সময় একক আধিপত্য ছিল আওয়ামী লীগের আব্দুল শুক্কুর ওরফে ‘তেল শুক্কুর’-এর। গত বছরের আগস্টে দেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর এ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীর মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে দুই পক্ষের মধ্যে ১৫ দিন করে ভাগাভাগির বিষয়ে সমঝোতা হয়। পরে একটি পক্ষ সেখানে একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করলে অপর পক্ষ বাধা দেয়।
ঘটনার বিষয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফ জানান, জুলধাতে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করেছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তী সময়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে থানায় কোনো মামলা বা অভিযোগ দায়ের হয়নি
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ ব এনপ র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।