বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে। এ কমিটির বিরুদ্ধে দলের চারটি পক্ষ সক্রিয়। তারা সব কর্মসূচি পৃথকভাবে পালন করে। বিষয়টি নিয়ে জেলা ও মহানগর নেতারা প্রকাশ্যে কথা না বললেও শুক্রবার যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে বিরোধিতাকারীদের ‘কুচক্রী মহল’ আখ্যা দেওয়া হয়। 
এদিকে কমিটির বাইরে গিয়ে কর্মসূচি পালনকারীদের ‘কুচক্রী মহল’ আখ্যা দলের বিরোধ নতুন করে তেতে উঠেছে। শব্দটি নিয়ে ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন কমিটির বাইরে থাকা নেতারা। যদিও ওই বিবৃতিতে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।  
শুক্রবার রাতে জেলা (দক্ষিণ) এবং মহানগর আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবদের দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘একটি কুচক্রী মহল বিভিন্ন সময়ে জেলা ও মহানগর বিএনপির মধ্যে বিভাজন ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে।  এসব থেকে বিরত না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয় বিবৃতিতে। এতে স্বাক্ষর করেন মহানগরের আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার, জেলার (দক্ষিণ) আহ্বায়ক আবুল কালাম শাহীন ও সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহীন। 
মহানগর ও জেলা কমিটির সঙ্গে বিপরীত মেরুতে থাকা গ্রুপগুলোর নেতৃত্বে আছেন কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার, মহানগরের সাবেক সদস্য সচিব মীর জাহিদুল ইসলাম, জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম রাজন ও মহানগরের জেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন। আসছেন। 
সরোয়ারপন্থি হিসেবে পরিচিত মহানগরের সাবেক সহসভাপতি মহসিন মন্টু বিবৃতির নিন্দা জানিয়ে বলেন, বিবৃতিদাতারা রাজনৈতিক ভাষার ব্যবহার জানেন না। এ জন্য আমাদের কুচক্রী মহল বলেছেন। 
সাবেক সদস্য সচিব মীর জাহিদ বলেন, ‘আমরা ছাত্রদল থেকে বিএনপি হয়েছি। বিবৃতিদাতা চারজনের তিনজনেই অন্য দল থেকে এসেছেন। তিনি আরও বলেন, কর্মসূচিতে আমাদের ডাকা হয় না। তাই ভিন্নভাবে কর্মসূচি পালন করেছি। 
বিবৃতি দেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে মহানগরের সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার সমকালকে বলেন, মহানগর ও জেলার বৈধ কমিটি রয়েছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যে কোনো কর্মসূচি কমিটির অধীনে হবে। কমিটি উপেক্ষা করে বরিশাল বিএনপির নাম ব্যবহারকারীরা দলে বিশৃ‌ঙ্খলকারী। তাদের বিষয়ে কেন্দ্রে জানানো হবে।  
জেলার সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহীন বলেন, কেন্দ্র থেকে যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাদের বাইরে গিয়ে দলীয় ব্যানার ব্যবহার সমীচীন নয়। যাদের পদ নেই, তারা কি করে ব্যানারে ‘বিএনপি জেলা ও মহানগর’ লিখে কর্মসূচি করেন? কর্মীরা এসব ঘটনায় বিভ্রান্তিতে পড়ছে। জেলা ও মহানগর বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারেম্যানকে এসব বিষয়ে জানানো হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ কম ট র ব ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হচ্ছে সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে

জালিয়াতির মাধ্যমে এলসির বিপরীতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে পাঁচটি মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন, তাতে বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানও আসামি হতে যাচ্ছেন।

আজ সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয় মামলাগুলোর অনুমোদন দেয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি, শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান রহমানের পাশাপাশি তাঁর ছেলে, ভাই, ভাতিজা, জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে এই মামলাগুলো হবে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, অনুমোদিত পাঁচ মামলায় ৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে মোট ২১ কোটি ৫৫ লাখ ২৮ হাজার ৮০১ মার্কিন ডলার বা প্রায় ১ হাজার ৯৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলায় সালমান এফ রহমান ছাড়া আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর ছেলে শায়ান এফ রহমান, ভাই বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সোহেল এফ রহমান, সোহেল রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমান, বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচালক ইকবাল আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওসমান কায়সার চৌধুরী, পরিচালক এ বি সিদ্দিকুর রহমান, মাসুদ ইকরামুল্লাহ খান, শাহ মঞ্জুরুল হক ও রীম এইচ শামসুদ্দোহা।

এ ছাড়া স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ারুল বাশার ও পরিচালক নাসরিন আহমেদ, ক্রিসেন্ট অ্যাকসেসরিজের এমডি আবু নাঈম মাহমুদ সালেহিন ও পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তানভীর, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি মোহাম্মদ আলিফ ইবনে জুলফিকার ও পরিচালক নুসরাত হায়দার, পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি ওয়াসীউর রহমান ও পরিচালক রিজিয়া আক্তার, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি সালাউদ্দিন খান মজলিস ও পরিচালক আবদুর রউফ, কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেডের এমডি মাহফুজুর রহমান খান ও পরিচালক সৈয়দ তানবির এলাহী আফেন্দী সম্ভাব্য আসামির তালিকায় রয়েছেন।

জনতা ব্যাংকের মধ্য থেকে আসামি করা হচ্ছে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুছ ছালাম আজাদ ও আবদুল জব্বার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাপক আবদুর রহিম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক শহিদুল হক, অবসরপ্রাপ্ত ডিজিএম (রপ্তানি বিভাগ) মমতাজুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক সালেহ আহম্মেদ, অবসরপ্রাপ্ত এজিএম মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক এজিএম (রপ্তানি) মোহাম্মদ শাজাহান, সাবেক এজিএম (রপ্তানি) হুমায়ুন কবির ঢালী ও প্রিন্সিপাল অফিসার শ ম মাহাতাব হোসাইন বাদশাকে।

দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিদের যোগসাজশে জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচার করা হয়। এর মধ্যে পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেডের নামে ৫ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ দশমিক ২৫ ডলার, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের নামে ১ কোটি ৮৮ লাখ ৩ হাজার ৬৫৮ দশমিক ৯১ ডলার, কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেডের নামে ৮ কোটি ৪০ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৭ দশমিক ৪৫ ডলার, স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের নামে ১ কোটি ৪৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৪০ ডলার এবং ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে ৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৮২ দশমিক ৪৬ ডলার আত্মসাৎ হয়।

সব মিলিয়ে আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২১ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা।

সাবেক সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েক দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে রয়েছেন। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ