রোজার ঈদের চার ছবি মুক্তি পাচ্ছে কোরবানির ঈদে
Published: 2nd, June 2025 GMT
গত ইদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া শাকিব খানের ‘বরবাদ’, সিয়াম আহমেদ অভিনীত ‘জংলি’, আফরান নিশোর ‘দাগি’, এবং মোশাররফ করিমের ‘চক্কর ৩০২’ যারা দেখতে পারেননি তাদের সুখবর। এবার একসঙ্গে ছবিগুলো মুক্তি পেতে যাচ্ছে ওটিটিতে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে মুক্তিওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পাবে ছবিগুলো। চার সিনেমা নিয়ে চরকির এই আয়োজনের নাম দেয়া হয়েছে ‘বিরাট গুরুর হাট’ পাওয়ার্ড বাই গ্রামীণফোন।
রোজার ঈদের তুমুল আলোচিত সিনেমা ‘বরবাদ’। নির্মাতা মেহেদী হাসান হৃদয় তার পরিচালিত প্রথম সিনেমাতেই করেছেন বাজিমাত। এ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় নতুন অবতারে হাজির হন শাকিব খান।
প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমি বলেন, “বরবাদ’ ব্যবসা সফল একটি সিনেমা। দেশ-বিদেশের অনেক মানুষ বরবাদ দেখেছেন, আবার অনেকে এখনও দেখার সুযোগ পাননি। তারা এখন সিনেমাটি দেখার সুযোগ পাবেন ওটিটিতে।”
‘দাগি’ সিনেমার মাধ্যমে রোজার ঈদে বড় পর্দা কাঁপিয়েছেন নির্মাতা শিহাব শাহীন এবং জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো। আলোচিত সিনেমাটি কোরবানি ঈদে ওটিটিতে দেখতে পারবেন দর্শকরা।
আফরান নিশো এ বিষয়ে বলেন, “এই ঈদে সিনেমা হলের আনন্দ হবে ঘরে বসেই। ‘দাগি’ আসছে চরকিতে। পরিবার নিয়ে ঘরে বসেই দেখুন সিনেমাটি।”
‘দাগি’ সিনেমার পরিচালক শিহাব শাহীন বলেন, ‘আমার বিশ্বাস আমার সিনেমাটি চরকির দর্শক পছন্দ করবে। অনেকেই যারা সিনেমাটি দেখতে পারেননি, তারা দেখার সুযোগ পাবেন এবং আমার আশা দর্শকদের ভালো লাগবে।’
রোজার ঈদে প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের কাঁদিয়েছে ‘জংলি’। পর্দায় জনি ও পাখির সম্পর্কের রসায়ন দর্শকদের নিয়ে গেছে এক ইমোশনাল রোলারকোস্টারে।
অভিনেতা সিয়াম আহমেদ বলেন, “অনেক বছর পর পরিবার নিয়ে দেখার মতো একটি সিনেমা নির্মিত হয়েছে। আমরা পুরোপুরি কমার্শিয়াল প্যাকেজিংয়ে ‘জংলি’ বানিয়েছি। সাধারণত ঈদের ছুটিতে সবাই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান, আনন্দ করেন। সেই আনন্দে এবার যুক্ত হতে পারে ‘জংলি’। আমার বিশ্বাস সিনেমাটি সবাইকে নতুন ভাবনার খোরাক দেবে। পারিবারিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে সাহায্য করবে সিনেমাটি।”
সম্পর্ক, নানা জটিলতা আর রহস্যে ঘেরা সিনেমা ‘চক্কর ৩০২’। শরাফ আহমেদ জীবন পরিচালিত সিনেমায় মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম। মইনুল নামের এক পুলিশ কর্মকর্তার চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
নির্মাতা শরাফ আহমেদ জীবন বলেন, “থ্রিলার ঘরানার সিনেমা ‘চক্কর ৩০২’। এখানে গল্প, রহস্য আর অভিনয় দারুণভাবে মিশে গেছে। দেশ-বিদেশে মোশাররফ করিমের ভক্তরা সিনেমাটি দেখার জন্য অপেক্ষা করেছেন। তারা আমাকে বিভিন্নভাবে জানানোর চেষ্টা করেছেন সিনেমাটি দেখার আগ্রহের কথা। এবার আমি বলতে পারছি,
উল্লেখ্য, সিনেমা চারটি মুক্তির তারিখ শিগগিরই জানানো হবে চরকির ফেসবুক পেজে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদ র স ন ম র জ র ঈদ কর ছ ন আহম দ বরব দ
এছাড়াও পড়ুন:
ডেঙ্গুতে জুনের চেয়ে জুলাইয়ে মৃত্যু ও সংক্রমণ দ্বিগুণ
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় এখন প্রায় এমন কোনো এলাকা নেই, যেখানে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব বা ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর নিচে। এমন অবস্থা চট্টগ্রাম, বরগুনা, কুমিল্লা, কক্সবাজার শহরেরও। এডিস মশার লার্ভা বা শূককীটের ঘনত্ব পরিমাপের স্বীকৃত পদ্ধতি হলো ‘ব্রুটো ইনডেক্স (বিআই)’। এই মানদণ্ডে লার্ভার ঘনত্ব ২০ শতাংশের বেশি হওয়া মানে সেখানে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হবে।
মশা নিয়ে নিয়মিত জরিপ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। তাঁর নেতৃত্বে সম্প্রতি গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।
দেশে এডিস মশা যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে এ মশার কামড়ে হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, জুন মাসের তুলনায় ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা জুলাইয়ে (৩০ জুলাই পর্যন্ত) দ্বিগুণের বেশি। আর সংক্রমণের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।
সংক্রমণ ও মৃত্যু দুই-ই বেশি
গতকাল পর্যন্ত দেশে ২০ হাজার ৭০২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮১ জনের। শুধু জুন মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ছিল ১৯ জনের। আর চলতি মাসে মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের। জুনে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫ হাজার ৯৫১ জন। আর এ মাসে ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৪০৬ জন। চলতি মাসের সংক্রমণের এ সংখ্যা আগের ছয় মাসের বেশি। জুন থেকে জুলাই মাসে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১০ হাজার ২৯৬ জন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে যত রোগী আক্রান্ত হয়েছে, এর মধ্যে মাত্র ২১ শতাংশ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার। বাকি ৭৯ শতাংশ রোগীই ঢাকার বাইরের। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮৬ রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
এ মাসের শুরুতে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি হলেও প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তি বেড়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এবার উত্তর সিটিতে রোগী ভর্তি কম। গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৪২ জন রোগী উত্তরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন, আমরা তাঁদের প্রত্যেকের তথ্য নিয়ে দেখেছি, তাঁদের মধ্যে মাত্র ১৮ জন এই সিটির বাসিন্দা। বাকিরা বাইরের।’
মৃত্যু বেশি গতবারের চেয়ে
এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে যে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে ৪৬ জন মারা গেছেন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। অন্যরা দেশের অন্যত্র মারা গেছেন। গত বছর (২০২৪) এ সময় ডেঙ্গুতে মারা গিয়েছিলেন ৫৬ জন।
ডেঙ্গুতে এবারের মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার পেছনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাফিলতি, স্থানীয় সরকারের সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়হীনতা, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সরঞ্জামের অভাব এবং ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক প্রচারের অভাবকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ বিভাগের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক হালিমুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব নেই। প্রতিটি হাসপাতালকে পরিচালন বাজেট থেকে ব্যয় করতে বলা হয়েছে। মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার কারণ রোগী আসছে অনেক দেরিতে। তখন আর চিকিৎসকের কিছু করার থাকে না।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ডেঙ্গুতে রোগী ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার কারণ সরকারের গতানুগতিক কাজ এবং অব্যবস্থাপনা। মানুষের কাছে ডেঙ্গু শনাক্তের সুযোগ পৌঁছায়নি। নীতিনির্ধারণী স্তরে এ নিয়ে কোনো ভাবনা আছে, এমন একেবারেই মনে হয় না।