মেক্সিকোতে মাদক পুনর্বাসন কেন্দ্রে আগুনে ১২ জনের মৃত্যু
Published: 2nd, June 2025 GMT
মেক্সিকোর মধ্যাঞ্চলে একটি মাদক পুনর্বাসন কেন্দ্রে আগুন লেগে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। এতে আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার গুয়ানাহুয়াতো রাজ্যের সরকারি কৌঁসুলির দপ্তর এ কথা জানায়।
আগুন লাগার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ওই এলাকায় সক্রিয় মাদক চক্রগুলোর বিরুদ্ধে আগেও এমন কেন্দ্রগুলোতে হামলার অভিযোগ রয়েছে। এসব চক্র জোর করে রোগীদের দলে ভেড়াতে চায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
গুয়ানাহুয়াতো রাজ্যের সরকারি কৌঁসুলির দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তদন্তকারীরা ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছেন এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এর মাধ্যমে এই মর্মান্তিক ঘটনার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
চলতি বছরের এপ্রিলে মেক্সিকোর সংকটাপন্ন সিনালোয়া রাজ্যে আরেকটি মাদক পুনর্বাসন কেন্দ্রে গুলিবর্ষণের ঘটনায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছিল। ধারণা করা হয়, মাদক চক্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তখন রোগীদের হত্যা করা হয়েছিল।
সিবিএস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৬ সাল থেকে অপরাধ দমনে অভিযান শুরু করে মেক্সিকো সরকার। সরকারি সূত্রমতে, এর পর থেকে উত্তর আমেরিকার দেশটিতে সহিংসতায় প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন (২১) বিজিবির সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আরফান হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর
কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি
এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন আরফান হোসেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।’’
আরফান হোসেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনটারী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা নুর ইসলাম দিনমজুর ও মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। পরিবারের অন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহান উদ্দিন স্নাতক পড়ছেন এবং আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে। দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে।
আরফান হোসেন বলেন, ‘‘ফেলানী হত্যার পর সারা দেশের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকে ইচ্ছে ছিল; বিজিবিতে চাকরি করব। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’’
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘‘ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে, দেশবাসী আর বিজিবি সব সময় আমাদের পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেয়েছে। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’’
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। তার নিথর দেহ কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা ঝুলে ছিল। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠে।
ঢাকা/সৈকত/রাজীব