বান্দরবানে ধর্ষণের শিকার ম্রো কিশোরী
Published: 8th, June 2025 GMT
বান্দরবান সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নে ১২ বছরের এক ম্রো কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে আজ রোববার সকালে বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযুক্ত একই জনগোষ্ঠীর ৪০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। ঘটনার পর তিনি পলাতক বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা।
পাড়াবাসীর ভাষ্য, শনিবার রাতে পাড়ার দুই কিশোরীকে সঙ্গে নিয়ে ওই ব্যক্তি ঝিরিতে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে যান। মাছ ধরতে ধরতে তাঁরা পাড়া থেকে বেশ দূরে চলে যান। রাত গভীর হলে ওই ব্যক্তি কিশোরীদের জানান, এত রাতে বাড়ি ফেরা সম্ভব হবে না। ঝিরির পাশে একটি জুমঘরে (জুমচাষিদের অস্থায়ী ঘর) রাত কাটাতে হবে। ওই জুমঘরে এক কিশোরী ঘুমিয়ে থাকার সময় তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়।
কিশোরীর মা জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে ভোররাতে একা বাড়ি ফিরে আসে। এসে অসুস্থ অবস্থায় ঘটনাটি জানায় এবং অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ম্রো স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তনয়া ম্রো জানান, ওই এলাকায় কিছু ম্রো পরিবার বসবাস করে, যারা খুবই দরিদ্র। অভিযুক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে আগে থেকেই খারাপ আচরণের অভিযোগ ছিল বলে শুনেছেন।
হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কিশোরী শারীরিকভাবে গুরুতর আহত হয়েছে এবং মানসিকভাবে প্রচণ্ড আঘাতপ্রাপ্ত। তাকে রক্ত দেওয়া হয়েছে এবং জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
বান্দরবান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু নাছের বলেন, কিশোরী ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এবং চিকিৎসকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে ধর্ষণের সত্যতা পাওয়া গেছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ন দরব ন
এছাড়াও পড়ুন:
‘ভূমিকম্পে ছিন্নভিন্ন হওয়া দেশকে স্থিতিশীলতায় ফিরিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার’
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের ১ বছর পূর্তিতে সরকারের কার্যক্রম, চ্যালেঞ্জ ও অগ্রগতি তুলে ধরেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম।
তিনি বলেছেন, “আমরা ভয়াবহ এক ভূমিকম্পে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া একটি দেশ পেয়েছিলাম। সেখান থেকে আবার স্থিতিশীলতার পথে ফিরিয়ে আনার কাজটা খুব কঠিন ছিল, কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার তা করতে পেরেছে।”
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে আসিফ নজরুল: জাস্ট ওয়েট করুন, কিছু দিনের মধ্যে ঘোষণা
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর
প্রেস সচিব বলেন, “আমরা দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ১০ দিনের মাথায় বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সেই কুখ্যাত ‘স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বাতিল করেছি। আইনটির মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে লাখ কোটি টাকা লুট করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ট্রেন্ডার প্রক্রিয়ার তোয়াক্কা না করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো—‘আমি আর আমার দুলাভাই মিলে ঠিক করতাম কে কোথায় কাজ পাবে।’ এমন দুর্নীতির আইনি সুরক্ষা কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে থাকতে পারে না।”
তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। আমরা প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের কাজে হাত দিয়েছি, কোথাও বসে থাকিনি। পুলিশ, বিচার বিভাগ, রাজস্ব বিভাগ, এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের সব জায়গায় সংস্কার আনার চেষ্টা করেছি “
তিনি আরো বলেন, “পুলিশ আমাদের একটা ২১ পাতার রিপোর্ট দিয়েছে। আগে যেভাবে জনদমন হত, এখন তার পরিবর্তে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে। গত ১ বছরে কোথাও পুলিশ মারণাস্ত্র ব্যবহার করেছে কি না দেখুন।”
সংলাপে তিনি বিচার বিভাগের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “জাজ নিয়োগে আমরা বড় ধরনের সংস্কার এনেছি। যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিচারক নিয়োগ হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে আমরা যতটা সম্ভব স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছি। বিচার বিভাগকে রাজনীতিমুক্ত করার চেষ্টা চলছে।”
“মূল্যস্ফীতি এখন ৮ শতাংশের কাছাকাছি নেমে এসেছে। এটা কমিয়ে আনা সহজ কাজ নয়। একবার মূল্যস্ফীতি আটকে গেলে তাকে নামিয়ে আনা খুবই কষ্টসাধ্য। আমরা সেটা করতে পেরেছি,” যুক্ত করেন প্রেস সচিব।
প্রেস সচিব আরো বলেন, “টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত পদক্ষেপ রিজার্ভ বাড়াতে সহায়ক হয়েছে।”
রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন, “এনবিআরে হস্তক্ষেপ করে কিছু সংস্কার এনেছি। এনবিআরের এই সংস্কারের সুফল শিগগিরই দৃশ্যমান হবে। বিআইডিএ-তেও সংস্কার এনেছি। আগামী সরকারের সময় বিদেশি বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী।”
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “একটি-দুটি জঘন্য অপরাধ ঘটেছে, এটা আমরা অস্বীকার করি না। কিন্তু সামগ্রিক চিত্র দেখুন। আমাদের পুলিশকে পরিসংখ্যান প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। আমরা তথ্য লুকাই না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন একটি স্থিতিশীল অবস্থায় আছে এবং ভবিষ্যতে আরো উন্নতি হবে। পুলিশের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে।”
শফিকুল আলম বলেন, “আমাদের দায়িত্ব গ্রহণের ১ বছর হয়ে গেছে। আমরা কতটুকু সফল বা ব্যর্থ, তা জনগণ বিচার করবে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, এ সরকার দেশের ভিতকে আবার শক্ত করে তুলতে পেরেছে।”
ঢাকা/এএএম/মেহেদী