একদিকে হারমোনিয়ামে সুরের ঝরনা, অন্যদিকে কৌতুক ছড়ানো করপোরেট জবাব—এই দুয়ে মিলে রীতিমতো ভাইরাল ‘বাবা দিবস স্পেশাল’ হয়ে উঠলেন ঢালিউডের কিং শাকিব খান ও তার দুই ছেলে, জয় ও বীর।
রবিবার (১৫ জুন) রাতে বাবা দিবস উপলক্ষে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে দুটি আলাদা ভিডিও। একটির নায়ক বড় ছেলে আব্রাম খান জয়, অন্যটি তার ছোট ভাই শেহজাদ খান বীর। 

জয়ের ভিডিওটি এসেছে মায়ের (অপু বিশ্বাস) ব্যবস্থাপনায় চালিত ফেসবুক পেজ থেকে। সেখানে দেখা যায়, ছোট্ট জয় বাবার পাশে বসে হারমোনিয়ামে গান করছে। ক্যাপশনে লেখা, “আমার অসাধারণ বাবাকে বাবা দিবসের শুভেচ্ছা। পৃথিবীর সেরা বাবাকে নিয়ে উদযাপন করছি।”

ভিডিওতে স্পষ্ট—শাকিব শুধু বড় পর্দার তারকা নন, জয়ের কাছে তিনিই তার জীবনের সুর।

আরো পড়ুন:

পাইরেসির কবলে শাকিবের ‘তাণ্ডব’!

সিরাজগঞ্জে শাকিবের ‘তাণ্ডব’ নেই আশানুরূপ দর্শক

অন্যদিকে বীরের মজার ভিডিওটি এসেছে তার মা বুবলীর পেজ থেকে। ক্যামেরার সামনে বাবা শাকিব জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমার বাবা কে?’ বীর বলে, ‘থালাইবা.

..’ শাকিব আবার জানতে চান, ‘আমরা কোন গ্রুপের মালিক?’ উত্তরে বীর বলে, ‘এসকে গ্রুপ।’ এই ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা, “যেমন বাবা তেমন ছেলে। বাবার ভালোবাসা সবসময় ছেলের হৃদয়ে অঙ্কিত থাকবে।” 

এই দুটি ভিডিও মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। লাখ লাখ মানুষ দেখেছেন এবং মন্তব্যে ভরিয়ে দিয়েছেন ভালোবাসা ও প্রশংসায়। অনেকেই বলছেন— “শাকিব যেমন সুপারস্টার, তেমনই সুপারড্যাড। ব্যস্ততার মাঝেও ছেলেদের সময় দেওয়া যে কারো পক্ষে সম্ভব, শাকিব সেটার সুন্দর উদাহরণ।” 

এদিকে, ঈদুল আজহায় মুক্তি পাওয়া ‘তাণ্ডব’ সিনেমা এখনো প্রেক্ষাগৃহে সগৌরবে প্রদর্শিত হচ্ছে। শাকিব খান এখন যেন দুই ফ্রন্টেই রাজত্ব করছেন—একদিকে সিনেমা হলে, আরেকদিকে দুই ছেলের হৃদয়ে।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

কাজের আনন্দই জীবনের সার্থকতা

জন্মদিনের অনুষ্ঠান নয়, তবে অনানুষ্ঠানিক আয়োজনটি ছিল সে উপলক্ষেই। আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাবিদ ও সুবক্তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন ছিল গত ২৫ জুলাই। তাঁর অগণিত অনুরাগীরা চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মিলিত হতে। উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে, তারপর আর জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে কিছুতেই সম্মত হননি তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ষষ্ঠতলায় কেন্দ্রের প্রাক্তনী ও তাঁর কিছু ঘনিষ্ঠজন আলাপচারিতার এক ঘরোয়া আয়োজন করেছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে। সেখানে তিনি বললেন, কাজের মধ্য দিয়ে জীবনে যে আনন্দ পেয়েছেন, সেটিই জীবনের সার্থকতা। এই আনন্দই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে, শক্তি জোগায়।

এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তিনি তাঁর চিরপরিচিত সরস অথচ বুদ্ধিদীপ্ত গভীর তাৎপর্যময় কথায় উত্তর দিয়েছেন। কবিতা, সাহিত্য, শিল্প থেকে শিক্ষা, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংগঠন, প্রেম–ভালোবাসা—সবকিছু উঠে আসে প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কথোপকথনে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শুরু করে বিশ্বসাহিত্যের বহু কালজয়ী লেখকের রচনা থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়েছেন তিনি। এক অন্তরঙ্গ প্রাণবন্ত আবহ বিরাজমান ছিল সন্ধ্যা থেকে অনেকটা রাত অবধি এই আয়োজনে।

আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় শুরুতেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের একটি কবিতা আবৃত্তি করে জানতে চান, তিনি কবিতার চর্চা করেননি কেন? জবাবে তিনি বলেন, কবি শামসুর রাহমান একবার তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে কবিত্বের ঘাটতি আছে। তাঁর নিজেরও সে রকম মনে হয়েছে। তারপর সাহিত্য পত্রিকা কণ্ঠস্বর প্রকাশ ও অনেক রকম কাজ করতে গিয়ে আর কবিতা লেখা হয়ে ওঠেনি।

অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, এখন একটা কঠিন সময় যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে দেখেন, কী আশা করেন তাদের কাছে?

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘তরুণেরা কী হবে, তা তরুণদের ওপরে নির্ভর করে না। সেটা নির্ভর করে আমরা তাদের কী বানাতে চাই, তার ওপর। দেখতে হবে তরুণদের গড়ার মতো আমাদের ক্ষমতা কতটা আছে। অর্থাৎ শিক্ষক কেমন হবে, তার ওপরে নির্ভর করে তাঁর ছাত্র কেমন হবে। সক্রেটিস শিক্ষক ছিলেন বলে ছাত্র প্লেটো হয়েছেন। প্লেটোর শিক্ষা পেয়ে ছাত্র অ্যারিস্টটল হতে পেরেছেন। বড়দের যদি বড়ত্ব না থাকে, তবে ছোটরা বড় হতে পারে না। দুর্ভাগ্য যে আমরা বড়রা তাদের সামনে আদর্শ দাঁড় করাতে পারিনি। ফলে এখন বড়দেরই ছোটদের পেছনে দাঁড়াতে হচ্ছে।’

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম জানতে চান, তিনি এত বিচিত্র ধরনের এত বিপুল কাজ করেছেন। এই প্রাণশক্তি পান কেমন করে?

উত্তর দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘শক্তি আসে আনন্দ থেকে। কাজ করতে পারাটাই আনন্দের। আর সব সময় আশাবাদী থাকি। আশা কখনো শেষ হয় না। আশা শেষ মানে আমি শেষ।’

আলাপচারিতায় আরও অংশ নেন দুদক চেয়ারম্যান এম এ মোমেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, অভিনয়শিল্পী খায়রুল আলম সবুজ, কথাশিল্পী আনিসুল হক, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, উপস্থাপক আবদুন নূর তুষার, অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি, মশিউর রহমান, আলী নকী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রাক্তনী খাদিজা রহমান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ