চার দশক কেটে গেছে। তবু ১৯৮৫ সালের জানুয়ারির এক সন্ধ্যার স্মৃতি এখনো স্পষ্ট লক্ষ্মী শাস্ত্রীর মনে। ছেলের কীর্তি বলে কথা! মায়ের নামের সঙ্গে শাস্ত্রী দেখেই হয়তো আন্দাজ করতে পেরেছেন কার কথা বলা হচ্ছে। কীর্তিটা কী? ছয় বলে ছয় ছক্কা।

টি-টোয়েন্টির যুগে এটার মাহাত্ম্য হয়তো খানিকটা কমেছে। প্রতিনিয়ত না হলেও কালেভদ্রে হয়েই থাকে। তবে রবি শাস্ত্রী যখন ছয় বলে ছয়টি ছক্কা মেরেছেন, তখন ক্রিকেট ইতিহাসে এই কীর্তি গড়া দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান।

রবি শাস্ত্রী ৬ ছক্কা মেরেছেন রঞ্জি ট্রফির ম্যাচে। মুম্বাইয়ের হয়ে বরোদার বাঁহাতি স্পিনার তিলক রাজের বলে। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ছয় বলে ৬ ছক্কা মারা গ্যারি সোবার্স মেরেছিলেন ইংলিশ কাউন্টিতে, নটিংহামশায়ারের হয়ে গ্ল্যামরগনের বাঁহাতি স্পিনার ম্যালকম ন্যাশ।

এখন কেউ কোনো কীর্তি গড়লে মুহূর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়। তখন তো আর এমন ছিল না। ছেলের ৬ ছক্কা মারার কীর্তি লক্ষ্মী শাস্ত্রী জেনেছিলেন এক ভেলপুরি বিক্রেতার কাছ থেকে।

এত বছর পরও সেই দিনের গল্প বলার সময় আবেগ আর গর্বে কাঁপছিল লক্ষ্মী শাস্ত্রীর কণ্ঠ। বোম্বে জিমখানায় ‘স্পোর্টস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব মুম্বাই’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে ছেলে রবি শাস্ত্রীর হয়ে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার গ্রহণ করতে গিয়ে ভাগ করে নিয়েছেন নিজের সেই অমূল্য স্মৃতি। যিনি পুরস্কারটি পেয়েছেন, সেই রবি শাস্ত্রী তখন দ্বিতীয় টেস্টে ধারাভাষ্যের কাজে ব্যস্ত ছিলেন এজবাস্টনে। আর মুম্বাইয়ের মঞ্চে তাঁর মা শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার সঙ্গে ফিরে দেখেছেন ছেলের গৌরবময় অতীত।

আরও পড়ুন৫ রানে নেই ৭ উইকেট, তবু রেকর্ডটা বাংলাদেশের নয়৭ ঘণ্টা আগে

তিনি বলেছেন এভাবে, ‘রবির দেওয়া অনেক স্মৃতিই আমাদের কাছে অমূল্য। কিন্তু যেটা সবচেয়ে স্পষ্ট মনে পড়ে, সেটা ছয় ছক্কার সেই ইনিংস। সবচেয়ে মজার কথা, আমি তখন জানতামই না ও খেলছে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে! খবরটা প্রথম দেয় আমাদের ভেলপুরি বিক্রেতা। সে নিজেই সেদিন মাঠে ছিল আর সেটা দেখেছে।’

সেই ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন শাস্ত্রী.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ