ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী আনন্দমোহন কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমান উল্লাহকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হয়েছে। তার জায়গায় কলেজের বর্তমান উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাকির হোসনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

গত ৩১ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মো. আমান উল্লাহকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ওএসডি করা হয়।

মো.

আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, এবং কলেজ ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের একাধিক অভিযোগ ছিল।

আরো পড়ুন:

জবি রেজিস্ট্রারের অসদাচরণের প্রতিবাদে মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা

ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে আমাদের আজীবন সংগ্রাম করতে হবে; ইবি উপাচার্য

কলেজটির শিক্ষকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই অধ্যক্ষ আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। তিনি কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ সমর্থক এবং বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। 

অভিযোগ রয়েছে, বিগত সরকারের আমলে তিনি তার রাজনৈতিক পরিচয়ের ব্যাপক সুবিধা ভোগ করেছেন। তাছাড়াও, শিক্ষক পরিষদ গঠনসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে তিনি নিয়ম ভঙ্গ করে নিজের অনুসারীদের প্রাধান্য দিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মদদ দিয়েছেন এবং তাদের দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগও উঠেছিল।

এসব কারণে কলেজের সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তার অপসারণের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন কয়েকবার।

অধ্যক্ষ আমান উল্লাহর ওএসডি হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে কলেজ ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তার বিদায়কে কলেজের জন্য একটি ইতিবাচক পরিবর্তন হিসেবে দেখছেন।

এ বিষয়ে জানতে সদ্য সাবেক অধ্যক্ষ আমান উল্লাহর মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।।

ঢাকা/মিলন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কল জ র

এছাড়াও পড়ুন:

গকসু নির্বাচন: যত্রতত্র প্রচারে বিরক্ত শিক্ষার্থীরা

গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন ঘিরে দীর্ঘ ৭ বছরের উচ্ছ্বাসে ভাটা এনেছে যত্রতত্র প্রচার। সাধারণ নিয়মের পরোয়া না করেই প্রচার চালাচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।

জান যায়, লাইব্রেরিতে জোরে কথা বলা নিষিদ্ধ থাকলেও সেখানে প্রচার চালিয়েছেন এক ভিপি পদপ্রার্থী। আরেক ভিপি পদপ্রার্থী আইন বিভাগে ক্লাস চলা অবস্থায় গিয়ে নির্বাচনী প্রচার করেন।

আরো পড়ুন:

চাকসু নিয়ে স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে চবি প্রশাসনের মতবিনিময়

চাকসু নির্বাচন: ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের প্যানেল ঘোষণা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে এসব ভিডিও। এতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্লাসে বসে পড়াশোনা করব, অথচ হঠাৎ প্রার্থী ঢুকে প্রচারণা শুরু করবেন—এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।

নিয়মিত লাইব্রেরি ব্যবহারকারী কিছু শিক্ষার্থী জানান, লাইব্রেরিতে পড়ার সময় প্রার্থীসহ ৬-৭ জন এসে প্রচার চালান এবং ডেকে লিফলেট বিতরণ করেন, যা পড়া-শোনার বিঘ্ন ঘটায়। পড়াশোনার জায়গাতেই যদি প্রচার হয়, তাহলে আমরা কোথায় পড়ব? 

এ বিষয়ে সহকারী লাইব্রেরিয়ান জ্যোতি বলেন, “লাইব্রেরিতে প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অভিযোগ এসেছে কিছু প্রার্থী-সমর্থক সাধারণ শিক্ষার্থীর মত এসে প্রচার চালিয়েছেন। ফলে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে নজরদারি বাড়িয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে।”

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিওতে দেখা যায়, আইন বিভাগে ক্লাস চলাকালে শিক্ষকের উপস্থিতিতে প্রচারণা চালাচ্ছেন এক ভিপি প্রার্থী।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক মো. লিমন হোসেন বলেন, যেহেতু এইটা পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন, সেহেতু সবারই সহযোগিতা দরকার। তাই আমি অনুমতিক্রমে প্রার্থীদেরকে তাদের প্রচারণা চালানোর সুযোগ দিয়েছি। তবে এই সুযোগ আমি কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য দেইনি, সবার জন্যই দিয়েছি। তবে শুধু প্রার্থীকে ২ মিনিটের সুযোগ দিয়েছি।”

সার্বিক বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ফুয়াদ হোসেন বলেন, “লাইব্রেরির পরিবেশ বজায় রাখা লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক একাডেমিক কার্যক্রম যেন কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়।”

ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ